প্রাণের ৭১

বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রতি ঢাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাপী সংঘাত নিরসন এবং শান্তি স্থাপনে জাতিসংঘের প্রচেষ্টার সাথে বাংলাদেশের সম্পৃক্ত থাকার দৃঢ় সংকল্পের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ব শান্তি এবং স্থিতিশীলতার জন্য বাংলাদেশ সবসময়ই জাতিসংঘের আহবানে সাড়া দিয়ে সৈন্য এবং পুলিশ সদস্য প্রেরণে প্রস্তুত রয়েছে। ’
সফররত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের দায়িত্বে নিয়োজিত আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যাঁ পিয়েরে ল্যাকরইক্স আজ সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় সংসদ ভবনস্থ কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতে এলে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
বৈঠকের পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও প্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য তৈরি রয়েছে। জাতিসংঘের অনুরোধ অনুযায়ী আমরা দ্রুত ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর ‘এমওএনইউএসসিও’তে শান্তিরক্ষী প্রেরণে প্রস্তুত রয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ মহাসচিব প্রদত্ত শান্তিরক্ষা মিশনের সংস্কারে ৯ দফা প্রস্তাব বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং এ বিষয়ে ঢাকার সমর্থনের বিষয়ে তাঁকে আশ্বস্ত করেন।
রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবার সঙ্গে শান্তি বজায় রেখে চলাই বাংলাদেশের নীতি।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের করে যাওয়া বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি- ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’-এর উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এক্ষেত্রে এই রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে সংলাপের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। মিয়ানমারও বাংলাদেশ থেকে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টিতে সম্মত হয়েছে। কিন্তু তারা এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না।’
তিনি বলেন, প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গার অবস্থান বাংলাদেশের জন্য বিরাট বোঝা হয়ে দেখা দিয়েছে এবং আশ্রয়স্থানগুলোতে স্থানীয় জনগণের নানা দুর্দশার সৃষ্টি করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী, পুলিশ, বিজিবি সদস্য, প্রশাসন এবং স্বেচ্ছাসেবকরা সকলে মিলে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সমস্যা নিরসনে কাজ করে যাচ্ছে।
বৈঠকে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশী বিশেষ করে নারী সৈনিক এবং পুলিশ সদস্যদের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
ল্যাকরইক্স জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কর্তব্য পালনকালে জীবন উৎসর্গকারী বাংলাদেশীদের কথাও স্মরণ করেন।
জাতিসংঘের শান্তি স্থাপনের উদ্যোগসমূহে বাংলাদেশকে তিনি গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবেও উল্লেখ করেন।
তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডে জাতিসংঘের সমর্থন অব্যাহত রাখার বিষয়েও প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে ল্যাকরইক্স, গত বছরের আগস্ট থেকে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সেনা অভিযানের পর প্রায় ১০ লাখের অধিক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শরণার্থীকে বাংলাদেশে আশ্রয় প্রদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
সশস্ত্রবাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লে. জেনারেল মাহফুজুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ল্যাকরইক্স আজ তিনদিনের সফরে ঢাকা আসেন। তিনি ৫ সদস্যের একটি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন জাতিসংঘ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। দলটি জাতিসংঘ মিশনে শান্তিরক্ষী সরবরাহকারী দেশগুলোকে তাদের সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানাতে এবং বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তার বিষয়ে বিভিন্ন সংস্কার নিয়ে শান্তিরক্ষী সরবরাহকারী দেশগুলোকে অবহিত করতে সে দেশগুলো সফর করছে।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*