প্রাণের ৭১

সিলেটে’র জনসভা এবং শনিতে আক্রান্ত ঐক্যফ্রন্ট।।আবদুল গাফফার চৌধুরী।।

চব্বিশে অক্টোবর বুধবার সিলেটের রেজিস্টারি মাঠে ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের’ প্রথম জনসভা অনুষ্ঠিত হলো। ফ্রন্টের প্রায় সব নেতাই সভায় উপস্থিত হয়ে বক্তৃতা দিয়েছেন। সভায় কত লোক হয়েছিল এত দূরে বসে অনুমান করা সম্ভব নয়। তবে ছবি দেখে মনে হলো, বিভাগীয় শহরের তুলনায় জনসমাগম ভালোই হয়েছিল। একটি সাধারণ নির্বাচনের আগে উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিবেশে এ ধরনের জনসমাবেশ হওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে বর্তমান সরকার যদি খুবই আনপপুলার হতো, তাহলে এতগুলো ‘বিগ হেডের’ যেখানে সমাবেশ হয়েছে, সেখানে এ সভায় মানুষ উপচে পড়ার কথা। যেমন হয়েছিল ‘৫৩ সালে হক-ভাসানীর যুক্তফ্রন্টের সভায়। কিংবা এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন জোটের সভায়। গত বুধবারের জনসভায় জনতার ঢল তেমনভাবে নামেনি।

পুলিশ এবার সভা অনুষ্ঠানে অনুমতি দিয়ে ভালো করেছে। দু’দিন আগে এই সভা অনুষ্ঠানেরও অনুমতি না দিয়ে তারা ভালো করেনি। তাতে সরকারের অহেতুক দুর্নাম হয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত সভাটি তো অনুষ্ঠিত হলোই। তাতে আমরা সভামঞ্চে দাঁড়ানো কিছু নেতার মুষ্টিবদ্ধ হাত দেখলাম, গর্জন শুনলাম, তার বেশি কিছু নয়। ঐক্যফ্রন্টের এই প্রথম সভা সম্পর্কে বলা হয়েছিল, এই সভা থেকে আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি ঘোষিত হবে। মানুষ বোধ হয় দল বেঁধেই এসেছিল সেই কর্মসূচি শোনার জন্য। তারা দুরুদুরু বক্ষে অপেক্ষা করেছে; কিন্তু সেই কর্মসূচি ঘোষিত হতে শোনা যায়নি।

অবস্থা দেখে আমার সাংবাদিক বন্ধু অজয় দাশগুপ্তের কাছে শোনা একটি গল্প মনে পড়ল। এক ব্যক্তি গ্রামের চায়ের দোকানে চা খেতে ঢুকেছেন তার ঘোড়াটি দোকানের বাইরে বেঁধে রেখে। চা পান শেষ করে বাইরে এসে দেখেন, তার ঘোড়াটি নেই। চোর নিয়ে গেছে। তিনি দোকানে ফিরে এসে তুমুল তর্জন-গর্জন শুরু করলেন- ‘অবিলম্বে ঘোড়া ফেরত না পেলে সবাইকে আমি দেখে নেব। গতবার ঘোড়া চুরি গেলে যা করেছিলাম, তাই করব।’ তার হুমকি শুনে দোকানের সবাই ভয়ে কম্পিত। ঘোড়ার মালিক রেগে গিয়ে কী না যেন করেন।

দোকানে বসে ঘোড়ার মালিক হম্বিতম্বি করতে লাগলেন। তিনি একটু শান্ত হতেই দোকানের আরেক খরিদ্দার ভয়ে ভয়ে তার কাছে এসে জিজ্ঞেস করলেন, গতবারও তো ঘোড়া হারিয়েছিলেন। তারপর কী করেছিলেন? ঘোড়ার মালিক নির্বিকার হয়ে বলেন, কেন, হেঁটে বাড়ি চলে গেছি। খরিদ্দারের ভয় তখনও যায়নি। জিজ্ঞেস করলেন, এবার আপনি কী করবেন? ঘোড়ার মালিক বললেন, ‘কী করব, সে কথা তো আগেই বলেছি। কেন, হেঁটে বাড়ি চলে যাব।’

