প্রাণের ৭১

আশা-আকাঙ্ক্ষার ঢাকা সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শনিবার

প্রায় পাঁচ বছর পর শনিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আশা-আকাঙ্ক্ষার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ।

এদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত কোনোরকম বিরতি ছাড়াই এই ভোটগ্রহণ চলবে। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। এরইমধ্যে ভোটকেন্দ্রগুলোতে পৌঁছে গেছে নির্বাচনী সরঞ্জাম।

এর আগে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা। নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী, ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার ৩২ ঘণ্টা আগে প্রার্থীদের প্রচারণা শেষ করতে হয়।

এদিকে প্রথমবারের মতো ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে এবার ব্যালট পেপারের পরিবর্তে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

ইতিমধ্যেই রাজধানীর বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রগুলোতে নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ইভিএম নিয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। দুই সিটিতে ভোটগ্রহণের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে মোট ২৮ হাজার ৮৬৮টি ইভিএম মেশিন।

ইভিএম এর নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে দুজন করে সেনাবাহিনীর সদস্য থাকবেন।

এদিকে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে নির্বিঘ্ন করতে বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানীতে ৭৫ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাচনের আগে রাজধানীতে মোটরসাইকেল চলাচলে ৫৪ ঘণ্টার নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইসি। এই নিষেধাজ্ঞা বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত বহাল থাকবে।

এছাড়া মোটরচালিত যানবাহন চলাচলও ১৮ ঘণ্টার জন্য সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। তবে এটি শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে নির্বাচনী এলাকাসমূহে কার্যকর হবে।

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে ভোটগ্রহণের দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

গত ২২ ডিসেম্বর ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা। কিন্তু ৩০ জানুয়ারি সরস্বতী পূজার দিনে ঢাকা সিটি নির্বাচনের তারিখ দেয়ায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

এর প্রেক্ষিতে গত ১৮ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন পিছিয়ে ৩০ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করে ইসি, যাতে নির্বিঘ্নে সরস্বতী পূজা উদযাপন করতে পারেন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ।

দুই সিটিতে মেয়র পদে লড়ছেন ১৩ জন প্রার্থী। এরমধ্যে উত্তরে ছয়জন এবং দক্ষিণে সাতজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। আর বিএনপির মেয়রপ্রার্থী হিসেবে লড়বেন ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক হোসেন।

অপরদিকে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী হিসেবে লড়ছেন মো. আতিকুল ইসলাম এবং বিএনপির মেয়রপ্রার্থী হিসেবে লড়বেন তাবিথ আউয়াল।

এবারের সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীদের মধ্যেই মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সকাল ৮টার দিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে ধানমন্ডির ঢাকা সিটি কলেজ কেন্দ্রে তার ভোট দেবেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সেক্রেটারি ইহসানুল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে ঢাকা দক্ষিণে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস ধানমন্ডির ড. মালেকা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ভোট দেবেন। দলের উত্তরের মেয়রপ্রার্থী আতিকুল ইসলাম উত্তরা মডেল টাউন এলাকার নওয়াব হাবিবুল্লাহ স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভোট দেবেন।

বিএনপির ঢাকা দক্ষিণের মেয়রপ্রার্থী ইশরাক হোসেন গোপীবাগ এলাকার শহীদ শাহজাহান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেবন। অন্যদিকে দলের উত্তরের মেয়রপ্রার্থী তাবিথ আউয়াল গুলশানের মানারাত ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোট প্রদান করবেন।

দুই সিটির প্রায় ৫.৪৫ মিলিয়ন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ পাবেন। এই দুই সিটিতে সর্বশেষ ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ভোট অনুষ্ঠিত হয়।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*