প্রাণের ৭১

যারা বিএনপি-জামাত প্রযোজিত ‘মুখোশের আড়ালে শেখ মুজিব’ তথ্যচিত্র দেইখা ঈমান নড়বড়ে কইরা ফেলছেন, তাদের জন্য:

যারা বিএনপি-জামাত প্রযোজিত ‘মুখোশের আড়ালে শেখ মুজিব’ তথ্যচিত্র দেইখা ঈমান নড়বড়ে কইরা ফেলছেন, তাদের জন্য:

 

জামাত শিবির সমর্থক ও সমমনাদের ধর্মচেতনা কতটা যে অভিসন্ধিমূলক আর রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত তার প্রমাণ পাইছিলাম ওরিয়ানা ফালাচি ইস্যুতে। হঠাত একদিন দেখি তারা দলে দলে ‘ইন্টারভিউ উইদ হিস্টরি’র নির্বাচিত অংশ কপিপেস্ট করতেছে। ব্লগে রাজাকার কন্যারা সব নিজেরে ফালাচি হতে চাই ঘোষণা দিয়া পোস্ট করতেছে। ‘ইন্টারভিউ উইদ হিস্টরি’ হইতেছে ফালাচির লেখা একটা বই যেখানে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রনায়ক এবং বিখ্যাতদের সাক্ষাতকার নিছেন বইলা দাবি করছেন। বেশীরভাগ সাক্ষাতকারের তথ্যই অতিরঞ্জিত এবং মিথ্যায় ভরপুর বলে প্রমাণিত হইছে। তো ফালাচি সেখানে বঙ্গবন্ধুর সাক্ষাতকার নিছেন বইলা দাবি করছেন। বঙ্গবন্ধুরে জংলী, গুন্ডাদের সর্দার বলছেন। বঙ্গবন্ধু তারে মারতে একদল গেরিলা (মুক্তিযোদ্ধা) পাঠাইছিলেন বইলাও লেখছেন ফালাচি। কিন্তু ইউরোপিয়ান এক ক্যাপ্টেন নাকি তারে রক্ষা করে ঢাকা থেকে বের করে নিয়ে গেছে।

 

এইসব মিথ্যাচার কমনসেন্স দিয়াই বাতিল করে দেয়া যায়। কারণ একজন বিদেশী মহিলা এবং সাংবাদিককে বঙ্গবন্ধু খুনের নির্দেশ দিবেন- তেমন ঝুকি নেয়ার মতো অবস্থা সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধানের ছিলো না। তিনি অনাহারি দেশের মানুষের মুখে অন্ন যোগাইতে সম্ভাব্য সব চেষ্টাই করতেছিলেন তখন। বাস্তবে ঘটনাটা এমন, ফালাচি যখন বাংলাদেশে আসেন তার আগে তিনি পাকিস্তানে ছিলেন। জুলফিকার আলী ভুট্টোর সঙ্গে তার প্রেম ছিলো একসময়। এরমধ্যেই ফালাচি কুখ্যাতি কুড়াইছেন সাক্ষাতকারে আপত্তিকর এবং উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করার জন্য। সাক্ষাতকারদাতারে আনসেটল করার জন্য তিনি অদ্ভুত কিসিমের প্রশ্ন করতেন যা আসলে প্রশ্ন না। যেমন আপনারে খুনী বলা হয় এইটা সত্য নাকি। এইখানে একটা আরোপ তিনি আগেই দিয়ে দিতেছেন।

 

তো ভুট্টোর গার্লফ্রেন্ড এই দেশে আসছেন ইতালিয়ান পাসপোর্ট নিয়া সেটা ঠেকান নাই বঙ্গবন্ধু। তবে সাক্ষাতকার দিতেও রাজী হন নাই। বরং বলছেন এই উম্মাদ মহিলারে সসম্মানে প্লেনে তুলে দিয়া আসো। কেনো বঙ্গবন্ধু তারে সাক্ষাতকার দিবেন না এটা নিয়ে এর আগে তুলকালাম বাধাইছিলেন ফালাচি। যথারীতি দেখে নেয়ার হুমকি এবং দেখে তিনি নিছেনও মনগড়া বয়ানে। আর সেটাই জামাতিরা কপি মেরে ব্লগ ফেসবুক ভাসায়া ফেলছে। শুধু তাই না, বঙ্গবন্ধুর উপর একটা চলচ্চিত্রও বানাইছে তারা ‘মুখোশের আড়ালে শেখ মুজিব’ শিরোনামে। চিত্রনাট্য ফালাচির ওই বই অবলম্বনে। আর এই ছবিটা তারা অনলাইনে ইউটিউবে রীতিমতো ভাইরাল বানায়া দিছে।

 

অবাক হইয়া জিগাইলাম, এই ফালাচি যখন একই বইয়ে আয়াতুল্লাহ খোমেনীর উপর মিথ্যা আরোপ আনলো এবং তারে মানসিক প্রতিবন্ধী বইলা গালি দিলো সেটা কি তোমরা পড়ো নাই? ফালাচি লিখছেন: About that dotard Khomeini, for example, who after our interview held an assembly at Qom to declare that I had accused him of cutting off women’s breasts. He extracted a video from this assembly that was shown for months on Teheran television so that, when I returned to Teheran the next year, I was arrested as soon as I got off the plane. It looked bad for me, you know, very bad. This was the period of the American hostages…

 

তোমরা কি পড়ো নাই মুসলমানদের নিয়া ফালাচির সেইসব আপত্তিকর বক্তব্য যেখানে সে লিখলো সে মহানবীর (সাঃ) রওজায় গিয়া গানও গায় না, মুসলমানদের মসজিদে গিয়া পায়খানা পেশাবও করে না, মক্কায় গিয়া তাবু খাটায় না, সোজা কথা মুসলিম দেশগুলোতে যাইতে সে সর্বদা অস্বস্তিতে ভুগে। তার ভাষায়: I don’t go pitching tents at Mecca. I don’t go singing Our Fathers and Hail Marys in front of Mohammed’s tomb. I don’t go peeing on the marble of their mosques; I don’t go shitting at the feet of their minarets. When I find myself in their countries (something from which I never derive pleasure), I never forget that I am a guest and a foreigner…

 

এই আল্লাহরে গালি, মোহাম্মদরে গালি দেয় বইলা চাপাতি দিয়া কল্লার পর কল্লা কাইটা ফালাইতেছে তারা। ফেসবুক ওপেন ঘোষণা দিতেছে এর মাধ্যমে তারা ধর্মের ঝান্ডা উচু কইরা রাখতেছে। আবার অন্যদিকে ফালাচি হইতে চাইতেছে। ফালাচিরে মা ডাকতেছে। কেনো? বঙ্গবন্ধুরে গালি দিছে তাই? বঙ্গবন্ধুরে নিয়া অপমানসূচক কথা বলছে তাই? নাকি তার চামড়া ফর্সা সেইজন্য? বঙ্গবন্ধুরে গালি দিলে আল্লাহ নবীরে বেইচা দেওয়া যায় ওই প্রথমই দেখলাম! নাউজুবিল্লাহ… এই কারণেই আমি তাদের মুনাফিক বলি। দায়িত্ব নিয়াই বলি…

অমি রহমান পিয়াল এর ফেসবুকের টাইম লাইন থেকে নেওয়া।   https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=10157370783888363&id=515328362






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*