সিলেটে বুধবারের জনসভায় ফ্রন্টের নেতাদের, বিশেষ করে তথাকথিত নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্নার হুমকি শুনে ওপরের গল্পটি আমার মনে পড়েছে। মান্না সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, ‘নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে অনতিবিলম্বে আমাদের সঙ্গে কথা বলুন। আমাদের দাবি মেনে নিন। যদি না মানেন, তাহলে ক্ষমতা থেকে কীভাবে নামাতে হয়, সে পথে আমরা হাঁটব।’ এই হুঙ্কারের পরও যদি সরকার তাদের দাবি না মানে, আলোচনায় বসা দূরের কথা, তাদের কোনো পাত্তা না দেয়, তাহলে কী হবে? আমার ধারণা, এরপর তারা ঘোড়ার মালিকের মতো পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরবেন। তারপর ড্রয়িং রুমের দরজা বন্ধ করে নতুন ষড়যন্ত্রের কথা ভাববেন।

সিলেটের জনসভায় আন্দোলনের বহু ঘোষিত কর্মসূচিটি দেওয়া হয়নি। কেবল ড. কামাল হোসেনের কণ্ঠে সেই পুরনো কথা আবার শোনা গেছে। এই পুরনো বহু চর্বিত-চর্বণটি কী? প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, ‘সিলেটের জনসভা থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আন্দোলনের জন্য সবাইকে তিনি প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন’- এই আহ্বান আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে গত ১০ বছরে বিএনপি, জামায়াত, সুশীল সমাজ এতবার আওড়িয়েছেন যে, এখন ড. কামাল হোসেনের কণ্ঠে সেই কথা শুনে দেশবাসীর উদ্দীপিত হওয়ার কোনো কারণ আছে কি? বরং জনসাধারণের পক্ষ থেকে তাকে বলা হতে পারে, আমরা না হয় আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিলাম, তখন আপনি আমাদের পাশে থাকবেন কি? না, অতীতের মতো হঠাৎ বিদেশে পাড়ি দেবেন? আপনার পাসপোর্ট-ভিসা তো সবসময় তৈরি থাকে।

এই ঐক্যফ্রন্টের সূচনা থেকেই তার ঘাড়ে শনিদেবতা চেপেছেন। ফলে এর ভবিষ্যৎ কী, সে সম্পর্কে অনেকেই সন্দেহ পোষণ করেন। এই ঐক্য প্রক্রিয়ার মূল উদ্যোক্তা ছিলেন প্রথমে ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও ড. কামাল হোসেন। দু’জনেরই দুটি নামসর্বস্ব দল আছে। বিকল্পধারা ও গণফোরাম। আরও ক’টি নামসর্বস্ব দল নিয়ে তারা ঐক্যফ্রন্ট এই মাথাভারি নামে জোট গঠনের কথা বলেছিলেন। বলা হয়েছিল, আওয়ামী লীগ জোট ও বিএনপি জোটের বাইরে এটা হবে তৃতীয় জোট। কিছুদিনের মধ্যে দেখা গেল ড. কামালের ঝোঁক বিএনপি জোটে যোগদানের দিকে। বিএনপি জোটের অর্থবল ও জনবল বেশি। এটা সত্য, সিলেটের জনসভায় বিএনপি-জামায়াতের লোকজন না এলে ড. কামাল ও তার দুই নন্দিভৃঙ্গি সহচরকে প্রায় শূন্য মাঠে বক্তৃতা দিতে হতো।

