প্রাণের ৭১

বেতন বাড়লেও দুর্নীতি কমছে না: টিআইবি

সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়লেও দুর্নীতি কমছে না বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এ ছাড়া রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে জনপ্রশাসনে শুদ্ধাচার চর্চা সঠিকভাবে হচ্ছে না বলেও উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।

 

আজ রোববার রাজধানীর ধানমণ্ডির মাইডাস সেন্টারে তাদের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরা হয়।

 

প্রতিবেদনে সংস্থাটি বলছে, বিভিন্ন প্রণোদনায় শুদ্ধাচার বৃদ্ধির পথে বাস্তব কোনো অগ্রগতি বাস্তবায়ন হচ্ছে না। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি হলেও দুর্নীতি কমছে না। সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য গাড়ি সুবিধা বাড়ানো হলেও তারা নিজেদের গাড়ি ব্যবহার না করে পরিবহন পুলের গাড়ি ব্যবহার করছে। ক্যাডার সুযোগ-সুবিধায় বৈষম্য থাকায় তাদের মধ্যে হতাশা তৈরি হচ্ছে।

 

টিআইবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জনপ্রশাসনে শুদ্ধাচার নীতিতে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি বছর হিসাব দেয়ার কথা থাকলেও তারা সম্পদের বিবরণ দিচ্ছেন না। প্রতি বছর নিয়মিতভাবে শূন্যপদে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ নিশ্চিত করার কথা থাকলেও সময় দীর্ঘসূত্রতার কারণে ২৩ শতাংশ পদ খালি থাকছে। প্রক্রিয়াগত দীর্ঘসূত্রতার কারণে সিনিয়র সহকারী থেকে সমপর্যায়ের পদে ২৭ শতাংশ ও সহকারী সচিব বা সমপর্যায়ে পদে ২৯ শতাংশ পদ শূন্য থাকছে। সাম্প্রতিক সময়ে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব নিয়োগের বেশিরভাগই যোগ্যতার পাশাপাশি ক্ষমতাসীনের ইচ্ছায় নিয়োগ হচ্ছে।

 

বলা হয়েছে, সরকারি কর্মকর্তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে নীতিনির্ধারকদের সিলেকশন বোর্ডের সদস্যদের ক্ষমতার অপব্যবহার করা হচ্ছে। গোয়েন্দা রিপোর্টকে এ ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে, তাতে আর্থিক লেনদেন ও কে, কোন রাজনৈতিক মতাদর্শের রিপোর্টে সেই বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। সরকারের বাইরে বিভিন্ন দলের মতাদর্শে বিশ্বাসী কর্মকর্তাদের ওএসডি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্কোরকে বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে না।

 

বলা হয়, রাজনৈতিক ও অন্যান্য প্রভাবের কারণে জাতীয় শুদ্ধাচারের কোনো কোনো কৌশলের চর্চা ফলপ্রসূ হচ্ছে না। প্রশাসনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। শুদ্ধাচার কৌশলে জনপ্রশাসন সম্পর্কিত ১১টি কৌশলের মধ্যে পাঁচটি কৌশলের চর্চা সন্তোষজনক। তিনটি কৌশলের চর্চা এখনো শুরুই হয়নি।

 

টিআইবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রক্রিয়াগত দীর্ঘসূত্রতার কারণে সিনিয়র সহকারী থেকে সমপর্যায়ের পদে ২৭ শতাংশ ও সহকারী সচিব বা সমপর্যায়ে পদে ২৯ শতাংশ পদ শূন্য থাকছে। সাম্প্রতিক সময়ে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব নিয়োগের বেশিরভাগই যোগ্যতার পাশাপাশি ক্ষমতাসীনের ইচ্ছায় নিয়োগ হচ্ছে।

 

অনুষ্ঠানে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জনপ্রশাসনে শুদ্ধাচারের অবস্থাটি মোটামুটি মিশ্র। কিছু ক্ষেত্রে লক্ষণীয় অগ্রগতি আছে। কিছু কিছু উদ্যোগ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব আছে। আবার কিছু কিছু উদ্যোগ শুরুই হয়নি।

 

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি সিনিয়র প্রোগাম ম্যানেজার শাহাজাদা এম আকরাম, টিআইবির নির্বাহী ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি পরিচালক মো. রফিকুল হাসান প্রমুখ।

 

অর্থসূচক






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*