প্রাণের ৭১

শেয়ার বাজার লুটপাটের মামলায় কেউ রক্ষা পায়নি,পাবেনা–নতুন করে মাঠে নেমেছে “দুদক”৷৷

শেয়ার বাজার কেলেংকারী ‘শেখ হাসিনা’ সরকারের দ্বিতীয়বার ভুমিধ্বস বিজয় অর্জন করে ক্ষমতায় আসার অহংকারে’র গাঁয়ে নিঃসন্দেহে কমবেশী কালিমালিপ্ত করেছে৷ বিষয়টি নিয়ে এত বেশী হৈচৈ হতনা৷ যদিনা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৯৯৬ ইং সালে ক্ষমতা গ্রহনের প্রাক্কালে তদ্রুপ লুটপাটের ঘটনাটি না ঘটতো৷এর আগে অন্যকোন সরকারের শাসনামলে,একেবারে’ই যে শেয়ার বাজার লুটপাট হয়নি, তেমনটি নয়৷ তবে সে সমস্ত ঘটনা এত বেশী ডাকডোল পিটিয়ে, কোটিকোটি টাকা লুটপাটের ঘটনা ঘটেনি৷

অতীতে যে এমনটি ঘটেছে তাঁর প্রকৃষ্ট প্রমান, মামলার পরিসংখ্যানের দিকে তাকালেও পাওয়া যায়৷ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ প্রথমবার ৯৬ইং সালে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার পরপরই শেয়ার বাজার লুটপাটের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছিল৷ একই বছর তদন্ত শেষে শেয়ার কেলেংকারীর মামলা হয়েছিল ১৫টি৷ একই ঘটনার পূর্ণরাবৃত্তি ঘটে ২০০৯ ইং সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ভুমিধ্বস বিজয় অর্জন করে আওয়ামীলী সরকার গঠন করার পর৷ একই সালের শেয়ার কেলেংকারীর মামলা হয়েছিল বেশ কয়েকটি, তম্মধ্যে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে স্থানারীত মামলার সংখ্যা ২টি, সর্বমোট ১৭টি৷
সরকার “শেয়ার বাজার বিচার ট্রাইব্যুনাল” গঠন করার পর, ২৪টি মামলা বিচার কায্য সম্পাদনের নিমিত্তে ট্রাইব্যুনালে প্রেরিত হয়েছিল৷ তম্মদ্ধে ১৯৯৯ইং সালের শেয়ার কেলেংকারীর একটি মামলা “মার্ক বাংলাদেশ শিল্প এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের ৪জনের বিরুদ্ধে “জেল–জরিমানা” উভয় দন্ডে দন্ডিত করেছিল বিশেষ ট্রাইব্যুনাল৷
শেয়ার বাজার লুটপাটের বিষয় মিডিয়া যতনা নেতিবাচক প্রচার প্রচারণায় সময় ব্যয় করেছে, তার কিঞ্চিত পরিমান সময় সরকারের গৃহিত পদক্ষেপ, মামলা, বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন, আপিল, দন্ডাদেশ সম্পর্কে করেনি৷ ফলে সাধারন- অসাধারন ব্যাক্তি, মিডিয়া প্রচার করততে দেখা যায় বা বলতে শুনা যায়–‘শেয়ার বাজার লুটেরা ধরাছোঁয়ার বাইরে৷’ লুটেরার বিচারে সরকারের আন্তরিকতা নেই৷ শেয়ার বাজার লুটে সরকারের মন্ত্রী’রা জড়িত৷ সরকারের কট্রর বিরুধী কিছু লোক ও মিডিয়া আর একধাপ এগিয়ে বলতে চেষ্টা করেন–সরকার প্রধান এবং তাঁর পরিবার’ জড়িত,অবশ্য ইনিয়ে বিনিয়ে বলেন,সরাসরি বলার সাহষ নেই৷
অথছ সরকারী, বেসরকারী, বিভিন্ন আন্তজাতিক সংস্থা, এনজিও সংস্থা’র গঠিত নিবিড় তদন্তে সরকার প্রধান ও তাঁর পরিবার, মন্ত্রী পরিষদের সদস্যদের মধ্যে কেউ জড়িত থাকার নন্যুন্নতম প্রমান পেয়েছে আজব্দি বলতে পারেনি৷ বরঞ্চ শেয়ার বাজারের ভাতা ধায্য পাহারাদার ‘সিকিউরিটিজ এন্ড একচেঞ্জ কমিশনে’র কতিপয় কর্মকর্তা/কর্মচারী জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট প্রমান সহ সকল তদন্তকারী দলের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে৷ তাঁদের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে, অনেকেই জেলে আছে৷
ধরাছোঁয়ার বাইরে? কেউই ধরাছোঁয়ার বাহিরে নেই৷ একজনও নেই, ‘সালমান এফ রহমান?তিনিও নন৷ তাঁর বিরুদ্ধেও উচ্চ আদালতে আপিল প্যান্ডিং আছে৷ দুইবারের শেয়ার বাজার লুটপাটকারী অনেকে উন্নত দেশে পালিয়ে গেছে৷ কেউ কেউ আছে জেলখানায়, আবার কেউ উচ্চ আদালতে দেয়া জামিন এবং মামলা স্থগিতের সুযোগ ভোগরতঃ আছে৷ নতুন মামলা, স্থগিত মামলা, খালাস প্রাপ্ত মামলা, কোয়াশড–কোন মতেই কারো শেষ রক্ষা হয়নি, হবেনা৷ সবগুলী মামলা উচ্চ আদালতে’র সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে৷ উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের যন্ত্রনায় অতিষ্ট সরকার পক্ষ দুদকের সহযোগীতা নিতে বাধ্য হয়েছেন, বলা যেতে পারে৷
রাতের আধাঁরে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত টিভি ‘টক শো’তে অনেক কথাই বলা যায়, পত্র পত্রিকায়ও নানা বাগাড়ম্বর বক্তৃতা করা সহজ৷ আমি তাঁদের অনুরুধ করবো, একবার প্রচলিত্ কোম্পানি আইনের উপর চোখ বুলিয়ে আসুন৷ তারপর যত ইচ্ছে সমালোচনা করুন, আপত্তি থাকবেনা৷
আমি আরও একটি বিষয় জোর দিয়ে বলতে চাই–অতীতে’র কোন একটি সরকার রাষ্ট্রীয় আর্থিক খাতের হাজার হাজার কেলেংকারীর মধ্যে একটির বিচার করতে পেরেছে? কেউ কি তথ্য উপাত্ত দিয়ে প্রমান করতে পারবেন? আমি নিশ্চিত, কেউই পারবেন না৷ আমি আপনাদেরকে তথ্য উপাত্ত দিয়ে আর্থিক খাত ‘শেয়ার বাজার’ লুটের বিচারকায্য সম্পাদনের সরকারে’র আন্তরিকতার একাধিক দালিলীক প্রমান দিচ্ছি৷
গত দশ বছরে এমন কোন একটি আর্থিক কেলেংকারীর ঘটনা নেই–যে ঘটনায় সরকার অথবা কতৃপক্ষ যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি৷একটি ঘটনাও নেই, তদন্ত সাপেক্ষে ঘটিত ঘটনার অপরাধীকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়নি৷চাঞ্চল্যকর দুই বারের শেয়ার বাজার লুটপাট তো নয়ই– “গত দশ বছরের আর্থিক খাতের কেলেংকারী, দুর্নীতির বিরুদ্ধে তো নিয়েছেই,পুর্বে অন্যান্ন সরকারের সময়কালের আর্থিক খাতের দুর্নীতির মামলা পুর্ণজ্জিবিত করেছে, তাঁদেরকেও আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে৷

