প্রাণের ৭১

ভিন্নধর্মীদের নিয়ে কুৎসা রটানো তাদের নিয়ে টিটকারি করা ওয়াজগুলো কি ধর্ম অবমাননার সংজ্ঞায় পড়ে না?

তাহেরীর চায়ের কাপ হাতে “ঢেলে দেই” — বলাটা যদি অশ্লীলতা হয়, “পরিবেশ ট সুন্দর না?” ” বসেন বসেন ” বলা যদি ধর্ম অবমাননা হয়, তাহলে শত শত ওয়াজে হিন্দুদের দেব দেবী কে সুন্দরী আবেদনময়ি বলা, বিয়ে করতে চাওয়া বলা, ভিন্নধর্মীদের নিয়ে কুৎসা রটানো তাদের নিয়ে টিটকারি করা ওয়াজগুলো কি ধর্ম অবমাননার সংজ্ঞায় পড়ে না?.?

 

বাল্যবিবাহ এবং সন্ত্রাসবাদ কে নবীজীর আমলে জায়েজ ছিলো বলে এইগুলোর বিরুদ্ধে কথা বলা যাবে না– এই রকম উগ্রবাদী ওয়াজ করা কি রাষ্ট্র বিরোধী এবং ধর্ম বিরোধীতার ক্রাইটেরিয়াতে পড়ে না?? ( এই হুজুরের ওয়াজ গত বছর ভাইরাল হয়েছিলো অনেকেই দেখে থাকবেন ঢাকার কোন এক মসজিদের)

 

আজহারি সহ বহু বক্তা আছে যারা ধর্মের দোহাই দিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারদের জন্য কান্নাকাটি করে ভরা মজলিসে। এবং তাদের যারা শাস্তি দিয়েছে তাদের ধবংস কামনা করে মাইক হাতে। এইসব কি রাষ্ট্র বিরোধী বা ধর্ম অবমাননার ক্রাইটেরিয়াতে পড়ে না?

 

রানা হুজুর ওরফে রানা মাস্তানের প্রবাসী দের বউ কে নিয়ে টিটকারি করা, তাদের বাজারের মেয়েদের সাথে তুলনা করা এবং দেশে বউ রেখে বিদেশ করা গোনাহ এইরকম ফতোয়া দেয়া কি কারো অন্তরে আঘাত করে নি?

 

আরে আমাদের নবীজি ( সাঃ) ও তো কোনদিন ভরা মজলিসে নারীদের কোন বাজে কথা বলে নি।

 

কিন্তু শাফি হুজুর বলেছেন মেয়েরা তেতুলের মতো!  তাই লালা ঝরে!

মেয়েদের তেতুলের সাথে তুলনা করলে ধর্ম অবমাননা হয় না??

 

রাজ্জাক বিন ইউসূফের নারীদের অবমাননাকর অসংখ্য ওয়াজ আছে যেখানে সে জাহান্নাম মানেই নারী আর নারী। সেগুলো ও ধর্ম অবমাননার সংজ্ঞায় পড়ে না?

 

স্বাধীনতার সময় দেশবিরোধী ভুমিকা থাকার পরে ও স্বাধীন দেশে রাজনীতি করা এবং প্রকাশ্যে জনসভায় হাত পাখায় ভোট না দিলে ঈমান থাকবে বলা চরমোনাই পীরের ভাষণের পরেও ধর্ম অবমাননা হয় না??

 

তারেক মোনায়ারের নবী (ঃ) কে স্বপ্নে রাজাকার  আব্দুল কাদেরের সাথে  সাক্ষাৎ করার মতো জঘন্য মিথ্যাচার ও ধর্ম অবমাননার ক্রাইটেরিয়াতে পড়ে না?

 

কিন্তু বসেন বসেন বললে,  চায়ের কাপ হাতে ঢেলে দিতে বললে, পরিবেশ টা সুন্দর বললে,  পীর আউলিয়া দের নিয়ে গজল গাইলে ধর্ম অবমাননা হয়।

 

তাহেরি নাকি স্টেইজে গান গায়। কথা মিথ্যা না। কিন্তু এমন গান গাওয়া হুজুরের সংখ্যা আমি নিজে দিতে পারবো ১০০ জন!

শুধু ওরে ওরে হাওয়া না, যেকোন জনপ্রিয় গান লিখে ইউটিউবে সার্চ দেন হুজুরের গান বলে! দেখুন কত শিল্পী হুজুর আসে। আমি মানছি এইগুলা উপমা দিতে ব্যাঙ্গ করে গাওয়া!  কিন্তু গেয়েছেন তো?

কিন্তু দোষ তাহেরির।

 

তাহেরির আসল সমস্যা সে তথাকথিত মওদুদিবাদে বিশ্বাস করে না।

সে রাজাকার আলবদরদের মতো ধর্মের নামে সব হালাল বলে না!

সে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির মতো জাতীয় সংগীত আর জাতীয় পতাকা অবমাননা করে না।

 

সে ফারুকী হুজুরের হত্যা নিয়ে আন্দোলন করেছে।

সে পীর আউলিয়াদের মাজারে বোমা হামলা কারী কট্টরপন্থী উগ্রবাদী বিপক্ষে কথা বলে।

 

তাই সে ভাইরাল হয়। বার বার ভাইরাল হয়! তার নামে মামলা হয়!

এটাই তো দেখার বাকি আছে, তাইনা?

আজ অব্দি কেও বলতে পারবে না তাহেরী রাষ্ট্রের  বিরুদ্ধে কোন কথা বলছে।

সামাজিক মাধ্যম থেকে।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*