প্রাণের ৭১

ঈদে আমদানি করা ছবি চালানো যাবেনা।

বাংলাদেশে বিভিন্ন উৎসবের সময় আমদানিকৃত ভারতীয় এবং পাকিস্তানী চলচ্চিত্র প্রেক্ষাগৃহে চালানো যাবেনা বলে নির্দেশনা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
এসব উৎসবের মধ্যে রয়েছে- ঈদ এবং পূজা সহ বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব এবং পহেলা বৈশাখের মতো আয়োজন।
তবে এ সময়ের মধ্যে যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র প্রদর্শনীতে কোন সমস্যা নেই বলে আদালত জানিয়েছে।
বাংলাদেশে চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির একজন সদস্য কিছুদিন আগে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেছিলেন।
সে আবেদনে বলা হয়েছিল, বিভিন্ন উৎসবের সময় সিনেমা হলগুলোতে যাতে আমদানিকৃত এবং যৌথ প্রযোজনার ছবি প্রদর্শন করতে না পারে।
হাইকোর্টে রায় তার পক্ষে যাবার পর সিনেমা হল মালিকদের পক্ষ থেকে সেটির বিরুদ্ধে আপিল করা হয়।
কিন্তু আদালত বলেছে যৌথ প্রযোজনার ছবি প্রদর্শনের ক্ষেত্রে কোন সমস্যা নেই।
তবে উৎসবের সময় আমদানি করা ছবি প্রদর্শন করা যাবে না।
আরো পড়ুন:
যৌথ প্রযোজনার নামে কলকাতার ছবি চালানো হচ্ছে?
যৌথ প্রযোজনার সিনেমা নিয়ে কেন এতো বিতর্ক?
ডাবিং শিল্পীরা কেন আড়ালেই রয়ে যান?
রিট আবেদনকারীর পক্ষে অন্যতম আইনজীবী মনিরুজ্জামান আসাদ বলেছেন, উৎসবের সময় যেহেতু সিনেমা হলগুলোতে দর্শক বেশি থাকে। সেজন্য তখন যাতে শুধু দেশিয় সিনেমা প্রদর্শন করা হয় সেটি চেয়েছেন রিট দায়ের করা ব্যক্তি।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পী এবং কলাকুশলীদের একটি অংশের দীর্ঘদিনের অভিযোগ ছিল, যৌথ প্রযোজনার নামে কলকাতার সিনেমা বাংলাদেশে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে।
যৌথ প্রযোজনার জন্য নির্ধারিত নিয়ম-কানুন অনুসরণ না করার অভিযোগও উঠেছিল। ফলে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল বলে তাদের অভিযোগ।
এসব অভিযোগের প্রেক্ষাপটে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনার নীতি পরিবর্তন করে বাংলাদেশ সরকার।
আদেশের কী প্রভাব পড়বে চলচ্চিত্রে?
বাংলা চলচ্চিত্রের একজন সুপরিচিত নায়ক আরেফিন শুভ মনে করেন, উৎসবের সময়ে বাংলাদেশী ছবির প্রাধান্য থাকা উচিত। কারণ বছরের অন্য সময়ের তুলনায় বিপুল সংখ্যক দর্শক এ সময়ে সিনেমা হলে যায়।
তিনি বলেন,”বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমি চাই আমাদের ছবির প্রাধান্য সবার উপরে থকতে হবে। ”
তবে মি: শুভ যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্রের পুরোপুরি বিপক্ষে নন।
তিনি বলেন, ” নীতিমালা পুরোপুরি মেনে যদি যৌথ প্রযোজনার ছবি করা হয়, তাহলে আমি সেটিকে সমর্থন করি।”
আদালতের এ সিদ্ধান্তের কারণে দর্শকরা দেশিয় চলচ্চিত্র উপভোগ করতে পারবে বলে তিনি মনে করেন।
তবে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনার ছবি তৈরি করা আগের চেয়ে অনেক কঠিন হয়ে গেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী এখন একটি যৌথ প্রযোজনার সিনেমা জন্য অনুমতি নিতে বেশ কষ্ট করতে হয় বলে মি: শুভ উল্লেখ করেন।
“একটা সময় ছিল যখন আগে সিনেমা বানানো হয়েছে এবং তারপর অনুমতি নেয়া হয়েছে। কিন্তু এখন একটি ছবি তৈরির জন্য অনুমোদন নিতে হয় পাঁচ মাস আগে,” বলছিলেন আরেফিন শুভ।
বাংলাদেশে যৌথ প্রযোজনা এবং ভারতীয় বাংলা সিনেমা আমদানির ক্ষেত্র বেশ পরিচিত জাজ মাল্টিমিডিয়া।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলিমউল্লাহ খোকন বলেন, ” দর্শকই বিচার করবে কোনটি ভালো।”
তিনি বলেন, বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনার সিনেমা তৈরির ক্ষেত্রে সরকার যে নতুন নীতিমালা করেছে সেটি বেশ কঠোর বলে মন্তব্য করেন মি: খোকন।
গত তিন বছরে জাস মাল্টিমিডিয়া যৌথ প্রযোজনার মাধ্যমে ১৩টি সিনেমা তৈরি করেছে। কিন্তু এ বছর তারা যৌথ প্রযোজনার কোন সিনেমা তৈরি করেনি বলে জানান মি: খোকন।
তিনি বলেন, “আমরা যৌথ প্রযোজনার ছবি করতে চাচ্ছিনা। এখন একটি ছবি করতে অনেক সময় লেগে যায়। আগে আমরা প্রতি বছর দুই-একটি যৌথ প্রযোজনার ছবি করেছি। কিন্তু এখন আর চাচ্ছিনা।”
যৌথ প্রযোজনা এবং আমদানি করা সিনেমার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের শিল্পী এবং কলাকুশলীদের একটি বড় অংশ বেশ সোচ্চার ছিল।
তাদের অনেকেই মনে করছেন, উৎসবের সময় আমদানি করা সিনেমা যদি হলগুলোতে প্রদর্শন না হয় তাহলে বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের দর্শক বাড়বে।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*