প্রাণের ৭১

বিশ্বাসের নিঃশ্বাস নাই

আজকাল পয়সা দিয়ে কেউ যেমন অনুষ্ঠান দেখতে যায় না, তেমনি অবসরে বসে ঘরে, হরে দরে নির্মিত রাশি রাশি টিভি চ্যানেলের হাসি হাসি মুখে উপস্থাপিত নিম্নমানের অনুষ্ঠানের বহুল পরিমাণের কারণে বিনা পয়সাতেও এসব টিভি অনুষ্ঠান দেখতে চায় না অনেকেই। এসব অনুষ্ঠানে দর্শক আকর্ষণে কাঙ্ক্ষিত মান কেন থাকে না, তা অনুমান করা সাধারণের পক্ষে কঠিন হলেও মিডিয়া সংশ্লিষ্টরা জানেন। আজকাল বিভিন্ন চ্যানেলে নাটক ছাড়া যে অনুষ্ঠানগুলো বেশি হয় তার কয়েকটি হলো আড্ডা, সেলিব্রেটি শো, গানের অনুষ্ঠান, রান্নার অনুষ্ঠান আর টকশো কিংবা রক শো। উল্লেখ্য, এসব অনুষ্ঠানে কোনো পরিকল্পনা দরকার হয় না। একজন দুজনকে ডেকে এনে আলাপজুড়ে দিলেই হলো। সেই আলাপের বিষয়বস্তু নির্ধারণেরও প্রয়োজন হয় না। যখন যা মনে আসে তাই বলা যায়। গানের শিল্পী নির্বাচনের ক্ষেত্রেও তেমন মান বিচার করা হয় বলে মনে হয় না। গানের ক্ষেত্রে সুর না অসুর, লয় না প্রলয়, তাল না বেতাল এসব মুখ্য নয়। কারণ যে যা গাইছে সঞ্চালক বলছেন ‘অসাধারণ’ কিংবা ‘ওঁয়াও’। আবার এসব অনুষ্ঠান উপস্থাপনার জন্য যাদের নেওয়া হয়, তাদেরও উপস্থাপনার ওপর বেশি জ্ঞান বা দক্ষতা থাকার প্রয়োজন হয় না। চ্যানেল কর্তৃপক্ষের নিজস্ব লোকজন ছাড়াও বিভিন্ন অঙ্গন থেকেও তাদের নেওয়া হয়, কখনো অভিনয়, কখনো মডেলিং, কখনোবা সংগীতাঙ্গন। এসব উপস্থাপক-উপস্থাপিকাদের অধিকাংশের কাছেই উচ্চারণ-বাচনভঙ্গি-সৌন্দর্য এসবের চাইতে ফ্যাশন এবং রিলেশনটাই মুখ্য।

বর্তমান সময়ের অধিকাংশ টিভি চ্যানেলেই যা অবর্তমান নয় বরং বিবর্তমান বিশেষ বিষয় হলো, বিতর্ক বিকাশের বিবিধ বিকচ্ছ বিচ্ছুরণের টকশো। শব্দদ্বয় ইংরেজি-টক মানে কথা, শো এর প্রধান অর্থ হলো প্রদর্শন ও জাহির করা। এই জাহির করতে যারা হাজির হন বা যারা হাজির করেন, কোনো কোনো সময় তারা এমন সব নজির স্থাপন করেন, যা ভবিষ্যৎ ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে ইউটিউবে স্থান করে নেয় এবং নিয়েছে। কারও মন খারাপ হলে সেটা দেখে নিতে পারেন। কিছু কিছু টকশো আছে যা দেখলে মানুষের অনুভূতিতে কিছু নতুন মাত্রা যোগ হতে পারে। জীবনে যিনি কখনো রাগেননি, এসব টকশো দেখলে তার রাগ হতে পারে। জীবনে যিনি কখনো হাসেননি, তার হাসি পেতে পারে। যিনি কখনো কষ্ট পাননি, তিনি কষ্ট পেতে পারেন। কেউ ক্ষুব্ধ হতে পারেন। আবার কারও মনে প্রশ্ন জাগতে পারে—এর শেষ কোথায়? এসব টকশোর টক্করে কেউ শখ করে কেউবা চক্করে পড়ে আসেন। কেউ আবার স্বেচ্ছায় জ্ঞান দেওয়ার ইচ্ছায়ও আসেন। ঝগড়া-ফ্যাসাদের কারণে কিছু কিছু টকশোতে অন ক্যামেরায় হাতাহাতি, অনুষ্ঠান চালু অবস্থায় সেট থেকে উঠে যাওয়া, একজন আরেকজনকে কথা বলতে না দেওয়া, উপস্থাপক-উপস্থাপিকার পক্ষপাতমূলক আচরণ নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। এসব বিষয় অনেকের কাছে উপভোগ্য হলেও এটা আমাদের দুর্ভাগ্য।

