প্রাণের ৭১

আমরা কি ইংল্যান্ডের শতবর্ষি যুদ্ধ থেকে শিক্ষা নেব?আবদুল গাফফার চৌধুরী।।

গত শনিবার ৩ নভেম্বর জেলহত্যা দিবসে পূর্ব লন্ডনে আওয়ামী লীগ কর্তৃক আয়োজিত এক স্মরণসভায় যোগ দিতে গিয়েছিলাম। অনেকেই শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম, শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান ও শহীদ এম মনসুর আলী সম্পর্কে আলোচনা এবং স্বাধীনতাযুদ্ধের এই চার শীর্ষ নেতার স্মৃতিচারণা করলেন। এই চার নেতার সঙ্গেই আমার পরিচয় এবং ঘনিষ্ঠতা ছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় মুজিবনগরে তাঁদের ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে ছিলাম।

স্বাধীনতার পর যখন তাঁরা চারজনই বঙ্গবন্ধু সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী, তখনো তাঁদের ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। ১৯৭৫ সালে অসুস্থ স্ত্রীর চিকিৎসা উপলক্ষে আমি যখন বিলেতে, তখন জুন মাসে একবার ঢাকায় গিয়েছিলাম। তখন ঢাকায় অনেক নাটকীয় ঘটনা ঘটে গেছে। তাজউদ্দীন মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর মধ্যে মতান্তর ঘটেছে জানা গেল। মন্ত্রিসভায় তাজউদ্দীন সমর্থকদের অনেকেই নেই। যেমন বেগম নূরজাহান মোর্শেদ, শামসুল হক এবং আরো কয়েকজন। তাঁদের বদলে তাহের উদ্দীন ঠাকুর, কে এম ওবায়দুর রহমান, ড. মোজাফ্ফর আহমদ চৌধুরী প্রমুখ মোশতাক-সমর্থকরা মন্ত্রিসভায় আসন শক্ত করে বসেছেন।

আমি মনে করতাম, মাও জে দংয়ের যেমন চৌ এন লাই, তেমনি বঙ্গবন্ধুরও রয়েছেন তাজউদ্দীন আহমদ। তাঁদের মধ্যে সামান্য মনান্তর হতে পারে, বিচ্ছিন্নতা অসম্ভব। কিন্তু ইতিহাসে আমার ধারণার সমর্থন নেই। যেমন লেনিনের অন্ধ সমর্থক ছিলেন স্তালিন। কিন্তু লেনিন অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী হলে অসহায় হয়ে দেখতে পান, স্তালিন ক্ষমতায় সর্বেসর্বা হয়ে লেনিনের কোনো নির্দেশই মেনে চলছেন না। কামাল আতাতুর্কের ডান হাত ছিলেন আনোয়ার পাশা। পরে তাঁর কপালে দুর্ভোগের কথা এখন ইতিহাস।

এ রকম ইতিহাস আরো আছে। বঙ্গবন্ধু ও তাজউদ্দীনের মধ্যেও অনুরূপ কোনো ঘটনা ঘটেছে কি না তা জানতে উত্সুক হলাম। মনে আছে, ১৯৭৫ সালের জুন মাসের এক বিকেলে তাজউদ্দীন ভাইয়ের বাসায় গিয়েছিলাম। তিনি তখন মন্ত্রী হিসেবে পাওয়া সরকারি বাসা থেকে ঢাকায় তাঁর নিজের বাসায় ফিরে গেছেন। ওই বাসায় দেয়ালের কাছে তিনি একটি আমগাছ পুঁতেছিলেন। তাতে চমৎকার আম ফলত। জনান্তিকে বলে রাখি, ওই আমগাছটি এখনো আছে।

১৯৭৫ সালের জুন মাসে আবার ফিরে যাই। তিনি বিকেলে বাড়ির দোতলায় লাউঞ্জে বসে চা খাচ্ছিলেন। আমাকে দেখে বললেন, বিলেত থেকে ফিরেছেন শুনেছি। কিন্তু বড় দেরিতে এলেন? বিস্মিত হয়ে বলেছিলাম, এমন কথা কেন বলছেন? তিনি বললেন, এবার আমার আমগাছে আম তেমন ধরেনি। যা ধরেছিল তা-ও শেষ হয়ে গেছে। আপনি আসবেন জানলে রেখে দিতাম। ইতিমধ্যে জোহরা ভাবি চায়ের কাপ হাতে এলেন। বললেন, আমের বদলে আমার হাতের চা খান।

তাঁকে সালাম জানিয়ে বলেছি, ভাবি, আজ আম খেতে আসিনি। এসেছি তাজউদ্দীন ভাইকে দেখতে। তাঁর পরবর্তী রাজনৈতিক কর্মপন্থা কী তা জানতে। তাজউদ্দীন ভাই বলে উঠলেন, আমার কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নেই। আমি এখন বিশ্রামে আছি। লক্ষ করছি, নতুন যে যুদ্ধ ঘনিয়ে আসছে, বঙ্গবন্ধু তা কী করে সামলান? আমি বলেছি, এত বড় একটা মুক্তিযুদ্ধের পর আপনি আরেকটা যুদ্ধের আশঙ্কা করছেন?