নিম্নে সর্বমহলের অবগতির নিমিত্তে সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ–
(১) ১৯৯৬ ইং সালের শেয়ার বাজার কেলেংকারীঃ–
বাংলাদেশের ইতিহাসে আর্থিক খাতের লুটপাটের ইতিহাসে ৯৬ইং এর শেয়ার বাজার লুটের ইতিহাস এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা৷ আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি,বিকল্প ধারার নেতারা এবং তদীয় মদদপূষ্ট ব্যবসায়ী চক্র কৌশলে শেয়ার বাজারে বড় ধরনের পতন ঘটিয়ে কোটিকোটি টাকা লুটপাট করে নিয়ে যায়৷
(২)তদন্ত কমিশন গঠনঃ–
শেয়ার বাজার ধ্বসের কারন, জড়িত ব্যাক্ত ও প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করার নিমিত্তে সরকার তড়িৎ তদন্ত্ কমিটি গঠন করে৷ ১৯৯৬ সালে শেয়ার কেলেঙ্কারির ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটির প্রধান ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর আমিরুল ইসলাম চৌধুরী সাহেবকে প্রধান করে উক্ত তদন্ত কমিটি গঠন করে কতৃপক্ষ৷
(৩) প্রতিবেদনঃ–
, শেয়ার বাজারে কোটি কোটি টাকা লুটপাটে সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কতিপয় কর্মকর্তা জড়িত। বাংলাদেশ ব্যাংক শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রণে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
(৪) ৯৬ এর শেয়ার বাজার লুটের কৌশলঃ–
বিধি অনুযায়ী বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ তাদের মূলধনের ১০% এর বেশি শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে পারে না। কিন্তু অধিকাংশ বাণিজ্যিক ব্যাংক নীতিমালা লংঘন করে তাদের মূলধনের অধিকাংশই শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার ফলে শেয়ারের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়৷
পরবর্তিতে বানিজ্যিক ব্যাংকগুলী তাঁদের লগ্নিকৃত পুঁজি প্রত্যাহার করে নিলে বাজারের পতন শুরু হয়৷ বানিজ্যিক ব্যাংকের বিনিয়োগ বিদ্যমান থাকাবস্থায় ৯৬ এর ৫ নভেম্বর পয্যন্ত ডিএসইর সূচক সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৬৪৯ পয়েন্টে উঠে যায়৷ পূঁজি প্রত্যাহার পরবর্তিতে পতন শুরু হয়ে কমতে কমতে সূচকটি ৪৬২ পয়েন্টে নেমে আসে।
(৫) জড়িত ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানঃ–
বাজার ধ্ব.সের অন্যতম পরিকল্পনাকারী এবং বেক্সিমকো এর চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, ডিএসই এর সাবেক সভাপতি রাকিবুর রহমান, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) চেয়ারম্যান জিয়াউল হক খন্দকার, এসইসির সাবেক সদস্য মনসুর আলম এবং বিএনপির রাজনীতিবিদ মোসাদ্দেক আলী ফালু, এম এ হাশেম,আবদুল আওয়াল মিন্টু, বিকল্প ধারার এম এ মান্নান সহ আরো কতিপয় ব্যাক্তি ও তাঁদের ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান৷
(৬) আইনী ব্যাবস্থা গ্রহনঃ–
১৯৯৬ সালে সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন শেয়ার বাজারে দরপতনের সঙ্গে ১৫টি কোম্পানি জড়িত থাকার প্রমাণ পায়৷ পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পক্ষ থেকে মোট ১৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল৷