এখন শুধু স্টুডিওতেই নয়, বাড়িঘর, অফিস থেকেও আলোচকদের সংযুক্ত করা হয়। বিশেষ করে মধ্যরাতের অনুষ্ঠানগুলোতে অনেক সময় বর্ষীয়ান আলোচকরা আসতে চান না। তারা বাড়িতে বসেই বাণী দেন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীতে মাঝে মাঝে দাম্পত্য কলহও দেখা দেয়। কারণ স্টুডিও থেকে কোনো আলোচক আপত্তিজনক কথা বললে বাড়িতে সংযুক্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের সদস্যরা উত্তেজিত হন। কোনো প্রেসারের রোগী রাতের প্রেসারের ওষুধটি না খেয়ে আলোচনায় বসলে বিপদও ঘটতে পারে। বয়স বেশি হলে অনেকে ঝিমাতেও থাকেন। এ ক্ষেত্রে বয়স বিবেচনায় বাড়ির সংযুক্ত ব্যক্তিকে চেয়ারে না বসিয়ে বিছানায় শুয়ে শুয়ে কথা বলার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

এখন আবার টকশোর পরিবর্তন আনার জন্য নানান আঙ্গিক দেখা যায়। এর কিছু হাস্যকর, কিছু বিরক্তিকর, কিছু কষ্টকর, কিছু আবার ভয়ঙ্করও। যেমন আগে টকশো হতো আলোচনার টেবিলে, বসে বসে, এরপর দেখা যাচ্ছে টকশো হচ্ছে হেঁটে হেঁটে। এখন আবার শুরু হয়েছে রান্নার অনুষ্ঠানের মতো বনবাদাড়ে, জঙ্গলে এবং জলে-ভাসমান যানে। এর ফলে টকশোর টকের প্রতি যে মনোযোগ তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সবচেয়ে কষ্টকর হলো ৭০ বা ৮০ ঊর্ধ্ব বয়স্ক ব্যক্তির পক্ষে হেঁটে হেঁটে এক ঘণ্টা কথা বলা। এই বয়সের যাদের হেঁটে হেঁটে এসব শোতে কথা বলতে দেখেছি তাদের জন্য আমার নিজেরও কষ্ট হয়েছে। প্রশ্ন জেগেছে, এই বয়সে তারা এই কষ্টটি কেন করছেন? আর বনবাদাড়ে সেট ফেলে যে টকশো করা হচ্ছে, সেখানে বক্তার চাইতে তো আশপাশে প্রকৃতির দিকেই চোখ যায় বেশি। যেমন কিছুদিন আগে একটি চ্যানেলে দেখেছিলাম বিদেশের বিভিন্ন মনোরম লোকেশানে গিয়ে রবীন্দ্রসংগীত গাওয়া হচ্ছে। আবার ক্যামেরা হাতে মডেলও দেখা গেছে। বেশ নামকরা মডেল। সারা জীবন যেই পরিবেশে রবীন্দ্রসংগীত শুনে এসেছি, তাতে কোনো দিন রবীন্দ্রসংগীতের মিউজিক ভিডিও দেখতে হবে ভাবিনি। কারণ রবীন্দ্রসংগীতের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের জন্য ইউটিউবের ভিউ প্রয়োজন নেই। রবীন্দ্রসংগীতের মিউজিক ভিডিও নির্মাণ যেমন গানের ভাবমূর্তি নষ্ট করে, তেমনি এতে শিল্পীরও দুর্বলতা প্রকাশ পায়। রবীন্দ্রসংগীতের এমনই সুর যা শুনলে এমনিতেই মন ছুঁয়ে যায়। বিদেশে গিয়ে মিউজিক ভিডিও করার প্রয়োজন পড়ে না। তেমনি টকশোর ক্ষেত্রেও লোকেশান পরিবর্তনের দরকার পড়ে না। এখানে বক্তা এবং তার বক্তব্যই প্রধান। এটা তো নাটক বা মিউজিক্যাল অনুষ্ঠান নয়। তাই লোকেশান বা স্থান পরিবর্তন করার প্রয়োজন নেই। আসলে পরিবর্তন করতে হবে রুচি, বিষয়, পরিবেশন কৌশল। বিভিন্ন টকশোতে দেখা যায়, কোনো কোনো বক্তা বারবার একই কথা এবং একই যুক্তি প্রদর্শন করছেন। অথচ মানুষ চায় নুতন কথা, বিশ্বাসযোগ্য কথা। যা মানুষের মনে আশার আলো জাগাবে। যে পদ্ধতিতে এখন টকশো হয়, সেখানে সঞ্চালকের ভূমিকাটাই প্রধান। তিনিই পারেন উত্তেজনা কমাতে কিংবা বাড়াতে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় বেশির ভাগ বক্তাই সঞ্চালকের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের জন্য উত্তেজিত হন, ক্ষুব্ধ হন, ক্ষিপ্ত হন। কোথাও কোথাও আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে সঞ্চালকের রীতিমতো তর্কযুদ্ধে লিপ্ত হতেও দেখা গেছে। নিজের মতাদর্শের প্রতি দুর্বলতার কারণে তিনিও পক্ষ নিয়ে ফেলেন। ভুলে যান তিনি সঞ্চালক। এই ভূমিকায় থাকলে অন্তত ওইটুকু সময় তাকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে। টকশোর একটি বড় যন্ত্রণা হলো বিজ্ঞাপন বিরতি। দেখা গেল কোনো সম্মানিত ব্যক্তি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কথা বলছেন। হঠাৎ করেই মাঝপথে তার কথা থামিয়ে বলা হলো, আমাদের এখন বিরতিতে যেতে হবে। বিরতি থেকে ফিরে এসে আমরা আপনার কথা শুনব। দেখা গেল টকশো থেকে চলে গেল কোনো চানাচুর, ক্রিম-সাবান কিংবা এনার্জি ড্রিংকের বিজ্ঞাপনে। ততক্ষণে আপনার এনার্জি শেষ। কারণ এই বিরতিতে বক্তা যেমন তার কথার খেই হারিয়ে ফেলেন, দর্শকরাও মাঝপথে কথা থামিয়ে দেওয়ায় বিরক্ত হন এবং উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন। আবার অনেক দর্শক বিজ্ঞাপন যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে চলে যান অন্য চ্যানেলে। ফলে চ্যানেলটি তার দর্শক হারায়। জাতি কিছু ভালো আলোচনা থেকে বঞ্চিত হন। এসব বিজ্ঞাপন দেখে মনে হয় বক্তাদের কথার চাইতে এই চানাচুরের বিজ্ঞাপন দেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ, হয়তোবা। কারণ এখানে অর্থযোগ রয়েছে। কিন্তু কিছু কিছু বিষয় আছে, যা অর্থ দিয়ে মূল্যায়ন করা যায় না এবং করাটাও ঠিক নয়। ২৪ ঘণ্টার চ্যানেলে একটি একঘণ্টার আলোচনার অনুষ্ঠান কি ৫-৭ মিনিটের বিজ্ঞাপন ছাড়া চলতে পারে না?

