প্রাণের ৭১

রাজনীতি

রাজনীতির শুদ্ধ পুরুষ ইঞ্জিঃ মোশাররফ হোসেন – মোহাম্মদ হাসান

জীবন যখন সুদীর্ঘ পথ পরিক্রমা। এ পরিক্রমায় কিছু কিছু মানুষ নিজের কর্মগুনে খ্যাতির চূড়ায় আরোহন করেন। নিজের সততা, সাহস আর বুদ্ধিমত্মা দিয়ে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিতে পরিণত হন। সেবা ও ত্যাগের মহিমায় নিজেকে উজাড় করে দিয়ে একজন সমাজহৈতিষি মানুষে রূপান্তর হন। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি তাদেরই একজন। যিনি তাঁর দীর্ঘ জীবনে দেশ, মানুষ আর আদর্শের প্রতি অবিচল থেকেছেন। কখনো প্রশ্রয় দেননি শঠতা, প্রতারণা আর ভন্ডামীকে। আশ্রয় দেননি অন্যায়কারী, সন্ত্রাসী আর দেশদ্রোহীদের। সবসময় নিজগুনে ভালোবেসে গেছেন আদর্শ আর মহানুভবতাকে। মহান এ মানুষটির জীবনের সংক্ষিপ্ত রূপ তুলে ধরতে আমার এ লেখা। তথ্য বিভ্রাট কিংবা অজানা ভুলের জন্য প্রারম্ভেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

ছয় দফা দাবি নিয়ে তদানিন্তন পশ্চিম পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে যখন সমগ্র পূর্ব পাকিস্তান উত্তাল ঠিক তখনি লাহোর ইসলামীয়া কলেজের ছাত্র ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। দাবি ঘোষণার পরপর নিজেকে আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত করে পশ্চিম পাকিস্তানী সামরিক যান্তাদের বুলেটের দিকে নিজের বুক পেতে দেন। অসীম সাহসের অধিকারী মোশাররফ হোসেন ১৯৬৬ সালে ছয় দফার যৌক্তিকতা তুলে ধরে লাহোরে পূর্ব পাকিস্তানে অধ্যায়নরত ছাত্রদের সংগঠন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র পরিষদের একটি সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। কোন এক অজানা কারনে স্বাধীনতার পর তাঁর রাজনৈতিক জীবনী থেকে ছাত্ররাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ এ অংশটুকু আড়াল হয়ে যায়।
সম্পূর্ণ প্রচারবিমুখ এ মানুষটি নিজের রাজনৈতিক জীবনের অসীম সাহস, সততা ও ত্যাগের মহিমা জনসম্মুখে প্রকাশে আগ্রহি নন। বরং নিজের কৃতিত্বটুকু আড়াল করে সুখ অনুভব করেন। নিজে খুশি হন শিক্ষা, সমাজকর্ম আর রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য পরায়ন হয়ে দেশ তথা নিজের অঞ্চল মিরসরাইয়ের সামগ্রিক উন্নয়নে নিজেকে নিবিদন করতে পেরে।

ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ১৯৪৩ সালের ১২ জানুয়ারি মীরসরাই উপজেলার ধুম ইউনিয়নের একটি ঐতিহ্যবাহী সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তাঁর বাবা মরহুম এস.রহমান তৎকালীন প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য। মা পাঞ্জেবুনেছা। বাবা একজন পরিশ্রমী ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ছিলেন, যিনি ১৯৪৪ সাল থেকে কলকাতায় ব্যবসা শুরু করেন। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের দাদা মরহুম এফ.রহমানও একাধারে বিশ বছর ধরে তৎকালীন ধুম ইউনিয়ন পরিষদের প্রেসিডেন্ট ও স্বনামধন্য ব্যবসায়ী ছিলেন।
পড়াশুনায় বরাবরই মেধাবী ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। তিনি ১৯৫৮ সালে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে এস.এস.সি এবং ১৯৬১ সালে স্যার আশুতোষ কলেজ থেকে এইচ.এস.সি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৬৬ সালে তিনি লাহোর প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে খনিজ বিষয়ে ¯œাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। সেখানে পড়াশুনাকালে মোশাররফ হোসেন ছয় দফা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন।
লাহোর থেকে দেশে ফিরে মানুষের কল্যাণে কাজ করার মহান ব্রত নিয়ে চট্টল শার্দুল আওয়ামী লীগের পরাক্রমশালী নেতা এম.এ আজিজের হাত ধরে রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। ১৯৭০ এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর আনুকল্য পেয়ে মিরসরাই আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।

