প্রাণের ৭১

কারাবন্দি খালেদা জিয়া ফখরুলকে বহিস্কার করলো ! ?

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কি বহিষ্কার করেছেন বেগম খালেদা জিয়া? বিএনপিতে এই গুঞ্জন নিয়ে তোলপাড় চলছে। এই গুঞ্জনের জের হিসেবে গতকাল সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়নি। বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে, দলের সঙ্গে ‘বিশ্বাসঘাতকতা এবং দলকে ভুল পথে পরিচালিত করার অভিযোগে কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়া দলের মহাসচিবকে দল থেকে বহিষ্কার করেছেন।

দলীয় ফোরামে সিদ্ধান্ত না নিয়ে সংলাপে যাওয়ার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে বেগম জিয়া ঐ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে বিএনপির একটি অংশ দাবি করেছে। তাঁরা বলছেন, বর্তমানে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬১২ নম্বর কেবিনে বন্দী দলের চেয়ারপারসন এক গোপন বার্তায় এই নির্দেশ দিয়েছেন। যদিও, বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা এটাকে ‘গুজব’ এবং বিভ্রান্তি ‘সৃষ্টির নোংরা খেলা’ বলে দাবি করছেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছেন, ‘এটা সম্পূর্ণ বানোয়াট। কারণ গত কয়েকদিন বেগম জিয়ার সঙ্গে কারওরই কোনো দেখা সাক্ষাত হয়নি। বিএসএমএমইউতে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে বেগম জিয়াকে রাখা হয়েছে। সেখান থেকে কোনো বার্তা পাঠানো সম্ভব না।’

তবে, বেগম জিয়ার ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতা বলেছেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জন্য ফখরুল সাহেব ‘ধানের শীষ’ প্রতীক চুরি করতে চাইছেন। ঐ প্রতীকে নির্বাচন করে তিনি বর্তমান সরকারকে আবার ক্ষমতায় বসানোর এজেন্সি নিয়েছেন।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন, ‘বিএনপিতে ষড়যন্ত্র চলছে। জিয়া পরিবারকে বিএনপি থেকে সরিয়ে দেওয়ার এই ষড়যন্ত্রে একাধিক শীর্ষ নেতা জড়িত।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, গতকাল জিয়া চ্যারিটেবল দুর্নীতি মামলায় বেগম জিয়ার ৭ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। আজ মঙ্গলবার, এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় বেগম জিয়ার সাজা বাড়িয়ে দশ বছর করা হয়েছে। বিএনপির সিদ্ধান্ত আছে, বেগম জিয়া ছাড়া কোনো নির্বাচন নয়। তাই, এই সময়ে নির্বাচন নিয়ে সংলাপ অর্থহীন মনে করছেন বিএনপির একটি বড় অংশ। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘বিএনপির উচিত একটি মাত্র কর্মসূচি দেওয়া, তা হলো চেয়ারপার্সনের মুক্তি।’ যদিও ব্যারিস্টার মওদুদ বলছেন, ‘আমরা যে সাত দফা দাবি নিয়ে কথা বলছি, তাঁর অন্যতম দাবিই হলো বেগম জিয়ার মুক্তি। এই সংলাপও আন্দোলনের একটি অংশ।’ যদিও তাঁর এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন, দলের বেশির ভাগ নেতারা। তাঁরা মনে করছেন, বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দিয়ে বিএনপিকে নির্বাচনে নিয়ে যাওয়ার পাঁয়তারা চলছে। তাদের মতে, শেষ পর্যন্ত মির্জা ফখরুল যদি দরের সিংহভাগ নেতা-কর্মীর আকাঙ্ক্ষার বাইরে ‘ধানের শীষ’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে যান, তাহলে বিএনপি একদিকে ‘ধানের শীষ’ প্রতীক হারাবে।

অন্যদিকে, খালেদা জিয়া জীবন থাকতে আর জেল থেকে বেরুতে পারবেন না। তারেক জিয়াকে শেখ হাসিনা দেশে এনে জেলের ভাত খাওয়াবে। তাই, তাদের মতে এই সংলাপ অর্থহীন। এজন্যই তাঁরা মনে করছেন, মির্জা ফখরুল বিশ্বাসঘাতক। এরাই দাবি করছেন, মির্জা ফখরুলকে বহিষ্কার করেছেন বেগম জিয়া। এই দাবির স্বপক্ষে অবশ্য তাঁরা কোনো চিরকুট বা প্রমাণ দেখাতে পারেন নি। অবশ্য ২০০৭ সালেও গ্রেপ্তার হওয়ার সময় বেগম জিয়া তৎকালীন বিএনপি মহাসচিব আব্দুল মান্নান ভুঁইয়াকে বহিষ্কার করেছিলেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কী একই ভাগ্য বরণ করতে হচ্ছে?






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*