প্রাণের ৭১

ইটালিকে হারিয়ে দিল ফ্রান্স।

রাশিয়া বিশ্বকাপের প্রস্তুতিপর্বে দুর্দান্ত এক জয় পেয়েছে ফ্রান্স। নিজেদের পুরনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার পথে চলা ইতালির বিপক্ষে পুরোটা সময় আধিপত্য ধরে রেখে ৩-১ গোলে জিতেছে সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

ফ্রান্সের নিসে শুক্রবার সামুয়েল উমতিতি ও অঁতোয়ান গ্রিজমানের গোলে স্বাগতিকরা এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান কমান লিওনার্দো বোনুচ্চি। দ্বিতীয়ার্ধে উসমান দেম্বেলের লক্ষ্যভেদে জয় পায় ফ্রান্স।

গত সোমবার অলিভিয়ে জিরুদ ও নাবিল ফেকির গোলে রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ডকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়েছিল ফরাসিরা। একই দিনে রাশিয়া বিশ্বকাপের দল সৌদি আরবকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল ইতালি।

বাছাইপর্ব থেকে ছিটকে যাওয়া চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইতালির বিপক্ষে ফ্রান্সের শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। ২৯ মিনিটের মধ্যে দুই গোলে এগিয়ে যায় এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভারিট দলটি। ভাগ্য বিরূপ না হলে ওই সময়ের মধ্যেই তারা পেতে পারতো আরেকটি গোল।

শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলা স্বাগতিকরা এগিয়ে যায় অষ্টম মিনিটে। ডান দিক থেকে গ্রিজমানের দারুণ ফ্রি-কিক দূরের পোস্টে ফাঁকায় পেয়ে লাফিয়ে ভলি করেন কিলিয়ান এমবাপে। সে প্রচেষ্টা গোলরক্ষক ফিরিয়ে দিলেও গোলমুখে আলগা বল পেয়ে অনায়াসে জালে ঠেলে দেন বার্সেলোনার ডিফেন্ডার উমতিতি।

২৭তম মিনিটে চেলসি মিডফিল্ডার এনগোলো কঁতের নীচু শট পোস্টে বাধা পায়। এর দুই মিনিট পরেই সফল স্পট কিকে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন আতলেতিকো মাদ্রিদের ফরোয়ার্ড গ্রিজমান। বাঁ-দিক দিয়ে এক জনকে কাটিয়ে দ্রুত ডি-বক্সে ঢোকা আতলেতিকো মাদ্রিদ ডিফেন্ডার লুকা এরনঁদেজ ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টিটি পায় তারা।

পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেনি ইতালি। ৩৬তম মিনিটে ডি-বক্সের ঠিক বাইরে থেকে মারিও বালোতেল্লির ফ্রি-কিক গোলরক্ষক হুগো ইয়োরিস ঠেকানোর পর ফিরতি বল ডান পায়ের শটে ঠিকানায় পাঠান বোনুচ্চি।

দ্বিতীয়ার্ধের দ্বিতীয় মিনিটে আরও একবার ভাগ্যবঞ্চিত ফ্রান্স। দারুণ এক পাল্টা আক্রমণে নিজেদের সীমানা থেকে বল পায়ে ক্ষিপ্র গতিতে ছুটে ডি-বক্সে এক জনকে কাটিয়ে আরেক জনকে কোনো সুযোগ না দিয়ে ডান পায়ের জোরালো শট নেন দেম্বেলে। কিন্তু বার্সেলোনা ফরোয়ার্ডের শট ব্যর্থ হয় ক্রসবারে লেগে।

প্রতিপক্ষের রক্ষণে একচেটিয়া চাপ ধরে রেখে একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে ফ্রান্স। পাঁচ মিনিট পর ডি-বক্সের বাইরে থেকে বায়ার্ন মিউনিখের মিডফিল্ডার কোরোঁতাঁ তোলিসোর নীচু শট পোস্ট ঘেঁষে বাইরে চলে যায়।

নিজেদের ঘর সামলে মাঝে মধ্যেই পাল্টা আক্রমণে উঠছিল ইতালি। কিন্তু আক্রমণভাগের ব্যর্থতায় বারবার হতাশ হতে হচ্ছিল তাদের। ৬৭তম মিনিটে ছয় গজ বক্সের বাইরে থেকে লক্ষ্যভ্রষ্ট হেড করেন বালোতেল্লি।

এরই মাঝে ৬৫তম মিনিটে দেম্বেলের চমৎকার এক গোলে ব্যবধান বাড়িয়ে নেয় ফ্রান্স। ডি-বক্সের কিনারা থেকে কোনাকুনি উঁচু শটে দূরের পোস্ট দিয়ে বল জালে পাঠান ২১ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড।

শেষ দিকে বদলি নামা মার্সেইয়ের ফরোয়ার্ড ফ্লোরিয়ান থাউভিনের ১৫ গজ দূর থেকে নেওয়া ভলি গোলরক্ষক রুখে দিলে ব্যবধান আর বাড়েনি।

আগামী ১৬ জুন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু হবে ফ্রান্সের। ‘সি’ গ্রুপে তাদের অন্য দুই প্রতিপক্ষ পেরু ও ডেনমার্ক।

অস্ট্রিয়ার মাটিতে চেক রিপাবলিককে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।

ইতালিতে বিশ্বকাপের অন্য দুই দল মিশর ও কলম্বিয়ার ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়েছে।

বিশ্বকাপের মূল পর্বে ‘এ’ গ্রুপে মিশরের প্রতিপক্ষ রাশিয়া, সৌদি আরব ও উরুগুয়ে। আর ‘এইচ’ গ্রুপে কলম্বিয়ার সঙ্গী পোল্যান্ড, সেনেগাল ও জাপান।

বিশ্বকাপ মিশনে মাঠে নামার আগে হোঁচট খেয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। বিশ্বকাপে উঠতে ব্যর্থ হওয়া বসনিয়ার কাছে দেশের মাটিতে ৩-১ গোলে হেরে গেছে এশিয়ার দলটি।

বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে ‘এফ’ গ্রুপে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিপক্ষ গতবারের চ্যাম্পিয়ন জার্মানি, মেক্সিকো ও সুইডেন।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*