প্রাণের ৭১

এবার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলা

সাকিবঃ সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যু নিয়ে ফেসবুকে ‘কুরুচিপূর্ণ স্ট্যাটাস’ দেওয়ার অভিযোগ এনে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে কর্তৃপক্ষ।

মাহির চৌধুরী নামের ওই শিক্ষার্থী অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষে অধ্যয়নরত। তিনি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথেও জড়িত।

সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. ইশফাকুল হোসেন বাদী হয়ে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮’ অনুযায়ী মামলাটি  দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছেন।

জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা  অকিল উদ্দিন মামলা (মামালা নম্বর-৫) নথিভুক্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার মো. ইশফাকুল হোসেন বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি দায়ের করেছেন।”

অভিযুক্ত শিক্ষার্থী মাহির চেীধুরী শনিবার তার ফেসবুক ওয়ালে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিমকে নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তার স্ট্যাটাসটির সমালোচনা করে তার শাস্তি দাবি করেন।

তবে স্ট্যাটাসটি দেওয়ার কিছুক্ষণ পরে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী তার ফেসবুক ওয়াল থেকে এটি মুছে ফেলেন এবং এর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা ও দুঃখ প্রকাশ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মামলা করায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা করছেন সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা; যাদের অনেকেই বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ছাত্র সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন।

একজন শিক্ষার্থী নিজের ব্যক্তিগত টাইমলাইনে পোস্ট দিয়েছে একজন রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে, সেখানে  বিশ্ববিদ্যালয় কেন মামলা করবে সেই প্রশ্ন তুলেছেন তারা।

এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার মো. ইশফাকুল হোসেন বলেন, “কেউ না কেউ কর্তৃপক্ষের নজরে এনেছে বিষয়টি। তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিয়েছে। যখন বিষয়টা ফেসবুকে আসছে তখন অনেকে তার উপর বিক্ষুব্ধ হয়েছে। তারা বলেছে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। তাই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য স্যার নির্দেশনা দিয়েছেন। ”

বিশ্ববিদ্যালয় মামলা করতে পারে যদি কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে জানমালের ক্ষতি করে বা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন পরিপন্থী কিছু করে থাকেন। মাহিরের ফেসবুক পোস্টটির ভাষা অনেকটা ব্যঙ্গাত্মক, কিন্তু তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে কোন ক্ষতি হয় না বা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট না। তাহলে কোন ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হলো এমন প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষার্থীরা।

এমন প্রশ্নে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদ বলেন, “সে একজন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ স্ট্যাটাস দিয়েছে যা বিশ্ববিদ্যালয়ের মান ক্ষুন্ন হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মান ক্ষুন্ন হওয়া মানে রাষ্ট্রের মানহানি হওয়া। আর এ ছেলের বিরুদ্ধে আরো বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। সে কিছুদিন আগে অনলাইন ক্লাস বর্জনের আন্দোলনেও নেতৃত্ব দিয়েছে।”

বিষয়টি সম্পর্কে জানার জন্য উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের মোবাইল ফোনে  একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*