(৭) ২০০৯–১০ইং সালের শেয়ার বাজার লুটঃ–
২০০৯-১০ ইং সালে বর্তমান সরকার ক্ষমতার গ্রহনের প্রারম্ভিক সময়কালে৷ এবার গ্রামগঞ্জের লক্ষ লক্ষ বিনিয়োগকারীর লগ্নিকৃত টাকা কারসাজির মাধ্যমে কতিপয় লুটেরা কুলিন পকেটস্ত করে নেয়৷ এবারের শেয়ার বাজারের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎকারীরা পুর্বের ক্ষমতাধর বৃহৎ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ,বিএনপি, জাতীয় পার্টির সাথে সরাসরি জড়িত৷
(৮) তদন্তকমিটি গঠনঃ–
পুজিবাজারের ধসের তদন্ত করার জন্যে ২৪ জানুয়ারী ২০১১ বাংলাদেশ ব্যাংকের চেয়ারম্যান ‘খন্দকার ইব্রাহীম খালেদে’র নেতৃত্বে চার সদস্যের উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সদস্যের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সরকার৷
(৯) তদন্তকারী দলের প্রাথমিক প্রতিবেদনঃ–
তিন মাস পর, ০৭ এপ্রিল কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়। সেখানে ৬০ জন প্রভাবশালী ব্যাক্তিকে চিহ্নিত করে যাদের সম্মিলিত কারসাজিতে বাজারে এই ধস নেমেছে। কমিটি প্রতিবেদন প্রকাশের পুর্বে ডিএসই এবং সিএসই উভয় পুজিবাজারের সকল সদস্যের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন এবং বিভিন্ন সাংবাদিক ও বিশ্লেষকদের সাথে আলোচনা করেন।
(১০) জড়িত সন্দেহ ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানঃ–
চিহ্নিত প্রাথমিক ৬০ জনের মধ্যে ছিলেন ১৯৯৬ এর বাজার ধ্ব.সের অন্যতম পরিকল্পনাকারী এবং বেক্সিমকো এর চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, ডিএসই এর সাবেক সভাপতি রাকিবুর রহমান, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) চেয়ারম্যান জিয়াউল হক খন্দকার, এসইসির সাবেক সদস্য মনসুর আলম এবং বিএনপির রাজনীতিবিদ মোসাদ্দেক আলী ফালু, এম এ মান্নান, আবুল হাশেম, আবদুল আউয়াল মিন্টু সহ প্রায় সকলে৷
(১১) তদন্তকারী দলের চুড়ান্ত প্রতিবেদনঃ–
চারদলীয় জোট সরকারের আমলের এক ক্ষমতাধর মন্ত্রীর পুত্র, অসীম ক্ষমতাধর দুই এমপি ও তিন ব্যবসায়ী এবং বর্তমান আওয়ামী লীগসহ মহাজোট সরকারের দুই এমপি, দুই ক্ষমতাবান শিল্পপতি ব্যবসায়ীসহ তিন দলের ১১ জন প্রত্যক্ষভাবে শেয়ার কেলেংকারিতে জড়িত। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, শেয়ার বাজার থেকে ২০০৯ থেকে ১০ সালের মধ্যে ৪৩ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়। একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা শেয়ার বাজারে বার বার দরপতন ঘটিয়ে কোটি কোটি টাকার কেলেংকারি ঘটনার দীর্ঘ তদন্ত করেছে। তদন্ত করে তিন দলের ১১ জন রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী শেয়ার বাজার কেলেংকারির সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পায়৷
(১২) ২০০৯ এর শেয়ার বাজার কেরলেংকারীর কৌশলঃ–
৯৬ এর শেয়ার কেলেংকারীর চেয়ে ভিন্নতর রূপে ২০০৯ইং সালের শেয়ার কেলেংকারী’র ঘটনা ঘটানো হয়েছিল৷ যদিও কমিটি বিভিন্ন অনিয়মের সন্ধান পায়, এরমধ্যে অমনিবাস একাউন্ট অন্যতম, যার সাহায্যে ২টি প্রতিষ্ঠান কৌশলে বাজারের খুচরা বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের উপর মাত্রাতিরিক্ত লাভ দেখিয়ে খুচরা বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে প্রলুব্ধ করে এবং সময়মত দরপতন ঘটিয়ে সমূদয় টাকা হাতিয়ে নেয়৷
(১৩) তদন্ত দলের প্রতিবেদন অনুযায়ী মামলাঃ–
তদন্তকারী দলের দীর্ঘ তদন্তের পর দাখিলকৃত প্রতিবেদন অনুযায়ী বাজারে কৌশলি ভুমিকা গ্রহন করে খুছরা বিনিয়োগকারীদের অধিক মুনাফার প্রলুব্ধ করেছে এমন দুটি চিহ্নিত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে “সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন”৷

