প্রাণের ৭১

বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদের মৃত্যু পরোয়ানা জারি

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার ফাঁসির আসামি ক্যাপ্টেন (অব.) আব্দুল মাজেদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ডের সাজা পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এম হেলাল উদ্দিন চৌধুরী আজ এ আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল সাজা পরোয়ানা জারির জন্য আজ আবেদন করেন। খুনি মাজেদকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। বিচারক তাকে সাজা পরোয়ানা পড়ে শোনান। পরে তাকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তার বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারির আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালত ।
এডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল বাসস’কে জানান, লাল কাপড়ে মোড়ানো এই মৃত্যু পরোয়ানা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া পরোয়ানার একটি কপি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ঢাকার জেলা প্রশাসকের দপ্তরেও পাঠানো হয়। এখন মৃত্যু পরোয়ানা কারাগারে খুনি মাজেদকে পড়ে শোনাবেন কারা কর্তৃপক্ষ।
কাজল বলেন, ২১ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে ফাঁসির এ রায় কার্যকর হবে। তবে এ ফাঁসির আসামি রাষ্ট্রপতি বরাবর প্রাণভিক্ষার সূযোগ পাবেন।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দায়ে ফাঁসির রায় মাথায় নিয়ে পলাতক অন্যতম আসামি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদকে গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার কারাগারে পাঠানো হয়।
ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে খুনি মাজেদকে তোলা হলে বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াৎ এই দন্ডিত আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এ আদেশের পরপরই তাকে প্রিজন ভ্যানে করে কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। তাকে ফৌজদারি কার্যবিধি ৫৪ ধারায় তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)।
এসময় বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার না দেখানো পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন কাউন্টার টেরোরিজম। আবেদনে বলা হয়, আসামি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত আসামি। সে দীর্ঘদিন পলাতক ছিল। এই মামলায় তাকে গ্রেফতার না দেখানো পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যার ৪৫ বছর, নৃশংস ওই হত্যাকান্ডের মামলার ২৫ বছর এবং উচ্চ আদালতের রায়ে ৫ আসামির ফাঁসি কার্যকরের ১১ বছর পর গ্রেফতার হলেন খুনি মাজেদ।
সোমবার রাতে খুনি মাজেদকে ঢাকার মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া ও গণমাধ্যম) মাসুদুর রহমান এর সত্যতা নিশ্চিত করেন। প্রায় ২৩ বছর খুনি মাজেদ ভারতে পালিয়ে ছিলেন বলে স্বীকার করেন।
খুনি মাজেদ গ্রেফতার হওয়ার পর এখন বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত ও মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পাঁচ খুনি পলাতক রয়েছেন। তাঁরা হলেন- খন্দকার আবদুর রশীদ, শরিফুল হক ডালিম, মোসলেম উদ্দিন, এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী ও এ এম রাশেদ চৌধুরী। তাঁরা সবাই সাবেক সেনা কর্মকর্তা। এই পাঁচ খুনি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পলাতক অবস্থায় আছেন। তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট খন্দকার মোশতাক আহমেদ বিচারের হাত থেকে খুনিদের রক্ষা করতে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করেন। পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্সকে আইন হিসেবে অনুমোদন করেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মম বর্বরোচিত ও
নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। তখন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা (বর্তমান প্রধানমন্ত্রী) ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*