সে যাই হোক, ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী বিএনপির রাজনীতি করতে গিয়ে জামায়াত ও তারেকের হাতে অতীতে ছ্যাঁকা খেয়েছেন। তিনি জামায়াতের বন্ধু বিএনপির সঙ্গে জোট করতে রাজি হলেন না। তাতে জামায়াত ও তারেক রহমানের সুবিধা হলো। তারাও ডা. চৌধুরীকে চান না। চান জোটের শিখণ্ডী নেতা হিসেবে ড. কামাল হোসেনকে। তাহলে ফ্রন্টে বিএনপি ও তারেকের কর্তৃত্বই প্রতিষ্ঠিত হবে। সুতরাং শেষ পর্যন্ত ডা. চৌধুরী যাতে ফ্রন্টে না আসেন, সে জন্য ষড়যন্ত্র হলো। খবরে বলা হলো, এই ষড়যন্ত্রে সাহায্য জুগিয়েছেন ব্যারিস্টার মইনুল। তিনি ঐক্যফ্রন্টে অনাহূত অতিথি।

একেই বলে শনির দশা। ফ্রন্ট গঠিত না হতেই দুই শীর্ষ নেতার একজন ফ্রন্ট থেকে বিদায় নিলেন। তখন হারাধনের সেই বিখ্যাত ছড়াটি কারও মনে পড়েছে কি-না আমি জানি না।

‘হারাধনের চারটি ছেলে/নাচে তাধিন তাধিন/একটি ম’লো আছাড় খেয়ে/রইলো বাকি তিন।’

এই তিন ছেলে হলো- ড. কামাল হোসেন, আ স ম আবদুর রব এবং মাহমুদুর রহমান মান্না। নতুন জুটি এসে জুটলেন ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন।

তার আমলনামা ভালো নয়। মুখে অনবরত গণতন্ত্রের কথা বললেও এক-এগারোর আধা সামরিক সরকারে গিয়ে উপদেষ্টার চাকরি নিয়েছিলেন। তিনি যখন ওই সরকারের আইন উপদেষ্টা (মন্ত্রী), তখন মাইনাস টু থিওরি বাস্তবায়নের জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করেছিলেন। তার আমলেই শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করা হয়। রাজনীতি থেকে তাকে বিতাড়নের চেষ্টা হয়। তাকে মিথ্যা দুর্নীতির মামলায় জড়ানো হয়। তিনি চিকিৎসার জন্য প্যারোলে বিদেশে গেলে তাকে পলাতক আসামি হিসেবে দেখিয়ে তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করা হয়। তিনি যাতে বিদেশ থেকে দেশে ফিরতে না পারেন, সে জন্য এই এক-এগারোর আমলেই ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের ওপর চাপ সৃষ্টি করে হাসিনার দেশে ফেরার টিকিট বাতিল করানো হয়।

তার আপন ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে (বর্তমানে মন্ত্রী) যখন এক-এগারোয় সরকার বাড়িতে মদ রাখার মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে জেলে বন্দি করতে চেয়েছিল এবং মঞ্জু দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য হন, তখনও ব্যারিস্টার মইনুলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মুক্তিযুদ্ধকালে তার অবস্থান এবং এক-এগারোর সময় সেই সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা ইত্যাদি নানা কারণে তিনি যখন শুধু রাজনীতিতে নয়, সামাজিক জীবনেও প্রায় একঘরে, তখন স্বতঃস্ম্ফূর্তভাবে তার জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মঞ্চে এসে সহসা আরোহণ। অনেকের মনেই প্রশ্ন তুলেছিল, এটা কি তার নিজেকে রাজনৈতিক পুনর্বাসনের চেষ্টা, না অন্য কারও রাজনৈতিব স্বার্থ পূরণের কাজে সাহায্যদানে এগিয়ে আসা? ডা. বদরুদ্দোজার ঐক্যফ্রন্টে না আসার ব্যাপারে তার বহুল আলোচিত ভূমিকা বাজারে নানা ধরনের গুজব ছড়িয়েছে।

