প্রাণের ৭১

বাংলাদেশে হিন্দু মারলে, মন্দির ভাঙলে, মন্দির পোড়াইলে, পূর্নিমারা গণধর্ষণের শিকার হইলে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদুতরে ডাইকা নিয়া ভারত সরকার হুমকি দেয় না- অমি রহমান পিয়াল

অমি রহমান পিয়াল এর ফেসবুক থেকে নেওয়াঃ-

নরেন্দ্র মোদীর বিজেপি যখন ক্ষমতায় আসলো, বাংলাদেশের একটা মহলে তখন ঈদের আনন্দ। বিএনপি জামাতপন্থী এই অংশটার কেনো যেন মনে হইছিলো মোদী ক্ষমতায় আসলে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হবে। তারা আবার ক্ষমতায় ফিরবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয় নাই। উগ্র সাম্প্রদায়িক, গুজরাট দাঙ্গার রূপকার মোদীর যতই ক্ষমতা থাকুক, রাষ্ট্রের বিদেশনীতি কিংবা ফরেন পলিসি বদলানোর ক্ষমতা তার নাই। এইটা কোনো রাষ্ট্রনায়কেরই থাকে না। যদি থাকতো খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আইসাই ইন্ডিয়ার লগে যুদ্ধ ঘোষনা করতেন। যেসব জমি শেখ হাসিনা ভারতের কাছে বিক্রি কইরা দিছেন বইলা এতদিন অভিযোগ করছেন, সেগুলা উদ্ধার করতেন। তা করেন নাই। বরং সারাদিন ইন্ডিয়ারে গালি দিয়াও ক্ষমতার জন্য দিল্লীতে গিয়া দেখা কইরা আসছেন। মোদীরে নিশ্চয়তা দিয়া বলছেন তিনি এবং তার দল বিএনপি ভারতের শত্রু না, বন্ধু মানুষ। বাংলাদেশের ফরেন পলিসি তারা বদলাবেন না, বরং মেনে চলবেন।

 

এই ফরেন পলিসিই ঠিক কইরা দেয় দুইটা রাষ্ট্রের সম্পর্ক। বাংলাদেশরে যেমন ইন্ডিয়ার লাগে, ইন্ডিয়ারও তেমনি বাংলাদেশের লাগে। এই কারণে দুই দেশের আভ্যন্তরীন বিষয় নিয়া কেউ নাক গলায় না। বাংলাদেশে হিন্দু মারলে, মন্দির ভাঙলে, মন্দির পোড়াইলে, পূর্নিমারা গণধর্ষণের শিকার হইলে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদুতরে ডাইকা নিয়া ভারত সরকার হুমকি দেয় না। বলে না এইসব থামাও নাইলে তোমাগো খবর আছে। তেমনি ভারতের ভিতরের বিষয় আমাদের ব্যাপার না। এনআরসি নিয়া যা হইতেছে এইটা ভারতীয়রা দেখবে। তারা প্রতিবাদ করবে, তারা আন্দোলন করবে, এবং হ্যাডম থাকলে মোদীরে থামায়া জনতার বিজয় ঘটায়া দেখাবে। জগতের যাবতীয় মুসলমান উদ্ধারের দায় আমরা নিই নাই। এক রোহিঙ্গাগো নিয়াই ব্যাপক পস্তাইতেছি। তখন যারা রোহিঙ্গাদের কেনো সরকার ঢুকতে দিতেছে না বইলা চিক্কুর পারছে, এখন তারাই মিডিয়াতে কয় এইটা ভুল হইছে।

 

কাশ্মির ভারত-পাকিস্তানের বিষয়। উহান চীনের আভ্যন্তরীন ব্যাপার। গাজা পালেস্টাইন ইসরায়েলের ব্যাপার। আমরা চিল্লায়া মার্কেট পাওনা যাইবো না। বেলুচিস্তানে হাজার হাজার মুসলমান মারতেছে পাকিস্তান। ইয়েমেনে লাখ লাখ শিশু অনাহারে মারা গেছে সৌদি আরবের কারণে। আফগানিস্তানে বোমা মাইরা মুসলমানরাই মারতেছে মুসলমানদের। আমরা বড়জোর প্রতিবাদ করতে পারি। সেই প্রতিবাদ হবে ধর্মের নিরিখে না, মানবতার দাবিতে। মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের প্রতিবাদ। হাজার হাজার মুসলমান মারার পরও এখন ইসরায়েলরে বুকে টাইনা নিছে সৌদি আরব। এইটা পিরিতের কারণে নেয় নাই। পরিবর্তিত ফরেন পলিসির কারণে নিছে। মধ্যপ্রাচ্যে তাদের বিনিয়োগের আহবান জানাইছে কাতার কুয়েতের শেখরা। ফায়দার কারণেই।

 

তো ভারতে মুসলমানদের উপর নিপীড়নের প্রতিবাদ আমরা করতেই পারি। শুধু মুসলমান কেনো, শাসনযন্ত্রের অত্যাচারের শিকার প্রতিটা মানুষের পক্ষেই আমরা দাড়াইতে পারি। কিন্তু সেইটা নিজের দেশে রক্ত গঙ্গা বইয়ে দেয়ার হুমকি দিয়া না। ভারতে একটা মসজিদ ভাঙার বদলে আমরা দশটা মন্দির ভাঙতে পারি, ১ জন মুসলমান মারার বদলা নিতে ১০০ হিন্দু মারতে পারি। তাতে মোদীর কি বালটা যাবে আসবে? বরং প্রমাণ হবে কয়েক পুরুষ ধর্ম বদলায়া মুসলমান হইলেও আমরা তলে তলে মোদীর মতোই সাম্প্রদায়িক দুচির ভাই রইয়া গেছি।

 

সবশেষে থাকে মুজিব বর্ষের অনুষ্ঠানে মোদীর দাওয়াতে আসা। এইটা অনেক আগেই নির্ধারিত। ভারতের সরকারপ্রধান অন্য যে কোনো হরিদাস পাল থাকলেও এই দাওয়াত পাইতো। সেটা ব্যক্তি মোদী পায় নাই, তার চেয়ারটা পাইছে। বাংলাদেশের অস্তিত্বকালের বন্ধু ভারত, মোদী না। বিষয়টা যদি অনুধাবন করতে পারি, অনেক পাকনামি কথাবার্তা বন্ধ হয়ে যাবে। শেখ হাসিনারে বাংলাদেশের ফরেন পলিসি শিখানোর মতো পন্ডিতি না করাই ভালো…

@Omi rahaman pial

মূল পোস্টঃ

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=10157931682113363&id=515328362

 






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*