তাজউদ্দীন সে কথার কোনো জবাব না দিয়ে বললেন, আপনি কি স্কুলে কিংবা কলেজে ব্রিটিশ হিস্ট্রির ছাত্র ছিলেন? বলেছি, আমি ১৯৫০ সালে ম্যাট্রিক পাস করেছি। ওই বছর পর্যন্ত ব্রিটিশ হিস্ট্রি আমাদের পাঠ্য ছিল। পরে ব্রিটিশ হিস্ট্রি পাল্টে ইসলামিক হিস্ট্রি পাঠ্য হয়। তা ছাড়া কলেজেও আমার পাঠ্য ছিল ইউরোপের এনসিয়েন্ট অ্যান্ড মডার্ন হিস্ট্রি। তাজউদ্দীন হেসে বলেছিলেন, তাহলে আপনি তো প্রাচীন ইংল্যান্ডের শতবর্ষব্যাপী যুদ্ধের ইতিহাস পড়েছেন। মাঝেমধ্যে বন্ধ হয়ে আবার তা শুরু হতো।

তাজউদ্দীন ভাইয়ের কথা আমি প্রথমে বুঝতে পারিনি। ইংল্যান্ডের শতবর্ষব্যাপী যুদ্ধের সঙ্গে বাংলাদেশের তখনকার মুক্তিযুদ্ধের সম্পর্কটা কী? আমি কিছু জানতে চাওয়ার আগেই তাজউদ্দীন ভাই বললেন, আপনারা হয়তো মনে করেন, ’৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর শেষ হয়ে গেছে। আসলে তা হয়নি। পাকিস্তানি হানাদাররা যুদ্ধে পরাস্ত হয়েছে এবং আত্মসমর্পণ করেছে। কিন্তু দেশের আসল শত্রু মুক্তিযুদ্ধ ও তার আদর্শের শত্রুরা আত্মসমর্পণ করেনি। তারা আত্মগোপন করেছে। মসজিদ-মাদরাসায় আশ্রয় নিয়েছে। ধর্মের প্রচারক সেজে জনসাধারণের মধ্যে আশ্রয় নিয়েছে। বিদেশের মিত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। যেকোনো সুযোগে তারা আবার মাথা তুলবে। এবার আরো শক্তভাবে আঘাত হানবে।

আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, এই আঘাত প্রতিহত করার কি কোনো উপায় নেই? এবারও তিনি আমার কথার কোনো জবাব দেননি। হঠাৎ বলেছেন, গাফ্ফার, আপনি জানেন কি, ইংরেজিতে একটি বহুল প্রচলিত প্রবাদ আছে, ‘বিপ্লব প্রথমেই তার সন্তানদের ভক্ষণ করে।’ বাংলাদেশে এই প্রবাদটি সত্য হয়ে উঠতে পারে। তাহলে আমরা কেউ রক্ষা পাব না। দীর্ঘকাল রক্তক্ষয় হবে। এই রক্তপাতের মধ্য দিয়ে আমাদের উত্তরসূরিদের যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে। ইংল্যান্ডের মতো সেই যুদ্ধ শতবর্ষব্যাপী হতে পারে।

আমি বলেছি, তাহলে আপনি সব অভিমান ভুলে বঙ্গবন্ধুর পাশে গিয়ে দাঁড়ান না কেন? তাজউদ্দীন বলেছেন, বঙ্গবন্ধু যখন যুদ্ধে অনুপস্থিত এবং পাকিস্তানের জেলে বন্দি, তখন তাঁর প্রতিনিধি হয়ে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করেছি। এখন তিনি মুক্ত এবং স্বয়ং যুদ্ধের মাঠে উপস্থিত। তাঁকেই এই যুদ্ধে নেতৃত্ব দিতে হবে, সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমাদের কথা তিনি শুনবেন কেন?

