প্রাণের ৭১

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় আক্রান্ত ৩৪৬২ ও মৃত্যু ৩৭

মোহাম্মদ হাসানঃ দেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হওয়ার সাড়ে তিন মাস পরে এসেও সংক্রমণ কমার কোনো লক্ষণ নেই। যদিও দেশি-বিদেশি গবেষকেরা এই সময়ের মধ্যে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে বলেই পূর্বাভাস দিয়েছিলেন।দেখা যাচ্ছে, সেই পূর্বাভাস ভুল এবং সরকারও এখন ভিন্ন আঙ্গিকে লকডাউনের পথে হাঁটছে, যেটি কিছুদিন আগেই তুলে নেয়া হয়েছিল। বাংলাদেশেও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের অনেকেই জুন মাস থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমবে, আর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসবে জুলাইয়ে -এরকম পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। কারো কারো মতে,আমাদের এখানে ভালো কোয়ারেন্টিন হয়নি, আইসোলেশন হয়নি, লকডাউনটাও ভালো হয়নি। ফলে সংক্রমন কমার যে ধারণা সেটাও বাস্তবে হয়নি।

গত ২৪ ঘন্টায় দেশে প্রাণঘাতী করোনায় প্রাণহানি ঘটলো আরও ৩৭জনের প্রাণ। যার হাত ধরে দেশে করোনা সংক্রমণের শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১ হাজার ৫৮২ জন।নতুন শনাক্ত ৩৪৬২ জন সহ দেশে এই মুহুর্তে শনাক্ত এক লাখ ২২ হাজার ৬৬০জন। তবে আশার কথা হলো গত ২৪ ঘন্টায় ২০৩১ জন সহ মোট ৪৯ হাজার ৬৬৬জন সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন।

আজ ২৪ জুন বুধবার দুপুর আড়াইটায় রাজধানীর মহাখালিস্থ স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদপ্তরটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

ডাঃ নাসিমা সুলতানা জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে ৬৬ টি পরীক্ষাগারে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৭ হাজার ২৪৫ টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১৬ হাজার ৪৩৩ টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ৬ লাখ ৬০ হাজার ৪৪৪ টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও ৩ হাজার ৪৬২ জনের মধ্যে। ফলে ভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ২২ হাজার ৬৬০ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৩৭ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হলো এক হাজার ৫৮২ জনের পাশাপাশি গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন আরও ২০৩১ জন মোট ৪৯ হাজার ৬৬৬ জন।

বুলেটিনে ডা. নাসিমা আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ২১.০৭ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪০.৪৯ শতাংশ, মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৯ শতাংশ। আজ মৃতদের লিঙ্গ বিভাজনে পুরুষ ২৮ নারী ৯ জন।

এদিকে বিশ্বে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৯২ লাখ। আর এতে মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ ৭৭ হাজার।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯২ লাখ ৩৭ হাজার ৬৯১ জনে। এদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৯১১ জনের।

বিশ্বে একক দেশ হিসেবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার সকাল পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ২৩ লাখ ৪৫ হাজার ৮৫৪ জন। আর এতে মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ২১ হাজার ২১৭ জনের।

যুক্তরাষ্ট্রের পর করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ব্রাজিল। আক্রান্ত ও উভয় মৃত্যু উভয়- বিবেচনায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১১ লাখ ৪৫ হাজার ৯০৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৫২ হাজার ৬৪৫ জনের।

মৃত্যু বিবেচনায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইউরোপের দেশ যুক্তরাজ্য, তবে আক্রান্তের দিক থেকে দেশটির অবস্থান পাঁচ নম্বরে। এখন পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ৭ হাজার ৬৮২ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৪৩ হাজার ১১ জনের।

মৃত্যু বিবেচনায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে ইউরোপের আরেক দেশ ইতালি, তবে আক্রান্ত বিবেচনায় দেশটির অবস্থান নয় নম্বরে। ইতালিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৩৮ হাজার ৮৩৩ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩৪ হাজার ৬৭৫ জনের।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হওয়া দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ইউরোপের আরও দুই দেশ- ফ্রান্স ও স্পেন। মৃত্যু বিবেচনায় পঞ্চম স্থানে থাকা ফ্রান্স আক্রান্ত বিবেচনায় আছে ১১তম স্থানে। এখন পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৯৭ হাজার ৮০৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৭২৩ জনের। আর মৃত্যুর দিক থেকে ষষ্ঠ এবং আক্রান্তের দিক থেকে অষ্টম থাকা স্পেনে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৪৬ হাজার ৭৫২ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২৮ হাজার ৩২৫ জনের।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আক্রান্ত বিবেচনায় বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ স্থানে থাকা ভারতে বুধবার সকাল পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লাখ ৪০ হাজার ২১৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১৪ হাজার ১১ জনের।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীন থেকে সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর বিশ্বব্যাপী এ পর্যন্ত ১৮৮টি দেশে ছড়িয়েছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। গত ১১ মার্চ করোনাভাইরাস সংকটকে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*