(ক) শেয়ার বাজার বিচার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনঃ–
২০১২ সালে এ ট্রাইব্যুনাল গঠনের অনুমোদন দেয় সরকার। ১৯৬৯ সালের অধ্যাদেশ সংশোধন করে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ আইন, ২০১২ প্রণয়ন করা হয়। ২০১৩ সালের ২৪ নভেম্বর সচিব কমিটির সভায় বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনে একজন বিচারকসহ মোট ছয় সদস্যের জনবল কাঠামোর প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ২০১২-এর ২৫ (বি) ধারা অনুসারে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

(খ) বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রয়োজনীয়তাঃ–
ট্রাইব্যুনাল না থাকায় শেয়ার বাজার সংক্রান্ত বেশকিছু মামলা বছরের পর বছর অমিমাংশিত রয়ে যায়৷ ১৯৯৬ সালে শেয়ার কারসাজির জন্য দায়ের করা ১৫টি মামলা প্রায় ১৬ বছরেও নিষ্পত্তি হয়নি। ২০০১ ইং হতে ২০০৮ ইং সাল পয্যন্ত ৯৬ এর শেয়ার বাজার কেলেংকারীর দায়েরকৃত ১৫টি মামলা একপ্রকার হিমাগারেই পড়েছিল৷ তাছাড়া নতুন করে ২০১১ সালে শেয়ার কারসাজির দু’টি মামলা নতুন করে যুক্ত হয়। অপরাপর আরো ৭টি আর্থিক কেলেংকারীর মামলা বিচারের অপেক্ষায় দির্ঘদিন পড়েছিল৷

(গ) বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলার রায়ঃ–
(অ) ১৯৯৬ সালের শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির পর গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ১৯৯৭ সালের ৪ মে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পক্ষ থেকে মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো ফার্মা ও শাইনপুকুর হোল্ডিং কোম্পেনীর অপরাধাধের সালমান এফ রহমান সহ আরো কতিপয় ব্যাক্তির বিরুদ্ধে মামলা দুটি করা হয়েছিল৷
২০১৫ সালে পুঁজিবাজারবিষয়ক মামলা নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হওয়ার পর মামলাগুলো বিচারিক কার্যক্রমের জন্য সেখানে স্থানান্তর হয়ে আসে। কিন্তু ট্রাইব্যুনালে বিচার কার্যক্রম শুরুর আগেই মামলা দুটি যথাযথা আইনানুসারে এবং প্রতিষ্ঠানকে আসামী না করায় আসামিরা আপাতঃদৃষ্টে মুক্ত আছেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ এ মামলা দুটি বাতিল করার কারনে৷ আদালতের ভাষায় যাকে বলা হয় ‘কোয়াশড’

