প্রাণের ৭১

ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী-অভিভাবক

বিদ্যালয় বন্ধ করে বিএনপি নেতার ছেলের বৌভাত!

কুমিল্লার তিতাস উপজেলার স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাছিমপুর আর আর ইনস্টিটিউশন। বহু বছরের ঐতিহ্য বহনকারী প্রবীণ এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বর্তমান সময়ে নানা অনিয়মের ফলে বিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন হতে চলেছে বলে অভিযোগ অভিভাবক ও সুশীল সমাজের। পূর্বের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ কমিটির সকল সদস্যরা বিদ্যালয়টিকে নিজের পরিবারের মতোই ভালোবাসতেন বলেও তারা জানায়।

বর্তমানে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদে ব্যাপক পরিবর্তনের ফলে ক্রমেই বিদ্যালয়ের সুনামে নেমে আসে ধস। পবিত্র মাহে রমজানের দীর্ঘ এক মাস সরকারি বন্ধের পর সারা দেশব্যাপী আজ শনিবার থেকে মাধ্যমিক স্কুলের পাঠদান শুরু হয়। কিন্তু রহস্যজনক কারণে কুমিল্লার তিতাসের ঐতিহ্যবাহী মাছিমপুর আর আর ইনস্টিটিউশনে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়।

স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিকট থেকে অভিযোগ পেয়ে শনিবার বেলা ১১টার দিকে সরজমিনে গিয়ে দেখা উপজেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি মো. মোয়াজ্জেম হোসেন সরকারের ছেলের বৌভাত অনুষ্ঠানের জন্য স্কুল মাঠে প্যান্ডেল সাজানো রয়েছে। ক্লাস করতে আসা বিভিন্ন শ্রেণির শির্ক্ষাথীরা এমন পরিবেশ দেখে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছে। কেন ফিরে যাচ্ছে জানতে চাইলে, তারা বলে আঙ্কেল আজ (শনিবার) আমাদের স্কুল খোলা ছিল, কিন্তু এসে দেখি স্কুল মাঠে বিএনপি’র নেতার ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠান চলবে। স্যার বলছে ক্লাস হবে না। তাই ফিরে যাচ্ছি।

মোবাইল ফোনে মাছিমপুর, বলরামপুর, নাগেরচর, জয়পুর ও কদমতুলি গ্রামের একাধিক অভিভাবক জানান, অতীতে আমরা মাছিমপুর স্কুলে এমন ঘটনা দেখিনি। স্কুল বন্ধ রেখে স্কুল মাঠে সামাজিক অনুষ্ঠান। এ বছরই প্রথম দেখলাম। তারা অভিযোগ করে বলেন, বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি যতদিন এই স্কুলে দায়িত্ব পালন করবে; ততদিন এই স্কুলে নিয়মের কিছুই থাকবে না। এক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষকের উদাসীনতাকেও দায়ী করেন এসব অভিভাবক।

এ বিষয়ে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আলম সরকারের নিকট জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সামাজিক বিষয়টি বিবেচনা করেই মাঠে অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহফুজুর রহমান চৌধুরী বলেন, শুক্রবার অনুষ্ঠানের কথা ছিল, গতকাল অনুষ্ঠান না হওয়ায় আজ অনুষ্ঠান হচ্ছে। রমজান মাসের ১৫ দিন আমি স্কুল খোলা রেখেছি। সে কারণে আজ সংরক্ষিত ছুটি ঘোষণা করেছি। তবে পরিকল্পিত সংরক্ষিত ছুটি কি না জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করেন কিন্তু সূত্র জানায় দায় মুক্তির জন্য শনিবার সকালে সংরক্ষিত ছুটির জন্য আবেদন লিখিয়ে আনেন তবে স্কুল বন্ধের বিষয়ে অন্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী বা অভিভাবক কেউ জানেন না।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার আনোয়ার চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি এবং প্রধান শিক্ষক বলেছে আজ নাকি সে সংরক্ষিত ছুটি দিয়েছে। তবে আজকে এ ছুটি ঘোষণা করা ঠিক হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে সাংবাদিকদের জানান।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*