প্রাণের ৭১

বিএনপির আরো তিনজনসহ চার প্রার্থীর মনোনয়ন স্থগিত

একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির আরো তিনজন এবং জামায়াতের স্বতন্ত্র এক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র স্থগিতের আদেশ বহাল রেখেছেন সর্বোচ্চ আদালত। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ গতকাল মঙ্গলবার পৃথকভাবে এসব আদেশ দিয়েছেন।

এই চার প্রার্থীর মধ্যে বিএনপির তিনজন হলেন জামালপুর-১ আসনে রশিদুজ্জামান মিল্লাত, সিলেট-২ আসনে নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসীনা রুশদীর লুনা, দিনাজপুর-৩ আসনে পৌর মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেন কক্সবাজার-২ আসনে জামায়াত নেতা হামিদুর রহমান আযাদ।

এ ছাড়া ময়মনসিংহ-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী আজগর আলীর পরিবর্তে আফজাল এইচ খানকে ধানের শীষ প্রতীক দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। কক্সবাজার-২ আসনে মাহফুজ উল্লাহ ফরিদকে ধানের শীষ প্রতীক দেওয়ার নির্দেশ বহাল রাখা হয়েছে। আপিল বিভাগ চট্টগ্রাম-৪ আসনে বিএনপির আসলাম চৌধুরীর মনোনয়নপত্র বহাল রেখেছেন।

এর আগে গত সোমবার ছয়টি আসনে বিএনপির সাত প্রার্থীর মনোনয়ন স্থগিত হয়ে যায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্টে।

গত ১৩ ডিসেম্বর বিএনপি প্রার্থী লুনা ও মিল্লাতের মনোনয়নপত্র স্থগিত করেন হাইকোর্ট। এর মধ্যে সরকারি চাকরি থেকে (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপরেজিস্ট্রার) অবসরের তিন বছর না হওয়ার অভিযোগে একই আসনের জাতীয় পার্টির বর্তমান সংসদ সদস্য মহাজোট প্রার্থী ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী এহিয়ার করা এক রিট আবেদনে লুনার মনোনয়নপত্র স্থগিত করা হয়। এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন লুনা। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন। দুর্নীতির মামলায় রশিদুজ্জামান মিল্লাতের সাত বছর কারাদণ্ড হওয়ায় ওই আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাবেক তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদের করা রিট আবেদনে তাঁর মনোনয়ন স্থগিত করে আদেশ দেন হাইকোর্ট। এ আদেশের বিরুদ্ধে মিল্লাত আপিল করলেও আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছেন।

পৌর মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছিল নির্বাচন কমিশন। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট আবেদন করে প্রার্থিতা ফিরে পান তিনি। কিন্তু হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে একই আসনে বিকল্পধারার প্রার্থী আশরাফুল ইসলাম আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে আবেদন করলে আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন এবং আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির দিন ধার্য করেন। এ অবস্থায় গতকাল আপিল বিভাগ শুনানি শেষে চেম্বার জজ আদালতের আদেশ বহাল রাখেন।

স্বতন্ত্র আপেল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছিলেন জামায়াত নেতা হামিদুর রহমান আযাদ। তাঁর প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করা হলে হাইকোর্ট স্থগিত করে দেন। এর বিরুদ্ধে আযাদ চেম্বার জজ আদালতে গেলে সোমবার পর্যন্ত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন চেম্বার জজ আদালতের বিচারপতি। একই সঙ্গে আপিল বিভাগে শুনানির দিন ধার্য করা হয়। গতকাল আপিল বিভাগে শুনানি হয়। শুনানি শেষে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। ফলে আযাদের মনোনয়নপত্র স্থগিতই থাকছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। টাঙ্গাইল-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কাশেমের মনোনয়নপত্র স্থগিতের আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। ঋণ খেলাপের অভিযোগে তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিলের জন্য সোনালী ব্যাংক হাইকোর্টে আবেদন করলে হাইকোর্ট মনোনয়নপত্র স্থগিত করেন। এর বিরুদ্ধে আবুল কাশেম আপিল বিভাগে গেলে আপিল বিভাগ গতকাল এক আদেশে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন।

ময়মনসিংহ-১ আসনে বিএনপি আজগর আলীকে ধানের শীষ প্রতীক দেয়। কিন্তু ঋণ খেলাপের অভিযোগ ওঠে এ প্রার্থীর বিরুদ্ধে। এরপর একই আসনে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আফজাল এইচ খান ধানের শীষ প্রতীক চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। হাইকোর্ট তাঁকে ধানের শীষ প্রতীক দিতে নির্দেশ দেন। কিন্তু এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেন আজগর আলী। গতকাল এ আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*