প্রাণের ৭১

ফেনী-৩ আসনে মাসুদ চৌধুরীকে সমর্থন দিলেন হাজী রহিম উল্যাহ

ফেনী-৩ আসনের মহাজোট প্রার্থী লেঃ জেনারেল (অবঃ) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীকে সমর্থন জানিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান  সাংসদ হাজী রহিম উল্যাহ।

শনিবার সকালে জাতিয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন,

আমি হাজী রহিম উল্যাহ ২৬৭, ফেনী-৩ (সোনাগাজী ও দাগনভূঁঞা) নির্বাচনী এলাকার বর্তমান সংসদ সদস্য। আমি সৌদি আরব জেদ্দা মহানগরস্থ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে ২১ বছর সততা ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছিলাম। এর আগেও আমি ছোট বেলা থেকে বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হই। বিগত সকল দলীয় ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসেবে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছি। আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে বহু মামলা, হামলা, নির্যাতন ও জেল-জুলুমের শিকার হয়েছি। মুক্তিযুদ্ধে আমার পরিবারের ৯ (নয়) জন সদস্য পাক-হানাদার বাহিনী ও রাজাকারদের হাতে নিমর্মভাবে শহীদ হয়েছিল। বিগত বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মমভাবে খুন হয়েছিল আমার আপন বড় ভাই হাজী রশিদ সরকার ও ভাতিজা মাহফুজুর রহমান। আমার নির্বাচনী এলাকাসহ ফেনী জেলায় আওয়ামী লীগের সকল আন্দোলন সংগ্রামে নেতা-কর্মীদের পাশে থেকে সহযোগীতার হাত প্রাসারিত রেখেছি। দলের প্রতি আমার একনিষ্ঠ আনুগত্য দেখে মাননীয় প্রাধনমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারীর নির্বাচনে আমাকে আওয়ামী লীগ তথা মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে উক্ত আসনে মনোনয়ন দেন। উক্ত নির্বাচন বাতিল হওয়ায় আমি নির্বাচনে অংশ নিতে পারি নাই।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাহার নির্বাচনী সফরসঙ্গী হিসেবে দেশব্যাপী নির্বাচনী গনসংযোগে শামিল হই। বিগত ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেনী-৩ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে  রিন্টু আনোয়ার আমার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আমি  রিন্টু আনোয়ারকে বিপুল ভোটে হারিয়ে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নির্বাচিত হই। আমি জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে মহান সংসদে আমার নির্বাচনী এলাকার ভাগ্য বিড়ম্বিত জনগণের উন্নয়ন সমস্যা সম্ভাবনা তুলে অসংখ্যবার বক্তব্য প্রদান করেছি। সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের নিমিত্তে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে লিখিত আবেদন তথা ডিও লেটার প্রদান করি। আমি সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে আমার নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নের চিত্র আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম।

আমার সফলতা মূল্যয়নের ভার আমার নির্বাচনী এলাকার সর্বস্তরের জনগণের হাতে তুলে দিলাম। আর ব্যর্থতার ভারগুলো আমার নিজের কাঁধে তুলে নিলাম। উল্লেখিত উন্নয়নগুলোর একমাত্র কৃতিত্ব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার।

আগামী ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করি। এরমধ্যে সাবেক রাষ্ট্রদূত ও লেঃ জেনারেল (অবঃ) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। আপনারা জানেন জাতীয় পার্টি মহাজোটের শরিক দল। মহাজোটের শরিক দল হিসেবে  মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীকে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।

আমি যেহেতু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে ও জননেত্রী শেখ হাসিনার চেতনায় আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে যাচ্ছি। সেহেতু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের প্রতি সবসময় শ্রদ্ধাশীল আছি এবং দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমি আমার ফেনী-৩ আসনের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ রেখে আমার নির্বাচনী এলাকা ফেনী-৩ (সোনাগাজী ও দাগনভূঁঞায়) উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখতে মহাজোট প্রার্থী জনাব মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীকে আপনাদের উপস্থিতিতে পূর্ণ সমর্থন করিলাম।

ইতিমধ্যে আমি নির্বাচন কমিশনে আমার দাখিলকৃত মনোনয়ন পত্রটি প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাই জনাব মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীকে আগামী নির্বাচনে সার্বিক সহযোগীতা করে আমার নির্বাচনী এলাকায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ সর্বস্তরের জনগণের প্রতি সবিনয় অনুরোধ করছি।

পরিশেষে আমি বলতে চাই, বঙ্গবন্ধু আদর্শের একজন সৈনিক হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা, বিশ্বাস, ভালোবাসা ও সমর্থন আছে এবং থাকবে। এছাড়া শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অদম্য গতিতে বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে যাচ্ছে এবং যাবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমার নির্বাচনী এলাকার সর্বস্তরের জনগণের সাথে ঐক্যবদ্ধ থেকে তার সকল সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*