প্রাণের ৭১

টেকনাফে ৩ মাসে ৫৫ কোটি টাকার ইয়াবা উদ্ধার : আটক ৪৫

কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশ গত তিন মাসে পৃথক পৃথক অভিযানে ১৮ লাখ ৫০ হাজার পিস ইয়াবাবড়ি উদ্ধার করেছে। উদ্ধার করা এ পরিমাণ ইয়াবা বড়ির দাম ৫৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এ সময় বেশ কয়েকটি অস্ত্র ও উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে এ সময়ে পুলিশ ইয়াবা পাচার সহ নানা অপরাধজনক ঘটনায় জড়িত ৭৫ জনকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা প্রদান করা হয়। পুলিশ এ সময় অভিযান চালিয়ে ৪০টি মাদক মামলার বিপরীতে ৪৫ জনকে আটক করে।

পুলিশ জানায়, গত পহেলা মার্চ থেকে পহেলা জুন পর্যন্ত সময়ে সীমান্তবর্তী উপজেলা টেকনাফে এ অভিযান চালানো হয়েছে। টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রনজিত কুমার বড়ুয়া জানান, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি তিনি টেকনাফ থানায় ওসি হিসাবে যোগ দেন। তিনি থানায় যোগ দেয়ার পর থেকেই সীমান্তের ইয়াবা কারবারিদের আটকের জন্য অভিযান চালানো শুরু করেন।

উক্ত সময়ে পুলিশ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৭টি এলজি, ৩টি বন্দুক, ১টি পিস্তল ও ২০ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করে। এদিকে সাম্প্রতিককালে টেকনাফ থানার অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি ইয়াবাবড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। এ জন্য টেকনাফ থানা পুলিশ ইতিমধ্যে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্বের পদক পেয়েছে।

টেকনাফ সীমান্তের লোকজন জানান, সম্প্রতি আইন-শৃংখলা বাহিনী এবং দুষ্কৃতিকারীদের মধ্যে সৃষ্ট বন্দুকযুদ্ধে দুই জনপ্রতিনিধিসহ টেকনাফের ৫ ব্যক্তি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার পর সীমান্তে ইয়াবা কারবারীদের মধ্যে চরম প্রভাব পড়েছে। ঘটনার পরপরই মাদক কারবারিরা আত্মগোপনে চলে যান। অনেকে এলাকা ছেড়ে বিদেশে পালিয়ে গেছেন।

এমনকি সীমান্তের ইয়াবা কারবারের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসাবে পরিচিত স্থানীয় এমপি আবদুর রহমান বদি, টেকনাফ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাফর আহমদ, টেকনাফ উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মৌলানা রফিক আহমদ, বাহারছড়া ইউপি চেয়ারম্যান মৌলানা আজিজ আহমদসহ অনেকেই পবিত্র ওমরাহ হজ্বের নামে সৌদি আরব পাড়ি জমান।

শুধু তাই নয় সীমান্তের ইয়াবা কারবারের ডন হিসাবে পরিচিত হাজী সাইফুল করিম, এমপি বদির ভাই মৌলভী মুজিবুর রহমান, আবদুস শুকুর, ফয়সালসহ এমপি বদি পরিবারের তালিকাভুক্ত ৩০ জনের মত ইয়াবা কারবারি এলাকা ছাড়া হযে গেছেন। টেকনাফের জনপ্রতিনিধি বলতে এখন আর এলাকায় নেই।

এদিকে সীমান্তের ইয়াবা কারবারিদের নির্মিত সুরম্য দালান কোটা এখন জনশুন্য। কারবারিদের রাজ প্রসাদ তুল্য ভবনাদিও এখন খাঁ খাঁ করছে। এসব দালন-কোঠায় অভিযান চালানো হলেও কোনো কারবারিকে পাওয়া যায়নি। মাদক বিরোধী অভিযানে টেকনাফের কারবারিরা এলাকা ছেড়ে যাওয়ায় ঈদের বাজারেও প্রভাব পড়েছে।

টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রনজিত কুমার বড়ুয়া জানান, ‘ইয়াবার বিরুদ্ধে আমি যুদ্ধ ঘোষণা করেছি। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আইজিপির নিদের্শনায় ইয়াবা শুন্যের কোটায় নিয়ে আসতে এ যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে।’






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*