এটাকে ঐক্যফ্রন্টের যাত্রা শুরুতেই শনির বক্রদৃষ্টি ছাড়া আর কী বলব? একটা ব্যাপারে ড. কামালের সঙ্গে মইনুলের একটা চমৎকার মিল আছে। সেটা হলো দু’জনের হাসিনাবিদ্বেষ। এই অভিন্ন মনোভাবের জন্য ব্যারিস্টার মইনুল হয়তো ঐক্যফ্রন্টে ড. কামালের ডান হাত হয়ে উঠতে পারতেন; কিন্তু তার ওপরে রয়েছে আগের শনির কোপদৃষ্টি। তিনি এক নারী সাংবাদিক সম্পর্কে অসতর্কভাবে অশালীন মন্তব্য করে বিপাকে পড়েছেন। এমনকি জেলেও গেছেন। ইস্যুটি এমন যে, ঐক্যফ্রন্ট তাকে উদ্ধারের জন্য তেমনভাবে এগিয়ে আসতেও পারছে না।

অবশ্য টেলিভিশনের টক শোর আলোচনায় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে তিনি জামায়াতি কিনা প্রশ্ন করাটা যে একটা প্রভোকেশন, তাতে সন্দেহ নেই। তিনি একজন বিতর্কিত চরিত্রের মানুষ হতে পারেন; কিন্তু জামায়াতি নন। আমার বিস্ময় লেগেছে, ব্যারিস্টার মইনুল একজন বয়স্ক আইনজীবী এবং অভিজ্ঞ মানুষ হয়েও কী করে এই প্রভোকেশনে পা দিলেন? একজন নারী সাংবাদিকের সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য করলেন? বিধিবাম না হলে কি এই অবস্থা কারও ঘটে? এখন এ ব্যাপারে ঐক্যফ্রন্টও ভালোভাবে তার পাশে দাঁড়াতে পারছে না।

ঐক্যফ্রন্ট তার পাশে দাঁড়াবে কি? ব্যারিস্টার মইনুলের আরেকটি টেলিভিশনে বলা মন্তব্য ফাঁস হয়ে যাওয়ায় ঐক্যফ্রন্টই এখন বিব্রত। ডা. জাফরুল্লাহর সঙ্গে ব্যারিস্টার মইনুলের একটি টেলিফোন আলাপ সম্প্রতি ফাঁস হয়েছে। তাতে ব্যারিস্টার মইনুল বলেছেন, ‘আমরা তারেক রহমানকে নেতৃত্ব থেকে তাড়ানোর জন্য কামাল হোসেনকে ফ্রন্টের নেতৃত্বে এনেছি।’ এই উক্তি কামাল হোসেন, ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপির জন্যও বিব্রতকর। ড. কামাল হোসেন অবশ্যই জানেন (মুখে স্বীকার না করলেও) জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আসলে বিএনপি-জামায়াত জোটের নতুন খোলস এবং নেপথ্যে তারেক রহমানই জোটের আসল নেতা। তিনি শিখণ্ডী। এখন যদি বলা হয়, তাকে নেতৃত্বে আনা হয়েছে তারেককে নেতৃত্ব থেকে বিতাড়নের জন্য, তাহলে তারেক রহমান ভীত না হতে পারেন; কিন্তু সতর্ক হবেন এই ভেবে যে, মইনুল হোসেনের এই উক্তিতে বিএনপিতে তার নেতৃত্ববিরোধী যে অংশটি আছে, তারা উৎসাহিত ও সক্রিয় হতে পারে।

ফ্রন্টের নেতারা এই ভেবে শঙ্কিত হতে পারেন যে, মইনুল হোসেনের কথায় তারেক রহমানই যে ফ্রন্টের আসল নেতা, এই সত্যটি ফাঁস হয়ে গেছে। আর ড. কামাল নিজে এই ভেবে ভীত হবেন যে, তারেক রহমান এখন তাকে মিত্র না ভেবে শত্রুও ভাবতে পারেন এবং সময় হলেই ডা. বদরুদ্দোজার মতো ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্ব থেকে সরানোর ব্যবস্থা করতে পারেন। ড. কামাল আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন একজন আইনজীবী হতে পারেন। পশ্চিমা দেশগুলোর ‘খুবই’ পছন্দের মানুষ হতে পারেন; কিন্তু ষড়যন্ত্রের রাজনীতির খেলায় তিনি তারেক রহমানের কাছে শিশু।

