প্রাণের ৭১

ড. কামাল হোসেনের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ড. কামাল হোসেনকে মির্জা ফখরুল বলেন, দুঃখিত, কথা রাখতে পারলাম না। আমার কিছুই করার নেই। আপনি থাকুন, নির্বাচন হলে সব ঠিক হবে।

বিএনপি মহাসচিবের এমন করজোর মিনতির জবাবে ড. কামাল শুধু দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন, এমন তো কথা ছিল না।

ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে ঐক্যের মূল কারিগর ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একবছর আগেও যেটা ছিল একটা অলীক কল্পনা, তাকেই বাস্তবে রূপ দেন ফখরুল। আওয়ামী লীগে যাদের জন্ম, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কথা যারা বলেন, তাদের সঙ্গে ঐক্য করেছিলেন বিএনপি মহাসচিব। এই ঐক্যে দেশের সুশীল সমাজ, বিদেশি কূটনীতিকদের মধ্যে আগ্রহ এবং উৎসাহ সৃষ্টি হয়েছিল। অনুসন্ধানে জানা যায়, ৪ শর্তে ড. কামাল জাতীয় ঐক্যে জাতীয় ঐক্যে রাজি হয়েছিলেন।

শর্তগুলো মধ্যে ছিলো- জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্ব থাকবে ড. কামাল হোসেনের হাতে, জিয়া পরিবার অর্থাৎ বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক জিয়া কেউই নির্বাচন করবেন না। নির্বাচন কার্যক্রমে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়া দুজনই দূরে থাকবেন। নির্বাচন ইশতেহার এবং কর্মসূচি প্রণীত হবে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে।

এই শর্তে ঐক্য হওয়ার পর ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্ট সংলাপে অংশ নেয়। নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়। বিদেশি কূটনীতিকদের বিএনপি মহাসচিব বলেন যে ‘ড. কামালই আমাদের নেতা।’ এরপর ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকে মির্জা ফখরুলের অনুরোধেই ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে রাজি হয় ফ্রন্টের সব দল।

ড. কামাল হোসেনের একজন ঘনিষ্ঠ সহকর্মী জানিয়েছেন, ‘ড. কামাল কিছুতেই ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে নির্বাচনে রাজি ছিলেন না। কিন্তু, বিএনপি মহাসচিবের অনুরোধেই তিনি রাজি হন।’ এরপর আকস্মিক ভাবে উদয় হয় তারেক জিয়ার। তারেক জিয়া টেলিফোনে জানান দলের মনোনয়নে তিনি নেতৃত্ব দেবেন। দলের সিনিয়র নেতারা এ নিয়ে অস্বস্তিতে পড়লেও কেউ মুখ খোলেননি। এর প্রধান কারণ হলো, দলের মধ্যে তারেকের নিরঙ্কুশ জনপ্রিয়তা। নীরবে তারেকের নেতৃত্ব মেনে নিয়ে আজ ক্ষমা চাইলেন ফখরুল। তবে শুধু ড. কামাল হোসেন এবং ঐক্য ফ্রন্টের নেতারা নন, এতে অবাক হয়েছেন সুশীল সমাজও। তারাও এতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

ড. কামাল হোসেনের ঘনিষ্ঠ একজন সুশীল আইনজীবী বললেন, ‘স্যার, ফোন করে আমাকে নির্বাচন করার অনুরোধ করেছিলেন। আমিও এটাকে ইতিবাচক ভাবে নিয়েছিলাম। আমি ভেবেছিলাম জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনবে। কিন্তু এখন দেখলাম নির্বাচন আওয়ামী লীগ আর বিএনপির ক্ষমতার লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। এটা রাজনীতির কোনো গুণগত পরিবর্তন আনবে না।’ তাঁর মতে অনেকেই এখন ঐক্যফ্রন্টে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। এর ফলে, নির্বাচনের লড়াইয়ে যে পরিবর্তনের ইঙ্গিত ছিল তা চুপসে গেছে।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*