প্রাণের ৭১

দ্বিগুণ খাদ্য উৎপাদনে কৃষকদের সব সহযোগিতা দিচ্ছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী

মোহাম্মদ হাসানঃ খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে সরকার কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের দেশে উৎপাদন যাতে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ হতে পারে তার জন্য যথাযথ মাটি পরীক্ষা করা থেকে শুরু করে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি।

কৃষকলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ১৯ এপ্রিল সোমবার রাতে দেওয়া এক ভাষণে একথা বলেন তিনি।

সরকারের পক্ষ থেকে কৃষকদের দেওয়া বিভিন্ন সহযোগিতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্গাচাষিরা যাতে বিনা জামানতে ঋণ পায় আমরা কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে তাদের সে ব্যবস্থা করে দিয়েছি। সারের দাম যা বিএনপি সরকারের আমলে ৯০ টাকা ছিল, তা আজ ১২ টাকায় নামিয়ে এনেছি।

গবেষণার মাধ্যমে উন্নত বীজ আমরা উৎপাদন করছি এবং সেই বীজ সরবরাহ করছি।
তিনি বলেন, একই সঙ্গে আমরা কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ- যেটা জাতির পিতার লক্ষ্য ছিল, আমরা সেই লক্ষ্য কার্যকর করে দিচ্ছি।

সেখানে আমরা ৭০ শতাংশের উপর ভর্তুকি দিচ্ছি এবং কৃষি-যান্ত্রিকীকরণ করে যাচ্ছি যাতে আমাদের কৃষকরা আরও অধিক পরিমাণ খাদ্য উৎপাদন করতে পারে। যান্ত্রিকীকরণের জন্য হারভেস্টার থেকে শুরু করে সব ধরনের যন্ত্র আমরা ধীরে ধীরে কৃষকের হাতে পৌঁছে দেবো।
‘আমরা উন্নতমানের বীজ সরবরাহ, প্রতিটি কৃষি-উপকরণ কৃষকদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা নিচ্ছি। সেচ কাজে কৃষক যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন সেখানে আমরা ভর্তুকি দিচ্ছি এবং কৃষকের বিদ্যুৎ সরবরাহ যাতে নিশ্চিত হয় তার ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। বর্তমানে সেচ কাজে আমরা সোলার-প্যানেল ব্যাবহারও শুরু করেছি। ’

সরকারপ্রধান বলেন, আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। কৃষক একটা মোবাইল ফোন ধরে ছবি তুলে তার ফসলের কী অবস্থা, মাটির কী অবস্থা বা মাটি পরীক্ষা করা এবং কী ধরনের সার ব্যবহার করবেন, কতটুকু ব্যবহার করবেন বা কীটনাশক ব্যবহার করবেন কিনা বা কতটুকু করবেন সব পরিমাণ পেতে পারে সেই ধরনের কৃষিতথ্য যাতে তারা পেতে পারেন সে তথ্যকেন্দ্রসমৃদ্ধ বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলেছি। সেখান থেকে কৃষক তার প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন। কারণ আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর মোবাইল ফোনও আমরা সবার হাতে হাতে তুলে দিয়েছি।

খাদ্য উৎপাাদন বাড়াতে সরকার গবেষণার ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি গবেষণার উপর। ১৯৯৬ সালে যখন সরকার গঠন করি, তখন থেকেই কৃষি গবেষণায় আমরা গুরুত্ব দেই। আজ গবেষণার ফলে আরও নতুন নতুন ধরনের ফসল উৎপাদন, তরি-তরকারি, ফল-মূল এবং দানাদার খাদ্যশষ্য থেকে শুরু করে সব ধরনের পণ্য যেন উৎপাদন হতে পারে তার জন্য ব্যাপকহারে গবেষণা হচ্ছে এবং উন্নতমানের বীজ আমরা সরবরাহ করছি।

‘ফলে আজ কৃষক খুব অল্প কষ্টে অধিক পরিমাণে খাদ্য উৎপাদন করতে পারছেন, ধান উৎপাদন করতে পারছেন, গম করছেন, ভুট্টা করছেন এবং সব ধরনের ফসল উৎপাদন করার সুযোগ পাচ্ছেন এবং তা বাজারজাত করার ব্যবস্থাও আমরা করে দিচ্ছি। ’

কৃষকদের ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিশ্চিত করতে সরকার সহায়তা করছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ন্যায্যমূল্য যাতে আমাদের কৃষকরা পায়, তার জন্য যথাযথ আমরা দাম নির্দিষ্ট করছি এবং কৃষকদের সহায়তা দিচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষকের গুদামে যাতে খাদ্য সংরক্ষিত থাকে, প্রত্যেক কৃষকের ঘরে খাদ্য যেন থাকে। কারণ যারা উৎপাদন করবে তারা খাবার পাবে না বা তাদের ছেলে-মেয়েরা খাদ্যে কষ্ট পাবে এটা হতে পারে না। আমরা সে ব্যবস্থাটাও সঙ্গে সঙ্গে হাতে নিয়েছি।

প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তার বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে যে সব কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি এবং আমরা সেই সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। এবারেও যেমন ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক তারাও সে ধরনের সহযোগিতা পাবেন- তার জন্য একটা থোক বরাদ্দ আমরা রেখে দিচ্ছি।

সরকারপ্রধান বলেন, আমরা চাচ্ছি আমাদের দেশের কৃষিটাকে আমরা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি এবং কৃষিভত্তিক অর্থনীতি আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাবে। কৃষি অর্থনীতির সঙ্গে সঙ্গে আমরা শিল্পের দিকেও বিশেষ নজর দিয়েছি। কারণ উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার ব্যবস্থা এবং দেশে-বিদেশে পণ্য যেন আমরা রপ্তানি করতে পারি তার ব্যবস্থা করে কৃষককে সব ধরনের সহযোগিতা আমরা দিয়ে যাচ্ছি।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*