(আ) শেয়ার কেলেঙ্কারির মামলায় জেল-জরিমানা হয়েছে “মার্ক বাংলাদেশ শিল্প অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডে’র মালিকদের।কোম্পানি এবং এর তিন পরিচালককে ৫০ লাখ টাকা করে দুই কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তিন পরিচালকের প্রত্যেকের পাঁচ বছরের কারাদন্ড দিয়েছে আদালত৷

(ই) তিন ব্যাংক কর্ণধারের মধ্যে দুই ব্যাংকের কর্ণধার মামলায় দুই মামলায় খালাস পায়৷ খালাসপ্রাপ্ত দুই ব্যাংকের চেয়ারম্যান হলেন ব্যাংক এশিয়া ও
র‍্যাগস গ্রুপের চেয়ারম্যান এ, রউফ চৌধুরী এবং ওয়ান ব্যাংক ও এইচআরসি গ্রুপের চেয়ারম্যান সাঈদ এইচ. চৌধুরী। তারা দু’জনই ১৯৯৬ সালে প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজের শেয়ার কেলেঙ্কারি মামলার আসামি ছিলেন।

(ঈ) দুই মামলায় সকল আসামী খালাসঃ–দুই মামলার সকল আসামী অভিযোগ হতে মুক্তি পেয়েছেন৷ মামলা দু’টির মধ্যে এইচএমএমএস ফাইন্যান্সিয়াল কনসালটেন্সি অ্যান্ড সিকিউরিটিজের শেয়ার কারসাজি মামলা থেকে বেকসুর খালাস পেয়েছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক চেয়ারম্যান হেমায়েত উদ্দিন আহমেদ, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তাক আহমেদ সাদেক, ডিএসইর সদস্য সৈয়দ মাহবুব মুর্শেদ, ডিএসইর বর্তমান পরিচালক শরিফ আতাউর রহমান এবং সাবেক চেয়ারম্যান আহমেদ ইকবাল হাসান বেকসুর খালাস পেয়েছেন।
অপরটি সিকিউরিটিজ কনসালটেন্টস লিমিটেডের শেয়ার কারসাজি মামলায় এম জে আজম চৌধুরী, শহীদুল্লাহ ও প্রফেসর মাহবুব আহমেদ খালাস পেয়েছেন। একই সঙ্গে ২ মামলা থেকে এইচএমএমএস ফাইন্যান্সিয়াল কনসালটেন্সি অ্যান্ড সিকিউরিটিজ ও সিকিউরিটিজ কনসালটেন্টস লিমিটেড নামে ওই ২ প্রতিষ্ঠানকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

(উ) ৯৬এর মামলায় দুইজনের কারাদন্ডঃ– রায়ে চিক টেক্সটাইল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুর রসুল ও পরিচালক ইফতেখার মোহাম্মদকে চার বছর করে কারাদণ্ড ও ৩০ লাখ টাকা করে জরিমানা ধার্য করা হয়েছে।১৯৯৬ সালে কারসাজি করে নিজেদের কোম্পানির শেয়ারের দর বাড়ানোর অভিযোগে এদের বিরুদ্ধে ১৯৯৭ সালে আদালতে মামলা হয়।

(১৪) মন্ত্রনালয়ের তৎপরতাঃ–
মামলা সমুহের মধ্যে গুরুত্ব বিবেচনায় ১৯৯৬ ও ২০৯১০ সালের কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত মামলা সমুহের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় তথা সরকার অত্যন্ত সচেতন।উচ্চ আদালতের আদেশে স্থগিত হওয়া মামলার মধ্যে ক্রিমিনাল পিটিশন নং-২৩/২০০৩, যা ২০০৩ সালের ৫ জানুয়ারি স্থগিত হয়, রীট পিটিশন নং- ৪০১৭/২০০৬, যা ২০০৬ সালের ১৫ জুন স্থগিত হয়। ফৌজদারী বিধি মামলার নং- ৩৩৬৩১/২০১০, যার উপর ২০১০ সালের ১৪ই ডিসেম্বর স্থগিতাদেশ প্রদান করে উচ্চ আদালত। এছাড়া ও শেয়ার কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত আরো কয়েকটি মামলা যথা ক্রিমিনাল পিটিশন নং- ১৫৩৪/২০১৪, ফৌজদারী বিধি মামলা নং- ২৫২৬৩/২০১৪, ফৌদারী বিধি মামলার নং- ২২৬/৯৯, ২২৮/৯৯, ৪৪১/২০০৪, ক্রিমিনাল পিটিশন নং- ৫২২/২০১২, ক্রিমিনাল পিটিশন নং-৮৮/২০১৩ দীর্ঘ দিন যাবৎ স্থগিত হয়ে আছে। তথ্যসুত্রঃ-.(শেয়ার বাজার ডটকম)

