প্রাণের ৭১

পাইলট-এটিসির মধ্যে সেই অডিও ছিল এডিট করা

ব্ল্যাক বক্স খোলা হবে ২৩ এপ্রিল, ২২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদনেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলার বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর পাইলট ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল-এটিসির মধ্যে কথোপকথনের যে অডিও ইউটিউবে পাওয়া গিয়েছিল তা ছিল এডিট করা। যে কোনো উদ্দেশে এই অডিও থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন অংশ বাদ দিয়ে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছে দুর্ঘটনার তদন্তে গঠিত কমিশন। দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন আগামী ১২ মে প্রকাশ করার প্রস্তুতি নিয়েছে তদন্ত কমিশন। আসলে দুর্ঘটনার আগে কী ঘটেছিল তা জানতে আগামী ২৩ এপ্রিল ব্ল্যাকবক্স, ককপিট ভয়েস রেকর্ডার ও ডিজিটাল ফ্লাইট ডাটা রেকর্ডারের পরীক্ষা শুরু করবে কমিশন। তখনই জানা যাবে এই কথোপকথন থেকে কী কী অংশ বাদ দেওয়া হয়েছে অথবা কোনো অংশের পরিবর্তন করা হয়েছে কিনা। ইতিমধ্যে ২২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কমিশন এটা নিশ্চিত হয়েছে যে, ইন্টারনেটে পাওয়া অডিওটির মূল কথোপকথন নয়। এর বাইরে আছে আরও বেশ কিছু বিষয়। নেপালের গঠিত তদন্ত কমিশনের পক্ষে কাজ করা একমাত্র বাংলাদেশি সদস্য এবং এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন  গ্রুপ অব বাংলাদেশ (এএআইজি-বিডি) এর প্রধান ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন এ রহমাতুল্লাহ জানিয়েছেন, তদন্ত কমিশন ইতিমধ্যে পাইলটের সঙ্গে নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরের এটিসি টাওয়ারের কথোপকথনের রেকর্ড শুনেছে। ইউটিউবে কিছু ভাইটাল এরিয়া দেওয়া হয়নি।  সেগুলোর বিষয়ে তদন্ত করতে হবে। আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন আইকাও-এর নির্ধারিত সময়ে প্রকাশ করা হবে প্রাথমিক প্রতিবেদন। কমিশন আগামী ১২ মে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। তবে প্রাথমিক এই প্রতিবেদনে বিমানটি কীভাবে বিধ্বস্ত হলো তা জানা গেলেও দুর্ঘটনার কারণ জানতে মূল প্রতিবেদন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।  সবকিছু বিশ্লেষণ করেই বলা যাবে কেন সঠিকভাবে উড়োজাহাজটি অবতরণ করেনি। এই মূল প্রতিবেদন পেতে ৩৬৫ দিন সময় লাগতে পারে। ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন এ রহমাতুল্লাহ বলেন, বিধ্বস্ত উড়োজাহাজের ব্ল্যাকবক্স, ককপিট ভয়েস রেকর্ডার, ডিজিটাল ফ্লাইট ডাটা রেকর্ডারসহ তদন্তের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি কম্পিউটার ইউনিট উদ্ধার করেছে তদন্ত কমিশন। গত রবিবার কানাডার ট্রান্সপোর্টেশন সেইফটি বোর্ডের কাছে এসব তথ্য-উপাত্ত পাঠানো হয়েছে। তারা পুরোপুরি নিরপেক্ষভাবে এগুলোর বিশ্লেষণ করবে। এ ছাড়া দুর্ঘটনার পর কন্ট্রোল টাওয়ার ও উদ্ধারকারী দলসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার ২০ জনকে জেরা করা হয়েছে। জানা যায়, সেক্রেটারি অব দ্য কমিশন অব নেপাল বুদ্ধি সাগর লামিচানি এবং বাংলাদেশের পক্ষে ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন  মো. রহমাতুল্লাহর উপস্থিতিতে আগামী ২৩ এপ্রিল ব্ল্যাকবক্স খোলা হবে। অন্যদিকে দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত ইউএস-বাংলার ফ্লাইটের যাবতীয় নথি নিয়ে সিভিল এভিয়েশনে একজন সদস্য আগামী সপ্তাহে নেপাল যাবেন। গত ১২ মার্চ নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলার বিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে মোট ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। নেপালের সিভিল এভিয়েশনের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সিভিল এভিয়েশন এবং এয়ারক্রাফট প্রস্তুতকারী সংস্থা কানাডার বোমবাডিয়ার দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনের জন্য তদন্ত প্রতিবেদন তৈরিতে কাজ করছে। এক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা নিশ্চিতের জন্য এয়ারলাইনস পরিচালনাকারী ইউএস-বাংলা কর্তৃপক্ষকে রাখা হয়নি এই তদন্ত কাজে।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*