প্রাণের ৭১

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে না হৃদয় সরকারের

আসলে প্রতিবন্ধী কি এই ছেলেটা নাকি আপনারা সেটা’ই এখন বড় প্রশ্ন!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বলছে, তাদের কাছে প্রতিবন্ধী মানে- যারা দেখতে পায় না, শুনতে পায় না আর কথা বলতে পারে না।

এই জগতে আর কেউ তাদের কাছে প্রতিবন্ধী না।

গত বেশ কিছু দিন ধরে ফেইসবুকে একটা ছবি ঘুরে ফিরছে। এক মা কোলে করে তার ছেলে’কে পরীক্ষা হলে নিয়ে যাচ্ছে।

এই ছেলে’টা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছে। আর তার মা তাকে কোলে করে নিয়ে গিয়েছে। কারন সে শারীরিক প্রতিবন্ধী। সে হাঁটতে পারে না।

এই ছেলে পরীক্ষা দিয়ে পাশ নাম্বার পেয়েছে এবং মোটামুটি একটা অবস্থানও তার আছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চান্স পাবে কিনা বুঝা যাচ্ছে না।

প্রতিবন্ধী কোটায় যদি তাকে নেয়া হয়, তাহলে অবশ্য চান্স হয়ে যাবে।

এই দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা করেছে- এই ছেলে’কে তারা প্রতিবন্ধী কোটায় ভর্তি করাতে পারবে না।

কারন তাদের কাছে প্রতিবন্ধী মানে- যারা দেখতে পায় না, শুনতে পায় না আর কথা বলতে পারে না!

এই ছেলে তাহলে এখন কি করবে?

পা নেই কিংবা হাঁটতে পারে না বলে , রাস্তায় বসে তাকে কি আপনারা ভিক্ষা করতে বলছেন?

এই ছেলের চাইতে আর কোন মানুষ’টার বেশি দরকার শিক্ষা গ্রহণ করার?

এই ছেলেটা যদি ভালো একটা সাবজেক্টে পড়াশুনা করে এবং এর পর বসে বসে কাজ করা যায় এমন একটা চাকরী করতে পারে, তাহলে সে সমাজের জন্য বোঝা হবে না। সেই সঙ্গে যেই মা তাকে এই বয়েসে কোলে করে পরীক্ষার হলে নিয়ে এসছে, সেই মা’কেও হয়ত তখন আর তাকে কোলে করে কোথাও নিয়ে যেতে হবে না।

সে হুইল চেয়ার কিনতে পারবে, নিজে নিজে হুইল চেয়ারে চলাফেরা করতে পারবে; আর যেখানে পারবে না, সেখানে আমার-আপনার মতো যারা আমরা চলাফেরা করতে পারি; তাদের মতো কাউকে সে নিয়োগ দিতে পারবে, তাকে সাহায্য করার জন্য।

অথচ আপনারা কিনা ঘোষণা করলেন, এই ছেলে’কে প্রতিবন্ধী কোটায় ভর্তি করান যাবে না! তো, এই ছেলে আজীবনের জন্য সমাজের কাছে বোঝা হয়ে’ই থাকুক এটাই তো আপনারা চাচ্ছেন, তাই না?

প্রতিবন্ধী’র সংজ্ঞা আপনাদের কাছে নতুন করে শিখতে হলো।

আসলে প্রতিবন্ধী কি এই ছেলেটা নাকি আপনারা সেটা’ই এখন বড় প্রশ্ন!

আমিনুল ইসলাম এর ফেসবুক থেকে সংগ্রহিত



« (পূর্বের সংবাদ)



মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*