সেদিন তাজউদ্দীন আহমদের বাসায় ঘণ্টা দুয়েক ছিলাম। আমার সঙ্গে ছিলেন এক তরুণ বন্ধু আজিজুল ওহাব। তিনিও বাংলাদেশের এক খ্যাতিমান প্রয়াত সাংবাদিকের ছেলে। তাঁর বাবার নাম আবদুল ওহাব। সেদিন তাজউদ্দীন ভাইয়ের কথাবার্তা শুনে মনে হয়েছিল, দেশে যে একটি ভয়াবহ প্রতিবিপ্লবী চক্রান্ত দানা বাঁধছে, তা তিনি বুঝতে পারছেন এবং এটাও বুঝতে পারছেন, বঙ্গবন্ধুর চারপাশে গিয়েও চক্রান্তকারীদের কেউ কেউ আস্তানা গেড়েছে। বঙ্গবন্ধুকে সাবধান করার কেউ নেই। কিন্তু তাজউদ্দীন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না।

বঙ্গবন্ধু হত্যা এবং জেলে জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর ৪৩ বছর কেটে গেছে। এই চার দশকের বেশি সময় বাংলাদেশ কি শান্তি ও সুখের মুখ দেখেছে? এত যে গণতন্ত্রের জন্য চিৎকার, তার পূর্ণ রূপায়ণ ঘটেছে? না, এই চার দশক ধরে আমরা দেখেছি, হত্যা, ষড়যন্ত্র, দলতন্ত্র ও সাময়িক বিরতিতে গণতন্ত্র। ঠিক প্রাচীন ইংল্যান্ডের শতবর্ষব্যাপী যুদ্ধের মতো। সাময়িক বিরতি। তার পরই আবার যুদ্ধের শুরু। বাংলাদেশে এই যুদ্ধে মাঝেমধ্যে জনতার জয় হয়। তাদের প্রতিনিধিত্বমূলক দল ক্ষমতায় বসে। দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের ধারা শুরু হয়। যেমন হয়েছে শেখ হাসিনার গত দুই মেয়াদে শাসনক্ষমতায় থাকার সময়। এখন ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবার সেই যুদ্ধ শুরুর পাঁয়তারা শুরু হয়েছে। বর্তমান সরকারকে নির্বাচনে হারিয়ে নয়, তার আগেই আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে নামিয়ে এনে বিচার ও কঠোর শাস্তি দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।

অবশ্য প্রতিবিপ্লবী জোট ঘোষণা অনুযায়ী যুদ্ধে নামেনি। সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে সংলাপে বসেছে। প্রথম দফা সংলাপের পর এখন দ্বিতীয় দফা সংলাপে বসতে যাচ্ছে। তবে তলে তলে চক্রান্ত অব্যাহত রাখা হয়েছে। শক্তি অর্জন করতে পারলেই তারা যুদ্ধে অবতীর্ণ হবে। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর নভেম্বরের জেলহত্যা, জিয়াউর রহমানের ক্ষমতা দখলের পর ৩৮টি ক্যু সংঘটন, জেলে আটক মুক্তিযোদ্ধা সেনা সদস্যদের হত্যা, কর্নেল তাহের (অব.) হত্যা। তারপর জিয়াউর রহমান নিজেই তাঁর চক্রান্তের রাজনীতির শিকার হলেন। চাটগাঁর সার্কিট হাউসে নিজের সেনা সদস্যদের হাতেই নিহত হলেন।

জিয়াউর রহমানের পর ক্ষমতায় এলেন কবি ও জেনারেল এরশাদ। তাঁর আমলেও শান্তি এলো না। ক্ষমতা ও জনতার লড়াই অব্যাহত রইল। তিনি গণ-আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছাড়লেন। এবার নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এলো বিএনপি। গণতন্ত্রের বদলে প্রতিষ্ঠিত হলো দলতন্ত্র। তৈরি হলো শোষণ ও দুর্নীতির দুর্গ হাওয়া ভবন। গণতন্ত্রের ছদ্মাবরণে চলল একাত্তরের অসমাপ্ত মুক্তিযুদ্ধ। মার্কিন সাংবাদিক লরেন্স লিপসুজ এই নামটি দিয়েছেন। তিনি তাঁর ‘আনফিনিশড রেভল্যুশন’ বইতে দেখিয়েছেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ শেষ হয়নি। তা অসমাপ্ত রয়েছে এবং এখনো চলছে। এই যুদ্ধের একদিকে মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক শক্তি, অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী চক্রসমূহ। এই যুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে অনুপস্থিত শুধু পাকিস্তান। তারাও একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে নিয়ত চক্রান্তে ব্যস্ত।