সেসময় পাকিস্তানী শোষকদের ষড়যন্ত্রে আওয়ামী লীগের হয়ে তাঁর আর পার্লামেন্টে যাওয়া হয়নি। ওই সময় দেশের সাত কোটি শোষিত বঞ্চিত মানুষের প্রাণে স্বাধীনতার সুপ্ত বাসনা আর বিপ্লবী আগুন জ্বালান শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে বিত্ত বৈভব মায়া ত্যাগ করে স্বদেশের মুক্তির সংগ্রামে জীবন বাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়েন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। যুদ্ধাকালীন সময়ে চট্টগ্রামের সাব সেক্টর কমান্ডার হিসেবে তিনি গিরিলা যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের স্বসস্ত্র বিপ্লবে একজন জনপ্রতিনিধিকে অস্ত্র হাতে যুদ্ধে যাবার ঘটনা পৃথিবীতে বিরল। ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। হাতে গোনা যে ক’জন সংসদ সদস্য সে সময় সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন তাদের অন্যতম।
যুদ্ধকালীন ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানী সৈন্যরা যখন দেশব্যাপী হত্যাযজ্ঞ শুরু করে তখন কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট থেকে ২৫ ব্রিগেড পাকিস্তানী সৈন্য চট্টগ্রাম অভিমুখে রওনা দেয়। এ খবর জানতে পেরে তৎকালীন এম.পি.এ ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন তার সাথীদের নিয়ে মীরসরাই শুভপুর ব্রীজে অগ্নি সংযোগ করে ব্রীজটি মারাত্মক ক্ষতিসাধন করে যানচলাচলের অনুপযোগী করে দেয়। ফলে পাকিস্তানী সৈন্যবাহী ২৬টি সাঁজোয়া যান চট্টগ্রাম শহরে প্রবেশ করতে বেশ কালক্ষেপণ হয়। পরবর্তীতে তিনি সি.ইন.সি স্পেশাল ট্রেনিং নিয়ে দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন পরিচালনা করেন।
স্বাধীনতা পরবর্তীতে তিনি ১৯৯৭৩, ১৯৮৬, ১৯৯৬, ২০০৮,২০১৪ এবং ২০১৮ সালের অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালে জাতীয় সংসদে তিনি বিরোধী দলীয় হুইপের এবং ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারে তিনি অত্যন্ত দক্ষতা ও সততার সাথে বেসামরিক বিমান পরিবহন, পর্যটন, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন।
এরপর ১৯১৪ সালে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে গণপূর্তে অভূতপূর্ব উন্নয়ন ও পরিবর্তন করে পুরোনো কলঙ্ক মোচনে অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৭৫ সালে তিনি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বাকশাল এবং ৭৭ সালে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ১৯৮০ ও ৮৪ সালে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৯২, ১৯৯৬, ২০০৪ এবং ২০১২ সালে সভাপতি এবং একই সাথে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি তৃতীয় বারের মত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দলীয় রাজনীতিতে অসীম সাহসি, সৎ, ত্যাগি ও নিবেদিত প্রাণ নেতা হিসেবে সমগ্র দেশে তাঁর খ্যাতি রয়েছে।
১৯৯৬ সালের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন, পর্যটন, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনকালে নিজে একজন প্রকৌশলী, স্বচ্ছ ও মুক্ত চিন্তার মানুষ হিসেবে মেধা, মনন ও প্রজ্ঞার সমন্বয়ে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে মন্ত্রণালয়ের কাজ পরিচালনা করেন। দায়িত্ব গ্রহণকালীন সময়ে বাংলাদেশ বিমানের নাজুক অবস্থা থেকে দ্রুততম সময়ে একটি সেবাধর্মী, দায়িত্বশীল ও লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এটিকে রূপ দানে তিনি সক্ষম হন। তার দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে কোন অসন্তোস ছাড়াই প্রতিবছর হজ্ব ফ্লাইটগুলো সফলভাবে পরিচালিত হয়। তার সময়ে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের টার্মিনাল ভবনের সম্প্রসারণ, কার্গো ভিলেজ স্থাপন, বহির্গমন লাউঞ্জের অবকাঠামো উন্নয়ন, অতিরিক্ত বোডিং ব্রীজ সংযোজন, কার পার্কি নির্মাণ, আগমনী লাউঞ্জের উন্নয়নসহ পুরো বিমান বিমান বন্দরের অবকাঠামো ও আধুনিকীকরণ করা হয়। চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘ দিনের প্রাণের দাবী চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের কাজ শুরু করে নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে শেষ করে চট্টগ্রামবাসীর প্রতি দায়বদ্ধতার প্রতিফলন ঘটান। এ ছাড়া সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে বিমানের বহর সম্প্রসারণপূর্বক