মনে রাখতে হবে, মানুষ যা দেখতে চায় তা নিজের গরজেই দেখে, অনেক সময় নিজের খরচেও দেখে। আগে তো দর্শক প্রতিক্রিয়া ছাড়া কোনো অনুষ্ঠান কেমন সেটা বোঝার উপায় ছিল না। তখন দু-একটি পত্রিকায় টিভি সমালোচনা লেখা হতো, সেটা পড়ে অনেক নির্মাতা ও শিল্পী একটা দিক-নির্দেশনা পেতেন। কারণ তখন সমালোচনা যারা লিখতেন তারাও সেই মাপের সমালোচক ছিলেন। আর এখন ফেসবুকের যুগ। টুক করে সবাই ফেসবুকে ঢুকে যান। ইউটিউবে ভালো লাগলে একই জিনিস বার বার দেখেন। তাতে ভুল ধরা পড়ার সম্ভাবনাও থাকে বেশি। আর লাইক, কমেন্টস তো আছেই। যে কোনো জিনিস ভালো লাগলে কিংবা গুরুত্বপূর্ণ হলে সেটা যেমন ভাইরাল হতে সময় লাগে না, তেমনি কোনো কিছু খারাপ হলে সঙ্গে সঙ্গে হাজার হাজার কমেন্ট চলে আসে। কিন্তু তারপরও কেউ যেন কিছু গায়ে মাখছে না। নাকি আমাদের আবেগ-অনুভূতি-বোধশক্তি সব লোপ পেয়ে গেছে। আমাদের টিভি চ্যানেল যত বাড়ছে, দেখার আগ্রহ না বাড়লেও দেখাবার আগ্রহ বাড়ছে, নানা ভাষায়-নানা ভঙ্গিতে। আর সঙ্গে আত্মপ্রচার তো আছেই। দর্শক কি বলছে, সেটা বিবেচ্য নয়। নিজের ঢোল নিজেই পিটিয়ে যাচ্ছে। বলাবাহুল্য এরাই আবার বহুবিধ পুরস্কারে ভূষিত হচ্ছে। আর সাধারণ মানুষ এসব দেখে বেশ মজা পাচ্ছে এবং হাসছে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে অনেকেই টকশোতে এসে নিজের অসত্য বক্তব্যকে কণ্ঠ শক্তিতে সত্য বলে প্রতিষ্ঠিত করতে চেষ্টা করেন। শুরু হয় বলিষ্ঠ কণ্ঠের সত্য-মিথ্যার বিতর্ক। টিভির লাইভ অনুষ্ঠানে সত্য-মিথ্যার এই বিতর্ক দেখে অনেক দর্শকই হাসেন। কারণ তারা জানেন কোনটা সত্য কোনটা মিথ্যা।