(১৫) তদন্ত কমিটির প্রধানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানাঃ–
বেক্সিমকো ফার্মা, শাইনপুকুর হোল্ডিং কোম্পানি বিরুদ্ধে মামলা রুজুর সুপারীশ না থাকা, দুই বেসরকারী ব্যাংকের কর্ণধার মামলা থেকে খালাস, দুই মামলায় সব আসামী খালাস পাওয়া সহ বেশ কিছু কারনে তদন্ত কর্মকর্তার গাফিলতি আদালতের নিকট স্পষ্ট হয়ে উঠে৷ যথাযথ ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আসামী না করায় আইনের ধারা প্রয়োগের ক্ষেত্রে অনিয়মের কারনে মামলার বিচারকায্যে বিঘ্নতা দেখা দেয়৷
তদন্ত প্রতিবেদনে ধোঁয়াশার কারনে বাদীর মামলার আরজীতে ত্রুটি পরিলক্ষিত হওয়ায় এবং নিয়মিত সাক্ষিদানে গরহাজিরার কারনে ১৯৯৬ সালে শেয়ার কেলেঙ্কারির ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটির প্রধান ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর আমিরুল ইসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা (ওয়ারেন্ট ইস্যু) জারি করেছেন ট্রাইব্যুনাল। পুঁজিবাজার মামলা নিষ্পত্তিতে হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন ভবনে স্থাপিত বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক হুমায়ুন কবীর গ্রেপ্তারি পরোয়ানার এ আদেশ জারি করেন।

(১৬) কমিশনের পদক্ষেপঃ–
চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, এ বিষয়ে কমিশনের গৃহীত পদক্ষেপ মন্ত্রণালয়কে প্রতি মাসে অবহিত করা হলেও মামলা সমুহ নিস্পত্তি না হওয়ায় সন্তোষজনক কোনো কারণ প্রদর্শন করা সম্ভব হয় নাই।
এর আগেও মামলা সমুহের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার তথা দ্রুত শুনানির জন্য আইনজীবি কতৃক আদালতে আবেদনের কপি কমিশন চাইলেও সংশ্লিষ্ট আইনজীবি তা পাঠাননি। এছাড়া মন্ত্রণালয় শেয়ার কেলেঙ্কারির বিষয়ে কি ব্যবস্থা নিয়েছে কমিশন , তা দেখতে চায় বলেও উল্লেখ রয়েছে চিঠিতে।
এদিকে আলোচিত ক্রিমিনাল মিস কেস নং-২৫২৬৭/২০১০ (বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালস), ও ক্রিমিনাল মিস কেস নং-২৫৩১৫/২০১০ (শাইন পুকুর হোল্ডিংস লি:)এর ২০১৪ সালের ১৬ মার্চের হাই কোর্টের দেয়া স্থগিত আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করার জন্য আইনজীবিকে অনুরোধ করা হয়েছে।পাশাপাশি এ বিষয়ে কমিশনের কিছু করনীয় থাকলে তাও কমিশনকে জানানোর জন্য বলা হয়েছিল৷
চিঠিতে উল্লেখিত ১০টি মামলার মধ্যে পুঁজিবাজার বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মাত্র ৩ টি মামলা এসেছে।ট্রাইব্যুনালের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ২৪ টি মামলা এসেছে। তার মধ্যে রায় হয়েছে ৬ টি, ফেরৎ গেছে দুইটি মামলা। আর বাকী ১৬টি মামলা উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে বলে ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা যায়৷
(১৭) নানা মহলের তাল বাহানাঃ–
উপরে উল্লেখিত আলোচনায় দেখা যায়, “শেয়ার বাজার সিকিউরিটিজ কতৃক মামলার সম্মানীত উকিল, তদন্তকারী কর্মকর্তা, মামলার বাদী, মামলার চার্জসিট দাখিল, কোম্পানি আইন, বেসরকারী ব্যাংক মালিক, সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ চেয়ারম্যান ও অন্যান্ন কর্মকর্তা সহ সব মহলের মধ্যে শেয়ার বাজার লুটপাটের কাঁদালিপ্ত৷ ফলে ব্যাক্তির স্থানে প্রতিষ্ঠান, প্রতিষ্ঠানের স্থানে ব্যাক্তিকে আসামী করে মামলা রুজু করা হয়েছিল৷ ময়ামলা যথাযথ আইন ও রীতি অনুযায়ী না হওয়ায় সঙ্গত কারনে উচ্চ আদালত উল্লেখিত ২৩টি মামলা স্থগিতাদেশ, বাতিল, খালাস দিতে হয়েছে৷ মন্ত্রনালয় বার বার তাগাদা দেয়া সত্বেও স্থগিত, রিট, বাতিলকৃত মামলার যথাযথ কায্যক্রম গৃহিত না হওয়ায় অবশেষে সরকার দুদক’কে তদন্তে নামাতে বাধ্য হয়৷

