প্রাণের ৭১

নাস্তিক্যবাদী সিন্ডিকেটের খেলনা হয়ে গেছে হেফাজত- আহমদ শফি

হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী নিজ সংগঠনের নেতাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। তার অভিযোগ, হেফাজতে ঘাপটি মেরে থাকা ‘সিন্ডিকেট’ নাস্তিক্যবাদীদের খেলনায় পরিণত হয়েছে। এ সিন্ডিকেট হেফাজত এবং তার ও তার ছেলে আনাস মাদানীর নামে জঘন্য কুৎসা রটাচ্ছে।

 

মঙ্গলবার বিবৃতিতে এ অভিযোগ করেন কওমী মাদ্রাসাভিত্তিক ‘অরাজনৈতিক’ সংগঠন হেফাজতের প্রতিষ্ঠাতা আমির আহমদ শফী। হেফাজতের সাংগঠনিক সম্পাদক আনাস মাদানী স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে সংগঠনটিতে চলমান বিরোধ আরো প্রকট হয়েছে।

 

আহমদ শফী একইধারে হাটহাজারী দারুল উলুম মইনুল মাদ্রাসার মহাপরিচালক, দেশের কওমী মাদ্রাসার নিয়ন্ত্রক সংস্থা জামিয়াতিল কাওমিয়ার চেয়ারম্যান এবং সর্ববৃহৎ কওমী শিক্ষা বোর্ড বেফাকুল মাদ্রাসিল আরাবিয়ার সভাপতি। ৯৭ বছর বয়সী আহমদ শফীর উত্তরসূরি কে হবেন তা নিয়ে অনেক দিন ধরেই বিরোধ চলছে হেফাজতে।

 

হেফাজত মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরীকে তার উত্তরসূরি মনে করা হতো। দেশের কওমী ঘরনার নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র হাটহাজারী মাদ্রাসার সহকারী পরিচালক ছিলেন তিনি। গত ১৫ জুন তাকে এ পদ থেকে সরিয়ে আনাস মাদানীর ঘনিষ্ট হিসেবে পরিচিত মাওলানা শেখ আহমদকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

 

আল্লামা শফী বিবৃতিতে বলেন, ইসলামের হেফাজতে আত্মপ্রকাশ করেছিল হেফাজতে ইসলাম। নাস্তিক্যবাদী অপশক্তি যখন আল্লাহ ও তার রাসুলের (সা.) অবমাননা করে, তখন হেফাজত গর্জে উঠে। ঈমান-আকিদা ও ইসলামি মূল্যবোধ রক্ষায় বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দেয়। আবারও যদি আল্লাহ, রাসুল (সা.), সাহাবায়ে কেরামদের বিরুদ্ধে কেউ বলে, হেফাজত গর্জে উঠবে।

 

২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠাতার পর হেফাজত আলোচনায় আসে ২০১৩ সালে। আল্লাহ ও রাসূলের (সা.) অবমাননাকারীর জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আইন প্রণয়নসহ ১৩ দফা দাবিতে রাজপথে নামে। হেফাজত ও গণজাগরণ মঞ্চ মুখোমুখি অবস্থানে চলে আসে। প্রায় মাসখানেক উত্তাল থাকে রাজপথ।

 

২০১৩ সালে ৫ মে রাতে মতিঝিলের শাপলা চত্ত্বরে অবস্থান নেন হেফাজত কর্মীরা। তাদের উচ্ছেদ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অভিযোগ আসে, এ উচ্ছেদ অভিযানে বহু হেফাজত কর্মী নিহত হয়েছেন। এর পরদিন বাবুনগরীকে গ্রেফতার করা হয়। আহমদ শফীকে বিমানে চট্টগ্রাম পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেই থেকেই হেফাজতে সরকারপন্থি ও বিরোধী দু’টি ধারা সৃষ্টি হয়েছে।

 

আহমদ শফীর বিবৃতিতে তা আরো স্পষ্ট হয়েছে। তিনি বলেছেন, হেফাজত রাজনৈতিক দল নয়। সরকারের পক্ষের কিংবা বিপক্ষের শক্তি নয়। পরিতাপের বিষয়, একটি চক্র হেফাজতকে বিরোধী দলের ভূমিকায় নিয়ে যেতে চায়। যা হেফাজতের লক্ষ্য উদ্দেশ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

 

বিবৃতিতে আল্লামা শফী বলেন, ইসলামবিরোধী অপশক্তি হেফাজতকে প্রকাশ্যে মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়ে পেছনের দরজা দিয়ে হামলা করছে। হেফাজতে থাকা সিন্ডিকেট ভেতর থেকে হেফাজত, হেফাজতের ত্যাগী নেতা, আমার ও ও আমার ছেলের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত।সমকাল






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*