প্রাণের ৭১

অসহায় মানুষের বন্ধু চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসাইন মাষ্টার

মোহাম্মদ হাসানঃ সমাজের সুবিধা বঞ্চিত অবহেলিত, দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য নিজেকে উজাড় করে দেয়া শিক্ষানুরাগী, নিঃস্বার্থ সমাজ সেবক পরোপকারী জাহাঙ্গীর হোসাইন (মাষ্টার)। তিনি চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার ১১ নং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।

অসহায় মানুষের বন্ধু জাহাঙ্গীর হোসাইন উপজেলার মঘাদিয়া ইউনিয়নের শেখের তালুক গ্রামে জন্মগ্রহন তিনি। তার পিতার নাম মরহুম জহরুল হক। তিলে তিলে সংগ্রাম করে বেড়ে উঠা এ মানুষটি অসহায় ব্যক্তিদের জন্য নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। তিনি অজপাড়া গাঁয়ের সাধারণ পরিবারে জন্ম নিয়ে বিদেশে ব্যবসা করে শহরের অট্টালিকায় বসবাসের সুযোগ থাকলেও মিশে গেছেন যে মাটিতে বড় হয়েছেন সে গ্রামের সাধারণ মানুষের সাথে। আলোর কোন সীমানা নেই। অন্ধকার দুর করাটাই আলোর ধর্ম। তেমনি শিক্ষা বিস্তার ও সমাজ সেবায় ব্রত হয়ে নিজ কর্ম গুনে সমাজের নারী পুরুষ সব বয়সের মানুষের কাছে সমান প্রিয়। দলমত, জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সমাজের সকল মানুষের জন্য অবদান রেখে নিজেকে সব সময় জড়িয়ে রাখেন। একদিন অন্ধকার দুর হয়ে সমাজ আলোকিত হবে,সব মানুষ একসাথে হাসবে। সমাজের দরিদ্র অসহায় মানুষের জয় হবে এমনই স্বপ্ন এ গুনী মানুষটির। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে অসহায়, দরিদ্র, অবহেলীত মানুষ ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন । অসহায় মানুষরা ছুটে আসেন তার কাছে। দানের মাধ্যমে সমাজের মানুষের সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা সম্ভব নয়। এ কারণে শিক্ষা ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখে চলছেন তিনি। মনিষীদের বানী আমাকে একজন শিক্ষিত মা দাও আমি একটি শিক্ষিত জাতি দেবো। এ শিক্ষিত মা তৈরির জন্য ব্যক্তিগত তহবিল থেকে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দরিদ্র শিক্ষার্থীদের বাৎসরিক পড়া লিখার খরচ চালিয়ে আসছেন। প্রতিষ্ঠা করেছেন নোয়াপাড়া জামে মসজিদ, বদিউল্লাহপাড়া (শরিয়তপাড়া) ফোরকানীয়া মাদ্রাসা, বহদ্দারগ্রাম (ইছাখালী) ফোরকানীয়া মাদ্রাসা সহ একাধিক ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তিনি চট্টগ্রামস্থ মীরসরাই এসোশিয়েশনের পৃষ্টপোষক ও আজীবন সদস্য, বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ফেডারেশনের, চট্টগ্রাম নাবিক কল্যান সমিতির উপদেষ্ঠা সহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি।

২০১৫ সালে সমাজসেবা ও শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখায় “জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম সন্মাননা পদক” পেয়েছেন তিনি। পিছিয়ে পড়া অবহেলিত জনপদের অসচ্ছল,অসহায় জনগোষ্ঠীর কথা চিন্তা করে তাদের এগিয়ে নিতে ছোট ভাই মরহুম বেলায়েত হোসাইনের নামে প্রতিষ্ঠা করেন বেলায়েত হোসাইন ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন। ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা জাহাঙ্গীর হোসাইন মাষ্টার একক প্রচেষ্টায় মঘাদিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সহযোগীতা করে আসছেন। বেলায়েত হোসাইন ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন এর চলার পথ অনেক দুর লক্ষ একটাই দারিদ্রতা, যৌতুক ও মাদকের ছোবল থেকে মানুষকে মুক্তির পথ দেখানো এবং ঘরে ঘরে শিক্ষার আলো পৌছে দেওয়া। ফাউন্ডেশনের অধিনে এলাকার গরীব মেয়েদের বিয়েতে আর্থিক সহায়তা, মেধা বৃক্তির মাধ্যমে প্রতিভাবান গরিব ছাত্র- ছাত্রীদের লেখা পড়ার খরচ প্রদান, দুস্থদের আর্থিক সহায়তা ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দান অনুদানের মাধ্যমে এ ফাউন্ডেশন তাঁর লক্ষ পুরনে স্বনির্ভর সমাজ গঠনের জন্য অবদান রাখছে। আমাদের সমাজে যাদের অভাব অনটনের সংসার। একবেলা খেলে আরেক বেলা খাবার জুটেনা। এমন অসচ্ছল পরিবারের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে রয়েছে এ প্রতিষ্ঠান। তার কাছে গিয়ে কেউ কোনদিন খালি হাতে ফেরেনি। মঘাদিয়া ইউনিয়নের অনেক মসজিদে অনুদান দিয়েছেন তিনি। এছাড়া মক্তব, মাদ্রাসা, মন্দির, অসহায় মানুষের চিকিৎসা, গরীব মেয়ের বিয়েতে অনুদান দিচ্ছেন নিয়মিত।

মহামারি করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারিভাবে বার বার সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে নির্দেশনা দিলেও মীরসরাই উপজেলার বিভিন্ন বাজারে ব্যবসায়ী ও জনসাধারণ কিছুতেই তা মানছেনা। সর্বশেষ উপজেলার মানুষদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ রুহুল আমিন একটি নির্দেশনা জারি করেছেন।১৪ এপ্রিল পর্যন্ত জরুরী সেবা মূলক প্রতিষ্ঠান ছাড়া সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করা হয়।কিন্তু ব্যবসায়ীরা এই নির্দেশনা মানছেনা। আর সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে উপজেলার আবুতোরাব বাজারে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছিলেন ১১ নং মঘাদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসাইন মাষ্টার। নির্দেশনার বাইরে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যাতে খুলতে না পারে সেজন্য একটি চেয়ার নিয়ে বাজারের মধ্যে বসে অবস্থান নেয়। তার এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেকেই।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*