এ প্রসঙ্গে গত রোজার ঈদে প্রচারিত আমার একটি নাটকের কথা মনে পড়ল। নাটকটির নাম ছিল, ‘বিশ্বাসের নিঃশ্বাস নাই’। নাম দেখে অনেকেই আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ভাই আজীবন শুনেছি নিঃশ্বাসের বিশ্বাস নাই কিন্তু আপনি নাটকের নাম দিলেন ‘বিশ্বাসের নিঃশ্বাস নাই’, কারণ কী? বললাম, নিঃশ্বাসের বিশ্বাস নাই বলেই যখন-তখন, যেখানে-সেখানে মানুষ মরে, তেমনি অবিশ্বাসের চক্করে পড়ে প্রতিনিয়ত বিশ্বাস মরে।

বিশ্বাসের এই মৃত্যু খুব বেশি দেখা যায় পত্রিকায় এবং টিভিতে নানান মত এবং পথে বিশ্বাসী মানুষের কথায় ও সামাজিক নানান প্রথায়। বিশেষ করে টিভির টকশোতে এবং নানান পন্থি বিশিষ্টজনদের কলমে-কলামে। টিভির টকশোতে কারও কারও চেহারা দেখলেই বোঝা যায় তিনি কোন বিষয়ে টক করবেন, তেমনি পত্রিকার লেখার সঙ্গে ছাপা ছবি কিংবা নাম দেখলেই বোঝা যায় তিনি কোন বিষয়ে নিজের ভাবনা লক করবেন। এসব লেখা বা টকশো’র কথা নিয়ে আমার কোনো কথা নেই। কারণ এরা অত্যন্ত বিজ্ঞ, অভিজ্ঞ, জ্ঞানী, গুণী, সুধীজন।

এ ধরনের লেখালেখি, কথা বলাবলি গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়োজন। কারণ কথা বলার স্বাধীনতাও এক ধরনের উন্নয়ন। কিন্তু কথা যখন সত্যকে আড়াল করে যার যার দলীয় দলিলের আলোকে বলা হয় এবং এটাকেই সত্য এবং সঠিক ইতিহাস বলে দাবি করা হয়, তখন দর্শকরা বিভ্রান্ত হন। কারণ কথার অসত্য বিশ্লেষণ ও অসত্য তথ্য মূল অর্থের চেয়ে ভুল অর্থই প্রকাশ করে। যা নতুন প্রজন্মকেও বিভ্রান্ত করে। সত্যিকার ইতিহাস জানা দর্শকরা এ ধরনের তথ্য বিকৃতিতে কষ্ট পান, ক্ষুব্ধ হন। এসব বক্তা অসত্যের আবরণে তরল বিষয়কেও গরল বানিয়ে সরল মানুষদের মনে বিরক্তির সৃষ্টি করেন। এদের অনেকের হাতেই প্রতিনিয়ত বিশ্বাসের নিঃশ্বাস চলে যাচ্ছে, ফলে মৃত্যু হচ্ছে বিশ্বাসের। সে জন্যই নাটকে বলেছিলাম,—

বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, সারা জীবন শুনছি তাই

জগৎ জুইড়া খুঁইজা মরি, কার কাছে যে বিশ্বাস পাই।

এখন দেখি চরাচরে, কথায় কথায় বিশ্বাস মরে

অবিশ্বাসের এই চক্করে, বিশ্বাসেরই নিঃশ্বাস নাই।

লেখক : গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, পরিবেশ ও সমাজ উন্নয়ন কর্মী।

সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*