সিলেটের সভায় এমন একটি ঘটনা ঘটেছে। যাতে প্রমাণ হয় ঐক্যফ্রন্ট অবশ্যই বিএনপি-জামায়াত জোটের নতুন চেহারা। বুধবারের এই সভায় উপস্থিত ছিলেন সিলেটের এমন একজন সাংবাদিক বন্ধু, যিনি আমাকে এই খবরটা জানিয়েছেন। সভা মঞ্চে মাইকের সামনে দাঁড়িয়ে ড. কামাল হোসেন তার নাতিদীর্ঘ বক্তৃতা দেওয়ার পর নিজের আসনে বসতে যাচ্ছিলেন, তখন তার দলের সুব্রত চৌধুরী তাকে কানে কানে কিছু বলেন। তিনি তড়াক করে লাফিয়ে মাইকের সামনে এসে বলেন, ‘আমরা জেলে বন্দি খালেদা জিয়ার অবিলম্বে মুক্তি দাবি করছি।’ ঐক্যফ্রন্ট গঠনের উদ্যোগ পর্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি তাদের দাবিনামায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে না (কারণ তিনি আদালতের বিচারে দণ্ডিত অপরাধী) বলে যে কামাল হোসেন দৃঢ় অভিমত ব্যক্ত করেছিলেন, এখন তিনি সেই দাবিতে মুখর। সিলেটের জনসভায় হয়তো দাবিটি তুলতে ভুলে গিয়েছিলেন। তাকে স্মরণ করিয়ে দিতেই মাইকের সামনে আবার দৌড়ে গেছেন (হায়, বঙ্গবন্ধুর এককালের আইনমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন)।

সিলেটের এই জনসভা সম্পর্কেও ঢাকার মিডিয়ায় যে খবর প্রকাশিত হয় তাতে বলা হয়েছে, ‘মঞ্চের পশ্চিম দিকে রেজিস্টারি ভবনে টানানো ছিল খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রায় বাতিলের দাবি সংবলিত অসংখ্য ডিজিটাল ব্যানার। এমনকি সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের বিরাট ছবি, সেই সঙ্গে নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী এবং সদ্য গ্রেফতারকৃত ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের ছবি। পাঠক, একবার চিন্তা করে দেখুন, ঐক্যফ্রন্টের নামে এটি বিএনপি-জামায়াত জোটের একটি সভা মঞ্চ কি-না। মঞ্চটি আলোকিত করে বসে আছেন বিএনপির অধিকাংশ শীর্ষ নেতা। মঞ্চের ডেকোরেশনে শুধু বিএনপি নেতাদের ছবি ও ডেকোরেশন। এমনকি দেশে সামরিক শাসনের প্রবর্তক জেনারেল জিয়াউর রহমানের ছবি। আর সেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে গণতন্ত্র উদ্ধারের দাবিতে বক্তৃতা করছেন বঙ্গবন্ধুর এককালের সহকর্মী, আইনমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ‘৭২-এর সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ড. কামাল হোসেন। এখন তার আসল পরিচয় কী এবং ঐক্যফ্রন্ট কাদের মঞ্চ, সে কথা আর লিখে প্রকাশ করার দরকার আছে কি?

ঐক্যফ্রন্টকে সূচনাতেই শনির দশায় ধরেছে। নইলে প্রথম জনসভাতেই তাদের আসল চেহারা এমনভাবে উন্মোচিত হয়! আমার সহৃদয় পাঠকরা, একটু অপেক্ষা করুন। এই সার্কাসের নকল বাঘদের খেলার পরিণতি কী ঘটে, তা শিগগিরই দেখতে পাবেন। আবারও বলি, ‘কামাল তুনে কামাল কিয়া ভাই।’



« (পূর্বের সংবাদ)



মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*