প্রাণের ৭১

আমরা চাই বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা সসম্মানে নিজ দেশে ফিরে যাক-রাষ্ট্রপতি

মোহাম্মদ হাসানঃ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সম্মান জানানোর মাধ্যমে নিজেরা সম্মানিত হবেন বলে মন্তব্য করেছেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি এড.মোঃ আবদুল হামিদ। তিনি যারা দেশের শান্তি ও অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে করে বঙ্গবন্ধুর নীতি আদর্শ ও চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে গড়ে উঠতে পারে সে জন্য সকলকে উদ্যোগী হতেও বলেছেন।

আজ ৯ নভেম্বর সোমবার সন্ধ্যা ৬ টা ৩৫ মিনিটে মুজিববর্ষ উপলক্ষে জাতীয় সংসদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিশেষ অধিবেশনে ভাষণ প্রদানকালে রাষ্ট্রপতি একথা বলেন।

তিনি বলেন, গোটা বিশ্ববাসীর মতো আমরাও আশাবাদী অচিরেই করোনাভাইরাসের টিকা আবিষ্কৃত হবে যা গোটা মানবজাতিকে এক চরম অনিশ্চয়তা, হতাশা, উৎকণ্ঠা থেকে মুক্তি দেবে। স্বস্তি ফিরে আসবে ঘরে ঘরে। তবে এ ভ্যাকসিন বিশ্বের সকল দেশ ও অঞ্চল যাতে একইসময়ে ও সমভাবে পায় তা নিশ্চিত করতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে। আমি জাতিসংঘসহ বহুজাতিক সংস্থা ও উন্নত বিশ্বকে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে কোটি কোটি মানুষ। জীবনযাত্রায় নেমে আসে অচলাবস্থা। এ অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩১ দফা নির্দেশনা প্রদান এবং প্রতিনিয়ত ভার্চুয়াল কনফারেন্সের মাধ্যমে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাগণের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন ও দিক-নির্দেশনা প্রদান করেছেন। তাঁর এই সময়োচিত সাহসী সিদ্ধান্ত এবং অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে বাংলাদেশ করোনা পরিস্থিতি সাফল্যের সাথে মোকাবেলা করে যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার সাহসিকতা ও দূরদর্শী নেতৃত্বের জন্য আমি আবারও আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

দেশে চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে তিনি বলেন, স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণ এখন সমাপ্তির পথে। মেট্রোরেলের কাজ চলছে, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে বহুলেন টানেল নির্মাণের প্রথম টানেল সমাপ্ত হয়েছে। সমগ্র বাংলাদেশে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ করা হবে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পর এবার ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে মাওয়া হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মানের এক্সপ্রেস হাইওয়ের যুগে পা রাখল বাংলাদেশ। গত ১২ই মার্চ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে এটি উদ্বোধন করেছেন-যা জাতির জন্য মুজিবর্ষের এক অনন্য উপহার। এছাড়া দেশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমকে সূচারু ও সহজলভ্য করতে ঢাকা-চট্টগ্রাম নৌ-রুটকে কার্যকর করে তোলার জন্য বৃহৎ একটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। মৌলিক চাহিদা পূরণে দলমত নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের পাশে দাড়ালে রাজনীতির নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে, যা হবে মুজিবর্ষের বড় অর্জন বলে মনে করি।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে রাষ্ট্রপতি বলেন: ১৬ কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত এদেশে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও শুধু মানবিক বিবেচনায় পার্শ্ববর্তী দেশ মায়ানমার থেকে আগত প্রায় ১০ লক্ষ বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। এসব শরণার্থীদের নিজ দেশে সসম্মানে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ জাতিসংঘসহ বিশ্বফোরামে বারবার বিষয়টি উত্থাপন করেছে। ইতোমধ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর পাশবিক নির্যাতন, গণহত্যার বিষয়টি আন্তর্জাতিক আদালতে উত্থাপিত হয়েছে এবং আদালত মিয়ানমার সরকারের প্রতি প্রাথমিক কিছু নির্দেশনা জারি করেছে। আমরা চাই বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা সসম্মানে নিজ দেশে ফিরে যাক।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*