পিতার মৃত্যু এবং বিদেশ থেকে দেশে ফেরার পর শেখ হাসিনার লড়াইটা ছিল শুধু গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা নয়, স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারও। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরে আসে মূলত শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। তত দিনে স্বাধীনতার মূল স্তম্ভগুলো ভেঙে ফেলা হয়েছে। এমনকি সংবিধান পর্যন্ত কর্তিত। প্রশাসনে আমলাদের দাপট। একাত্তরের পরাজিত শক্তি মোটেই পরাজিত নয়। তারা সংঘবদ্ধ এবং হিংস্র মৌলবাদীদের কবলে গোটা জাতি পণবন্দি। এই অবস্থায় আওয়ামী লীগকে দুটি দায়িত্ব গ্রহণ করতে হয়েছে। একটি একাত্তরের অসমাপ্ত যুদ্ধের মোকাবেলা করা এবং অন্যটি গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিকতা দান করা।

একাত্তরের যুদ্ধের মতোই এই যুদ্ধ ভয়াবহ। ষড়যন্ত্র, হত্যা, সামরিক ক্যু, এমনকি তাঁর জীবনের ওপর হামলা উপেক্ষা করে শেখ হাসিনাকে এগোতে হয়েছে। গণতন্ত্রকে জিয়া-এরশাদ-খালেদা জমানার লেগাসি থেকে মুক্ত করে পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য কখনো এক কদম এগোনোর জন্য দুই কদম পেছাতে হয়েছে। আর রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জনের ধীরগতির মধ্যে তাঁকে অর্থনৈতিক উন্নয়নে অভাবিত সাফল্য নিশ্চিত করতে হয়েছে। এই উন্নয়ন আরো তরান্বিত করা যেত, যদি তাঁকে একাত্তরের অসমাপ্ত যুদ্ধ সমাপ্ত করার কঠিন দায়িত্ব পালন করতে না হতো; দেশের প্রধান বিরোধী পক্ষও গণতান্ত্রিক হতো।

এই বিরোধী পক্ষ গণতন্ত্রের জন্য মায়াকান্না কাঁদে। কিন্তু তাদের দুই হাতেই গণতন্ত্র হত্যার রক্ত। এই রক্ত ঢাকা দেওয়ার জন্য তারা আওয়ামী শিবিরেরই এক সুবিধাবাদী নেতাকে তাদের জোটে শিখণ্ডি হিসেবে খাড়া করে বিশ্ববাসীকে বোঝাতে চাচ্ছে, গণতন্ত্র উদ্ধারের জন্যই তারা নির্বাচনে অংশ নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক পথে হাঁটতে চায়। কিন্তু আওয়ামী লীগ তাদের সে পথে হাঁটতে দিচ্ছে না। তারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বলছে, সংলাপের কথা বলছে। কিন্তু পেছনে লুকানো তাদের ডান হাতে যে পঁচাত্তরের রক্তমাখা ছুরি, এটা কাউকে দেখতে দিচ্ছে না। ইংল্যান্ডের শতবর্ষব্যাপী যুদ্ধের দুই পক্ষই হাতে অস্ত্র নিয়ে লড়াই করেছে। কখনো শান্তিবাদী সাজেনি। কিন্তু বাংলাদেশে একাত্তরের পরাজিত শক্তি, কখনো সশস্ত্র সন্ত্রাসী, কখনো নিরীহ শান্তিবাদীর মুখোশধারী।

এবারের সাধারণ নির্বাচন তাই একটি গতানুগতিক নির্বাচনী যুদ্ধ নয়। এটা একাত্তরের অসমাপ্ত যুদ্ধের আরেকটি পর্যায়। ৪৩ বছর ধরে এই যুদ্ধ চলেছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনযুদ্ধে তার সমাপ্তি ঘটবে, না তা আবার সন্ত্রাস ও অনিশ্চয়তার পথ ধরবে, তা এই নির্বাচনের ফলাফল জানার পরই বলা যাবে। ১৫ আগস্টের বঙ্গবন্ধু হত্যা, নভেম্বরের জেলহত্যা, ২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা দ্বারা হাসিনা-হত্যার চেষ্টা ইত্যাদি হচ্ছে একাত্তরের অসমাপ্ত যুদ্ধের একটা পিঠ। অন্য পিঠে রয়েছে ’৯৬-এর ভোটারশূন্য ফেব্রুয়ারি নির্বাচন, ২০০১ সালের কারসাজি এবং নির্মম দমন ও ধর্ষণ-নীতির নির্বাচন ইত্যাদি। বর্তমানেও তারা চায় ২০০১ সালের নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি। এই পর্বের যুদ্ধে তারা কৌশল ও সেনাপতি বদলেছে মাত্র। উদ্দেশ্য বদলায়নি।
আবদুল গাফফার চৌধুরীঃ-লেখক, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, কলামিষ্ট।।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*