প্রাণের ৭১

জাতির জনকের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ধানমন্ডিতে সর্বস্তরের শোকার্ত মানুষের ঢল

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আজ বুধবার ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের সামনে শোকার্ত মানুষের ঢল নামে।
স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ভোর থেকেই আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক,সামাজিক,সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এবং সর্বস্তরের মানুষ বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনের রাস্তায় জমায়েত হতে থাকে।
সকালে ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্যদিয়ে শুরু হয় জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি।
জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে বুধবার সকাল সাড়ে ৬টায় ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এরপরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পরে সশস্্র বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। দলের সভাপতি হিসেবেও শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভার সদস্য ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এ সময় মন্ত্রিসভার সদস্যসহ ১৪ দলের অন্যান্য নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় নেতা ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শিলল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, এডভোকেট সাহারা খাতুন, ড. আব্দুর রাজ্জাক, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, একেএম এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দোলোয়ার হোসেন ও উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যরিস্টার বিপ্লব বড়–য়া প্রমুখ।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক স্মৃতি বিজড়িত বাড়ির ভেতরে যান। সেখানে ঘুরে ঘুরে তাঁর পিতার স্মৃতিচিহ্ন পরিদর্শন করেন এবং সেখানে প্রায় আধা ঘণ্টা সময় কাটান তিনি। এরপর তিনি বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রওনা হন।
সকাল ৬টার মধ্যেই অগণিত মানুষের পদচারণায় ভরে ওঠে ৩২ নম্বর সড়ক। হাতে কালো ব্যানার ও বুকে কালোব্যাজ পরিধান করে নারী-পুরুষ, স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, শিশু-কিশোরসহ সর্বস্তরের মানুষ। সকলেই পরম শ্রদ্ধায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে জাতির জনককে স্মরণ করেন। সকাল সাতটা থেকে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানানো শুরু করেন। শোকাবহ ভাবগাম্ভীর্যের মাঝেও জোরালো কন্ঠে উচ্চারিত হয় ‘বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রায় কার্যকর করা হোক।’
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য স্থানটি উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।
এ সময় ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ, আওয়ামী যুবলীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, বাংলাদেশ কৃষক লীগ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, ছাত্রলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এ ছাড়াও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বে জাসদ এবং ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি ও সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বে ওয়ার্কার্স পার্টি বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর প্রধানমন্ত্রী স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবনে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের কালরাতে যে সিঁড়িতে বঙ্গবন্ধুর মরদেহ পড়েছিল, সেখানে গোলাপের পাপড়ি ছিটিয়ে দেন। পরে ওই ভবনের একটি কক্ষে বসে কিছু সময় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন শেখ হাসিনা। এ সময়ে প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
সকাল সাড়ে ৭টায় বনানী কবরস্থানে প্রধানমন্ত্রী তাঁর মা, তিন ভাই, ভাইয়ের স্ত্রীসহ ১৫ আগস্টের শহীদদের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। তাঁদের কবরে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে দেন তিনি। এরপর পবিত্র ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাতে অংশ নেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে মন্ত্রিসভার সদস্য ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়াও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নেতৃত্বে সংস্থার সাংবাদিক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
সকাল ১০ টায় কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতারা ফুল দিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় কেন্দ্রীয় ১৪ দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়াও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের নেতৃত্বে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রলায় এবং তথ্য মন্ত্রণালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় প্রেস ক্লাব, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা শহীদ পরিবার, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি), মহিলা শ্রমিক লীগ, মৎস্যজীবী লীগ, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, যুব উন্নয়ন অধিদফতর, ঢাকা সিটি করপোরেশন শ্রমিক-কর্মচারী লীগ, গণপূর্ত শ্রমিক লীগ, মোটরচালক লীগ, রিকশা-ভ্যান শ্রমিক লীগ, জাতীয় বিদ্যুৎ শ্রমিক লীগ, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদ, বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতর, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ফিল্ম আর্কাইভ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব পরিষদ, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলা একাডেমী, গণগ্রন্থাগার অধিদফতর, জাতীয় জাদুঘর, নজরুল ইনস্টিটিউট, শিশু একাডেমী, খেলাঘর, বাংলাদেশ বেতার, জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট, বেতার কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ সমিতি, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, বিনিয়োগ বোর্ড, শিল্প গবেষণা পরিষদ, পলিটেকনিক শিক্ষক পরিষদ, ঢাকা আইনজীবী সমিতি, তথ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, জাতীয় মহিলা সংস্থা, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, জাতীয় কবিতা পরিষদ, জাতীয় গীতিকবি পরিষদ, যুব ইউনিয়ন, মুক্তিযোদ্ধা ফাউন্ডেশন, ছাত্র ইউনিয়ন, শেখ রাসেল শিশু সংসদ, বাংলাদেশ ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, রেলওয়ে শ্রমিক লীগ, ঢাকাস্থ টুঙ্গিপাড়া সমিতি, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদ, আবদুস সামাদ আজাদ ফাউন্ডেশন, সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্যপরিষদ, ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতি, টি অ্যান্ড টি শ্রমিক ফেডারেল ইউনিয়ন, শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত স্মৃতি পরিষদ, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, টেলিযোগাযোগ শ্রমিক ইউনিয়ন, গোপালগঞ্জ জেলা সমিতি, খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন, বৌদ্ধ ছাত্র সংসদ, শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ, ডিপ্লোমা নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন, সেন্টার ফর মেডিকেল এডুকেশন, সনাতন আইনজীবী কল্যাণ পরিষদ, চিলড্রেন্স ভয়েসসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন।



(পরবর্তি সংবাদ) »



মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*