(১৮) ছাড় নেই,এবার বাদী দুদকঃ–
পুঁজিবাজার কেলেঙ্কারিতে সাড়ে ৬৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) পাঁচ কর্মকর্তাসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে ১২টি মামলা করেছে গত ১৫ই অক্টোবর ২০১৮ ইং তারিখে দুর্নীতি দমন কমিশন।
ঢাকার রমনা মডেল থানায় দুদকের সহকারী পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে মামলাগুলো করেন বলে সোমবার দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন।
১২মামলায় মোট আসামি ১৫ জন। প্রতিটি মামলায় আসামি হয়েছেন আইসিবির পাঁচ কর্মকর্তা।”
প্রতিটি মামলার আসামিরা হলেন আইসিবির সাবেক উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) টিপু সুলতান ফারাজি, তিন সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মো. এহিয়া মণ্ডল, মো. সামছুল আলম আকন্দ ও শরিকুল আনাম এবং সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার ধনঞ্জয় কুমার মজুমদার।বাদবাকিরা বেসরকারী ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠান৷
আগে গত ৩০ অগাস্ট ২০০৯, ২০১০ ও ২০১১ সালের পুঁজিবাজার কেলেঙ্কারির ঘটনায় ৩ কোটি ৭ লাখ ৫৮ হাজার ৯০৭ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আইসিবির সাবেক উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) টিপু সুলতান ফারাজি, সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. এহিয়া মণ্ডল, মোহাম্মদ সামছুল আলম, সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার ধনঞ্জয় কুমার মজুমদার, আইএফআইসি ব্যাংকের পল্লবী শাখার ব্যবস্থাপক মো. আবদুস সামাদ ও ব্যবসায়ী মো. শরিকুল আনামসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
ওই মামলা করার দিনই টিপু সুলতান, এহিয়া মণ্ডল ও সামাদকে গ্রেপ্তার করে দুদক। তারা এখন কারাগারে রয়েছেন।

