প্রাণের ৭১

'এই মানুষরাই হলেন ভারতের আসল মুখ', বলছেন নেটিজেনরা।

উন্মত্ত জনতার থেকে ৮০ জন মুসলিমকে বাঁচানোর পুরস্কার, নায়কের সম্মান পাচ্ছেন দিল্লির মহিন্দর

উত্তর-পূ্র্ব দিল্লিতে গত কয়েকদিন ধরে চলা সাম্প্রদায়িক অশান্তির জেরে এখনও পর্যন্ত ৪৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। জখম হয়েছেন আরও ৩০০ জনের মানুষ। পরিস্থিতি এতটাই ভয়ানক হয়ে গিয়েছে যে বছরের পর বছর একসঙ্গে থাকা প্রতিবেশীরাও একে অপরের দিকে সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকাচ্ছেন। এই অবস্থায় শান্তি বজায় রাখার জন্য সবরকম চেষ্টা চালাচ্ছে প্রশাসন ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি। অশান্তির এই আবহাওয়ার মধ্যে অনেক ঘটনা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজিরও রাখছে। এমনই একটি ঘটনার কথা শোনা গেল উত্তর-পূর্ব দিল্লির গোকুলপুরীর বাসিন্দাদের মুখে। সেখানকার এক বাসিন্দা মহিন্দর ও তাঁর ছেলে ইন্দ্রজিৎ সিং প্রায় ৮০ জন মুসলিম প্রতিবেশীর প্রাণ বাঁচিয়ে তাঁদের নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দিলেন। বিষয়টি শোনার পরেই সবাই প্রশংসা করছে তাঁদের। এলাকায় রীতিমতো নায়কের সম্মান পাচ্ছেন তাঁরা।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গোকুলপুরী এলাকার বাসিন্দা ৫৩ বছর বয়সী মহিন্দরের বাড়ির কাছে একটি ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্রের দোকান আছে। তার থেকে রোজগার হওয়া অর্থের মাধ্যমেই স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে জীবনযাপন করেন মহিন্দর। গত ২৪ তারিখ অশান্তির আগুন ছড়িয়ে পড়ে গোলকপুরী এলাকায়। হিন্দু অধ্যুষিত ওই এলাকায় বসবাসকারী মুসলিমদের বাড়িতে অজ্ঞাত পরিচয়ের দুষ্কৃতীরা হামলা চালাচ্ছে বলে খবর পান মহিন্দর। সঙ্গে সঙ্গে ছেলে ইন্দ্রজিৎকে ডেকে নিয়ে স্থানীয় মুসলিমদের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে যান। তারপর ছেলের বুলেট মোটরসাইকেল ও নিজের স্কুটিতে করে ৬০ থেকে ৮০ জন মুসলিম প্রতিবেশীকে গোকুলপুরী থেকে এক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা করদমপুর (Kardampur)-র নিরাপদ আশ্রয়ে ছেড়ে দিয়ে আসেন।

 

 

 

 

 

এপ্রসঙ্গে মহিন্দর বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি দেখে ১৯৮৪ সালে দিল্লিতে হওয়া শিখ নিধন যজ্ঞের কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল আমার। তাই হিন্দু বা মুসলিম কিছু দেখেনি। আমার চোখে শুধু মানুষ ভাসছিল। শুধু ছোট ছোট শিশুর মুখ চোখে পড়ছিল। এই সব দেখে আমার মনে হয়, এরা সবাই আমার সন্তান। এদের কোনও ক্ষতি হতে দেব না আমি। মানবিকতার তাগিদেই প্রয়োজনের সময় তাদের সাহায্য করেছি আমরা। এছাড়া আর কী বা বলতে পারি?’






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*