প্রাণের ৭১

বিএনপি’র রাজনীতিতে সিঁথি’র বিচরণ বেড়েছে

মোহাম্মদ হাসানঃ দেশের মানুষ যেমন করোনার সাথে তালমিলিয়ে চলতে শুরু করেছেন ঠিক তেমনি রাজনীতিও করোনাকে সঙ্গি করে এগুতে শুরু করেছে। কিছুদিন যাবত বিএনপির রাজনীতি বেশ আলোচিত।একদিকে উপ-নির্বাচনে মনোনয়ন অপরদিকে স্থায়ী কমিটির সদস্য পূরণ অন্যদিকে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কে পদচ্যুত করা না করা নিয়ে চায়ের কাপে ঝড় তুলছে। পাশাপাশি সৌদি আরবে আইএস এর সাথে বৈঠক ভাবিয়ে তুলছে রাজনৈতিক প্রাজ্ঞগণ সহ জাতীয় নিরাপত্তায় নিয়োজিত সংস্থাগুলোকে।

তাছাড়া গত কিছুদিন ধরেই বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন’র পুত্র প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর  স্ত্রী  সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিঁথি। কোকোর মৃত্যুর পর দুই সন্তান নিয়ে লন্ডনে অবস্থান করছেন সিঁথি। বিএনপির রাজনীতিতে তারেক জিয়ার দাপটে কখনোই স্থান হয়নি আরাফাত রহমান কোকোর। তাই কোকোর মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রীও বিএনপিতে ছিলেন অপ্রকাশিত।

 

কিন্ত বেগম জিয়া গ্রেপ্তার হবার পর আলোচনায় আসেন সিঁথি। কারান্তরীন বেগম জিয়াকে দেখতে তিনবার বাংলাদেশে এসে তিনি বিএনপির রাজনৈতির হওয়ায় দোল লাগিয়েছেন।  এ সময় বিএনপির নেতৃত্বের কাছে সিঁথির গুরুত্ব বাড়ে। বিশেষ করে, বেগম জিয়ার অনেক নির্দেশনা এবং বার্তা বিএনপির বিভিন্ন নেতৃবৃন্দকে পৌছে দিয়ে তিনি গুরুত্ববান হন।

২০১৮ সালের এপ্রিলে কোকোর স্ত্রী সিঁথি দেশে আসার বিষয়ে তখন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা সাংবাদ মাধ্যমে বলেছিলেন, আমরা চেয়ারপার্সন এর মুক্তি চাই,নানা করানে দলীয় রাজনৈতিক কার্যক্রম চলছে  ঢিমেতালে। যার কারণে দলের নেতাদের ওপর ভরসা রাখতে পারছিলেন না বেগম জিয়ার পরিবার। সেই সূত্র ধরেই পারিবারিক সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে একগুচ্ছ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মিশন নিয়ে দেশে ছুটে আসছেন কোকোর স্ত্রী সিঁথি রহমান।

সিঁথি দেশে আসার পর খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রক্রিয়ায় যেমন গতি ফিরেছে, তাকে নিয়ে বিএনপিতে নানা আলোচনা ডালপালা ছড়িয়েছে।।

মাঝে কয়েকবার আসা যাওয়া হলেও গেলো বছরের ৩ আগষ্ট সিঁথি হঠাৎ করে শাশুড়ি কারাবন্দী বেগম জিয়াকে দেখতে আসলে তখন বিএনপির স্থায়ী কমিটির নেতৃত্ব গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, তিনি দলের রাজনৈতিক কোনো কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হবেন না কিংবা দলের কোনো নেতাদের সঙ্গে দেখাও করবেন না।

কারন হিসেবে জানাযায় সিঁথি প্রথম দেশে আসার পর হতে বিএনপির মুল নেতার উল্লেখযোগ্য অংশ তাঁর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। গত সংসদ নির্বাচনে বেশ কয়েকজনের বিষয়ে সিঁথি তারেক বৈঠক হয়। যদিও কাঙ্ক্ষিত ফলাফল আসেনি সিঁথির ঝুড়িতে। আওও কিছু পারিবারিক বিষয় নিয়ে সিঁথি তারেক দুরত্ব বাড়ে।

দেশের সংবাদ মাধ্যমে সদ্য প্রকাশিত প্রতিবেদনে প্রকাশ,তবে, বিএনপির অনেক নেতাই মনে করেন, বিয়ের পর থেকে সিঁথির সঙ্গে তারেক জিয়ার দ্বন্ধ ছিলো। জিয়ার সন্তান হবার পরও সবকিছুতে তারেকের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে স্বামীর পক্ষে প্রকাশ্য হয়েছিলেন সিঁথি। আর একারণেই বেগম জিয়া বাধ্য হয়ে কোকোকে কিছু ব্যবসা দিয়েছিলেন। এখন বেগম জিয়াই সিঁথিকে রাজনৈতিক নানা কর্মকান্ডে টেনে আনছেন বলে বিএনপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন।

 

লন্ডন থেকেই সিঁথি বেগম জিয়ার বিভিন্ন বার্তা নেতাদের কাছে দিচ্ছেন। নেতাদের কেউ কেউ তারেকের চেয়ে কোকোর সাথে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন। বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, তারেক জিয়া কথা বলেন আদেশের সুরে। আমাদের সঙ্গে চাকর বাকরের মতো ব্যবহার করেন। আর সিঁথি ম্যাডাম আমাদের যথেষ্ট সম্মান দেখান। তিনি আমাদের মতামত গুরুত্ব দেন।

 

জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপিতে কমিটি বাণিজ্য, মনোনয়ন বাণিজ্য নিয়ে অস্থিরতা চলছে। এই অস্থিরতার অনেকেই কোকোর স্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেছেন। সিঁথিও বিষয় গুলো টেলিফোনে বেগম জিয়াকে বলেছেন। বেগম জিয়া এ ব্যাপারে তার মতামত জানিয়েছেন সিঁথিকে। ফলে বিএনপিতে এখন সিঁথি তারেক জিয়ার মুখপাত্রে পরিণত হয়েছেন। তারেকের অনেক সিদ্ধান্তই চ্যালেঞ্জের মুখে পরেছে। এ নিয়ে তারেক জিয়া উদ্বিগ্ন বলেও জানিয়েছেন, বিএনপির অনেক নেতা। তবে পারিবারিক বিরোধের জেরে বিএনপি নতুন বিভক্তির পথে যায় কিনা, সেটাও বিএনপির অনেক নেতাকে ভাবাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, জিয়া পরিবারের বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থান করছেন। প্রয়াত কোকোর পরিবারের সদস্যরাও একই এলাকায় বসবাস করছেন কিন্তু আলাদা ফ্ল্যাটে থাকছেন তারা। ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি মালয়েশিয়ায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান আরাফাত রহমান কোকো। এর পর থেকেই তারা লন্ডনে বসবাস করছেন। শর্মিলা রহমান সিথি রাজনৈতিক কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত হন না। তিনি দেশে এসে শুধু তার মা ও শাশুড়ির সঙ্গে দেখা করে চলে যান।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*