উপসংহারঃ–
উপসংহারে বলতে চাই– ‘শেখ হাসিনার সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় দৃড় প্রতিজ্ঞ৷ উপরে উল্লেখিত পদক্ষেপ তাঁর প্রকৃষ্ট প্রমান করে৷ কোম্পানি আইনের দুর্বলতা এসেছে প্রথমাবস্থায় জাতীয়করণকৃত কলকারখানা নামমাত্র মুল্যে জিয়া সরকার কতৃক কতিপয় দেশবিরোধী লুটেরা শ্রেনী’র হাতে তুলে দেয়ার প্রাক্কালে৷ একই ধারাবাহিকতা রক্ষা করে চলেছে পরবর্তি সরকার সমূহ৷ স্বাধীন বাংলাদেশকে শিল্পায়ীত করার লক্ষে শিল্পপতিদের বিশেষ সুবিধা দিয়ে আইন প্রনয়ন করার এই সুযোগ গ্রহন করে অল্প সংখ্যক দুর্বৃত্ত ব্যাবসায়ী, শিল্পপতি৷তাঁরা মূলতঃ সবাই ৭৫ পরবর্তি জিয়া সরকারের পুঁজিবাদী অর্থনীতির নীতি গ্রহন করার সুযোগ গ্রহনকারী৷
সদ্য স্বাধীন দেশকে সমৃদ্ধ করার মহৎ উদ্দেশ্যেই অতীতের সরকার সমূহ নমনিয়তা প্রদর্শন করেছিল, এমনটি ভাবার কোন কারন নেই৷ অবৈধ ক্ষমতাকে বৈধ করার উদ্দেশ্যেই বিশেষ গোষ্টিকে সুযোগ দেয়ার লক্ষে তাঁরা বাংলাদেশের জনগনকে বছরের পর বছর ঠকিয়েছে৷ নব্য লুটেরা ব্যাবসায়ী, শিল্পপতিগন একদিকে যেমন রাষ্ট্রয়াত্ব ব্যাংক লুটপাটের মাধ্যমে ব্যাক্তি মালিকানায় ব্যাংক, বীমা প্রতিষ্ঠা করেছে,অপদিকে বিদেশে টাকা পাচার করে দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে রেখেছিল৷ কতিপয় অসৎ শিল্পপতি ও শিল্প উদ্যোগতা, ব্যাবসায়ী অনৈতিকতায় নিমজ্জিত৷ লক্ষ লক্ষ ব্যাবসায়ী শিল্পপতিদের চরিত্রেও কলংকের তিলক এঁকে দিয়েছে৷
“খেলাপি ঋন” আদায়কল্পে অর্থ ঋন আইন, শেয়ার বাজার লুটপাটে কোম্পানি আইনের ফাঁক, ফোঁকরের প্রতি নজর দিলে সরকারের গৃহিত পদক্ষেপ বা বিচার নিশ্চিতকল্পে আন্তরিকতার সত্যতা মিলে৷ স্বাধীনতার পর এই প্রথম শেখ হাসিনার সরকার রাষ্ট্রের কোন এক আর্থিক খাতের বিচার নিশ্চিতকল্পে এবং দ্রুত প্রতিকারের সদিইচ্ছার প্রতিফলন ঘটিয়েছে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে৷ নিশ্চয়ই ইহা একটি বড় রকমের উদাহরণ হয়ে থাকবে অন্যান্ন আর্থিক খাতের ক্ষেত্রেও৷
তাই তো দেখা যায়–“৭৫ পরবর্তি চলমান ব্যাংক, বীমা লুটেরা, ঋন খেলাপি, শেয়ার বাজার লুটপাটকারী, ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ কৃত অপরাধের দন্ড এড়াতে উন্নত দেশে আগে ভাগে পালিয়ে গেছে৷ সেই সমস্ত দেশে পুর্বে পাচার করা অর্থে গড়ে তোলা সম্পদ শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে খোলা হাতে ব্যাবহার করছে৷
পালিয়ে থাকা ‘৭১, ‘৭৫, ২০০৪ ইং সালের খুনী, ‘৭৫ পরবর্তি চলমান সময় পয্যন্ত ঋন খেলাপি, শেয়ার বাজার লূটপাটকারী, দুর্নীতিবাজ, ঘুষখোর, চাঁদাবাজ, ভুমিখেকো,পদ্মা সেতুর বিরুধীতাকারী, চলমান দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামী সবাই মিলে ‘শেখ হাসিনা’ সরকার উৎখাতে কোটিকোটি ডলার ব্যয় করে আন্তজাতিক খ্যাতি সম্পন্ন, বিশ্বের প্রায় দেশে বিস্তৃত, বিশাল বহরের লবিষ্ট ফার্মের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ বাংলাদেশের ব্যাক্তি হয়৷ -যাহা একটি মধ্য আয়ের রাষ্ট্র কতৃক সম্ভবপর নয় তাহা বাংলাদেশের কতিপয় পলারতক নাগরিক সম্ভব করেছে৷
প্রায় রাষ্ট্র অধিক প্রয়োজনে এক বা একাধিক বিশিষ্ট ব্যাক্তি’কে লবিষ্ট নিয়োগ করে,তাঁর দেশের আন্তজাতিক স্বার্থোদ্ধারে ব্রতি হতে দেখা যায়৷ ২০০৯ ইং সালের পুর্বে বাংলাদেশ সাহায্য নির্ভর ছিল তখনই কেবল সাহায্য, অনুদান, ঋন প্রাপ্তির তদ্ভিরে’র নিমিত্তে একক বিশিষ্ট ব্যাক্তি’কে সপ্তাহ বা মাসের চুক্তিতে বা কর্ম সম্পাদনকাল সময়ের জন্যে লবিষ্ট নিয়োগ করার উদাহরণ আছে৷
“অর্থ ঋন আইন” এবং আদালতের কায্যক্রম পরিচালনার ধরণ, শেয়ার বাজার লুটপাটের নিমিত্তে কোম্পানি আইন এবং আদালত পরিচালনার ধরণের প্রতি নজর দিলে সরকারের গৃহিত একের পর এক পদক্ষেপ এবং প্রতিকারের প্রানান্ত চেষ্টার পর, কোন ব্যাক্তি, মিডিয়ার সমালোচনা করার উপযোগিতা থাকেনা৷ সমালোচনা, দিক নির্দেশনা থাকতে পারে কেবলমাত্র প্রচলিত আইন, আদালত ও বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘ সুত্রিতা, আইনের ফাঁক ফোঁকর ইত্যাদি সম্পর্কিত বিষয় সমূহ বাতিল, সংশোধন, সংযোজন, বিয়োজন প্রয়োজনে নতুন আইন সৃজনের বিলম্বের৷






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*