প্রাণের ৭১

মিয়ানমারের রাসায়নিক অস্ত্রের মজুদের অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের।

মিয়ানমারের হাতে নিষিদ্ধ রাসায়নিক অস্ত্রের মজুদ থাকতে পারে। একই সঙ্গে তারা রাসায়নিক অস্ত্র নিষিদ্ধ বিষয়ক বৈশ্বিক কনভেনশন লঙ্ঘন করে থাকতে পারে। এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

 

অর্গানাইজেশন ফর দ্য প্রহিবিশন অব ক্যামিকেল উইপনস (ওপিসিডব্লিউ)-এর বার্ষিক সভায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি থমাস ডি নান্নো এমন তথ্য প্রকাশ করেছেন।

 

তিনি বলেছেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির ‘ঐতিহাসিক’ একটি স্থাপনায় এখনও অস্ত্র থাকতে পারে। ওই স্থাপনা থেকে প্রস্তুত করা হতো বিষাক্ত মাস্টার্ড গ্যাস। এমন রাসায়নিক অস্ত্রের মজুদের বিষয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র।

 

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি, মজুদ ও ব্যবহার বন্ধ বিষয়ক ক্যামিকেল উইপনস কনভেনশনে (সিডব্লিউসি) স্বাক্ষরকারী দেশ মিয়ানমার।

 

তবে থমাস ডি নান্নো বলেছেন, ওয়াশিংটনের হাতে তথ্য রয়েছে যে, ১৯৮০ এর দশকে মিয়ানমারে রাসায়নিক অস্ত্র বিষয়ক কর্মসূচি ছিল। এর মধ্যে ছিল সালফার সমৃদ্ধ মাস্টার্ড গ্যাস তৈরি বিষয়ক কর্মসূচি এবং রাসায়নিক অস্ত্র উৎপাদন বিষয়ক স্থাপনা। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র সার্টিফাই করে যে, সিডব্লিউসির বিষয়ে অসম্মতি রয়েছে মিয়ানমারের। কারণ, তারা তাদের অতীতের রাসায়নিক অস্ত্র বিষয়ক কর্মসূচি ঘোষণা করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং রাসায়নিক অস্ত্র বিষয়ক স্থাপনা ধ্বংস করতে ব্যর্থ হয়েছে। এর আগে এমন অস্ত্র মজুত করা এবং ব্যবহার করার অভিযোগ আছে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে।

 

এএফপি তাদের এক প্রতিবেদনে বলছে, ক্যামিকেল উইপনস কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী ১৯১তম দেশ মিয়ানমার। এই কনভেনশন কার্যকর হয়েছে ১৯৯৭ সালে। এ কনভেনশন সবাই মেনে চলছে কিনা তা তদারকি করে ওপিসিডব্লিউ।

 

লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার বিষয়ক গ্রুপ ক্রিশ্চিয়ান সলিডারিটি ওয়ার্ল্ডওয়াইড ২০০৫ সালে অভিযোগ করে যে, কারেন সম্প্রদায়ের বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে মিয়ানমারের সাবেক সামরিক জান্তা। আরেকটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার কারণে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মিয়ানমার যখন ক্রমাগত চাপের মুখে পড়ছে তখনই তাদের রাসায়নিক অস্ত্রের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তা থমাস ডি নান্নো ওই অভিযোগ করলেন।

 

২০১৭ সালে রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও স্থানীয় বৌদ্ধরা নৃশংস নির্যাতন শুরু করে। এর ফলে জীবন বাঁচাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন কমপক্ষে ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা। এ অভিযোগে হেগে অবস্থিত জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে মামলা হয়েছে মিয়ানমারের বেসামরিক নেত্রী অং সান সুচি সহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। এ মামলার শুনানি শুরু হওয়ার কথা ডিসেম্বরে। শুনানিতে মিয়ানমারের পক্ষ অবলম্বন করে বিবাদীপক্ষের নেতৃত্ব দেবেন অং সান সুচি নিজে।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*