যাত্রী ও রাজস্ব বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ বিমান কর্পোরেশনকে ২৫০০ কোটি টাকার সম্পদ সমৃদ্ধ জাতীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেন। পূর্তমন্ত্রী হিসেবে স্বল্প আয়ের লোকদের আবাসন সমস্যা নিরসনকল্পে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা তার একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। সরকারী কর্মকর্তাদের যোগসাজসে পূর্তবিভাগের জায়গা একশ্রেণী অসাধু প্রভাবশালী ব্যক্তি জাল দলিলের মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া তিনি কঠোর হস্তে দমন করেন। সংশ্লিষ্ট অসাধু মহলকে মোকাবেলা করতে গিয়ে তাকে বেষ কয়েকবার আদালতে হাজিরা দিতে হয়। কক্সবাজারে বিস্তার সমুদ্র সৈকত ও প্রকৃতির অনুপম নৈসর্গিক সৌন্দর্য রক্ষার্থে তিনি সৈকত সংলগ্ন সরকারী জমি বরাদ্দ প্রদান বন্ধ করেছিলেন। পরবর্তী সরকার যা দলীয়করণের মাধ্যমে বরাদ্দ দেয়। খোদ রাজধানীসহ সারাদেশে বিভিন্ন মহল পুকুর, নালা, জলাশয়, লেক ভরাট করে দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশ ও প্রকৃতির যে বিপর্যয় ঘটিয়ে আসছিল তা ঠেকাতে তিনি উদ্যোগী হয়ে জাতীয় সংসদে জলাধারা আইন-২০০০ অনুমোদন করেন। তৎকালীন সময়ে তার এই উদ্যোগ সর্ব মহলে প্রশংসিত হয়। ভূমি দস্যুদের হাত থেকে সরকারী সম্পত্তি রক্ষায় তিনি সরকারী জমি অবমুক্তকরণ প্রক্রিয়াও বন্ধ করেন। সরকারী জমিতে রাজউকের মাধ্যমে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় ১০০০ ফ্ল্যাটের সমন্বয়ে ‘ন্যাম ভিলেজ’ প্রতিষ্ঠা করেন। চট্টগ্রামের ডিসি হিলে একটি স্থায়ী মঞ্চ ও ওয়াকওয়ে নির্মাণের মাধ্যমে তিনি চট্টগ্রামের সংস্কৃতিসেবী ও সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের আকাঙক্ষার বাস্তবায়ন ঘটান।
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন শুধুমাত্র মন্ত্রিত্ব নয় স্পষ্টবাদী ও উদার মনোভাবের মানুষ হিসেবে তাঁর দলেও তিনি সর্বশ্রদ্ধেয়। নিজ দলের নেতাকর্মীসহ চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষের নিকট তার সুনাম রয়েছে। রাজনীতি করতে গিয়ে এ সুদীর্ঘ সময়ে তিনি কখনও কোন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে আশ্রয় প্রশ্রয় দেননি এবং কোন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে সমর্থন করেননি। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন নীতি ও আদর্শের প্রশ্নে কখনো আপোষ করেননি। ১৯৭৫ পরবর্তী বিভিন্ন সরকারের মন্ত্রী পরিষদে অন্তভর্ূূক্ত হওয়ার আহ্বান তিনি দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেন এবং নিজ দলের আদর্শে অবিচল থেকেছেন। লোভ লালসা তাঁকে কখনোই স্পর্শ করতে পারেনি।
রাজনীতিতে এসে মুক্তিযুদ্ধসহ বহুবার তিনি জীবন মৃত্যুর মুখোমুখী হয়েছেন, নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ১৯৮০ সালে চট্টগ্রামের নিউমার্কেট চত্বরে তৎকালীন বিএনপি’র সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্তৃক তিনি এবং আওয়ামীলীগের অনেক নেতৃবৃন্দ আক্রান্ত হন। এসময় সন্ত্রাসীরা তাঁর পায়ের রগ কেটে দেয়। ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারী স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে শেখ হাসিনার মিছিলে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যা করার ঘটনায় তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন। ১৯৯২ সালের ৮ মে ফটিকছড়িতে জামায়াত ক্যাডারদের সশস্ত্র হামলায় গুরুতর আহত হন এবং নিজের অসীম সাহসের গুনে অলৈাকিকভাবে প্রাণে বেঁচে যান এ নেতা।
মোশাররফ হোসেন জীবনের প্রত্যেকটি জায়গায় সফলতার স্বাক্ষর রেখে গেছেন। মনে প্রাণে একটি রাজনৈতিক আদর্শকে লালন করে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে গিয়ে অর্থনৈতিক দুর্বলতা যেন জনসেবা থেকে তাকে দূরে রাখতে না পারে সে জন্য রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনার পাশাপাশি তিনি তার পৈতৃক ব্যবসী প্রতিষ্ঠানগুলো দেখবাল করেন। এক পর্যায়ে ১৯৯৮ সালে গ্যাসমিন লিমিটেড নামে একটি ঊহমরহপবৎরহম ্ ঈড়হংঃৎঁপঃরড়হ ঋরৎস প্রতিষ্ঠা করেন। তার প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে দেশের গুরুত্বপূর্ণ পাইপ লাইনের কাজ করে আসছে। ১৯৬৪ সালে কক্সবাজারে তার পিতার প্রতিষ্ঠিত হোটেল সায়মনকে পরবর্তীতে আরো সম্প্রসারণ করে ব্যবসায় পরিধি বৃদ্ধি করেন।

ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন একজন রাজনৈতিক নেতা, একজন মুক্তিযোদ্ধা, একজন পরোপকারী সমাজসেবক ও শিক্ষানুরাগী। তিনি তাঁর মরহুম বাবা এস রহমানের নামেও ওপর ট্রাষ্ট গঠন করে চট্টগ্রামের মিরসরাই অঞ্চলের শিক্ষা খাতে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। প্রতিষ্ঠা করেছেন বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যার অন্যতম মহাজনহাট ফজলুর রহমান স্কুল এন্ড কলেজ, গোলকেরহাট পাঞ্জেবুনেছা বালিকা বিদ্যাল (পিএন গালর্স স্কুল)। যুক্ত ছিলেন জোরারগঞ্জ মহিলা কলেজ, বারইয়ারহাট ডিগ্রি কলেজসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার সঙ্গে। এছাড়া তিনি মিরসরাই উপজেলার কয়েকটি মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আজীবন দাতা সদস্য হিসেবে যুক্ত রয়েছেন। শুধু তাই নয় তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি এলাকার প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে রাজনীতির উদ্ধে থেকে রাজনীতিমুক্ত রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছেন।
সূত্রঃ – এনায়েত মিঠু’র প্রকাশিত প্রতিবেদন।

লেখকঃ মোহাম্মদ হাসান, সাংবাদিক, কলামিস্ট।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*