প্রাণের ৭১

মৃত্যুর অমরত্ব ভাবনায় খুশী’তে যখন আত্মহারা। রাজীব দাস

আসলে বলার কিছুই নেই।পুলিশ বাহিনী জন্মের পর হতে জ্বলছে??ভারতবর্ষ,পাকিস্তান ও বাংলাদেশ। সময়ের পরিক্রমায় হল্ট,সাবধান,স্যালুট এর উৎকর্ষতায় প্রথমে পুলিশ বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে ইংরেজদের আজ্ঞাবহ হয়ে হত্যা করেছে,ভারতবর্ষের কীর্তিমান বিপ্লবীদের।ক্ষুদিরাম, মাষ্টার দা সূর্যসেন, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ,হতে শুরু করে অগনিত বৃটিশ বিরোধীদের পুলিশের হাতে চরম নির্মমতায় নিহত হয়েছেন।সে সময়ে ভারত উপমহাদেশে পুলিশ চরম নিষ্ঠুরতার জাজ্বল্যমান মূর্তিমান আতংক হিসেবে জনগনের চিন্তনে,পটে প্রকটিত হতো।ভারতবর্ষের জনগন একবাক্যে পরিচয়টা পেলো,পুলিশ মানেই খারাপ,পুলিশ মানে নিষ্ঠুর,পুলিশ মানেই নির্যাতনকারী????
বৃটিশ মুক্ত হলো ভারতবর্ষ, জন্ম হলো,পূর্বপাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের।শাসক শ্রেনী পশ্চিম পাকিস্তানের। শুরু হলো পুলিশিংয়ের নব যাত্রা–
পুলিশিং সেই বৃটিশধারার নির্মমতার চরম উৎকর্ষতায় আরো একধাপ এগিয়ে এবার শুরু হলো বাঙ্গালী নির্যাতন। কথায় কথায় বাঙ্গালীদের গ্রেপ্তার,হাজতবাস,নির্যাতন বৃটিশদের stupid, Bloody এর সাথে নতুন গালি যোগ হলো যা অতিমাত্রায় অশ্লীল হওয়ায় প্রকাশ করা গেলোনা।নির্বিচারে বাঙ্গালীদের ভাষা আন্দোলন হতে শুরু করে চুড়ান্ত বিজয় পর্যন্ত পাকিস্তান পুলিশের হাতে নিহত, আহত,পঙ্গুত্ব বরণ করলো লক্ষ লক্ষ নিরীহ বাঙ্গালি।
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ হয়েছে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে বাঙ্গালী পুলিশের হাতে।অনেক পুলিশ অফিসার ও ফোর্স না পালিয়ে দেশকে ভালোবেসে নিজেদের বৈযয়িক সুখ, স্ত্রী, সন্তান,পিতা মাতার মায়া স্নেহ ত্যাগ করেই দেশমাতৃকার সেবায় শহীদ হয়েছেন।তাঁদের রক্তের বিনিময়ে আমার পেলাম বাংলাদেশ।
একটু ভেবে দেখুন,বৃটিশদের হতে শুরু হওয়া নির্মম পুলিশিং শেষ হলো,স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ নামের একটি দেশ বিশ্বমানচিত্রে সৃজিত হবার পরে।
নতুন অবকাঠামো ও জনবান্ধব পুলিশিং ধারায় শুরু হলো বাংলাদেশ পুলিশ।হাঁটি হাঁটি পা করে নবরুপে সৃজনীতে গড়া পুলিশ বাহিনী আবারো হোঁছট খেলো,জাতির জনক কে নির্মমভাবে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে।
আবারো সেই আগের পুলিশিং—-
এর পরের পুলিশিং সবার জানা,সবাই পুলিশ কে দোষারোপ করি।কিন্তুু একটিবার ভেবে দেখা দরকার নয় কি?আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে পুলিশিং কি এদেশে হয়?উন্নত প্রযুক্তি,দক্ষতা আনয়নের জন্য প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষন,ফরেনসিক ল্যাব,প্রতিটি ক্ষেত্রে লজিস্টিক সাপোর্টার্স, বিন্যাস,জনগনের ও পুলিশের দৃষ্টিভঙ্গির অনুপাতিক গড়হার,তাৎক্ষনিকভাবে নিদ্দিষ্টতায় আইনী প্রয়োগ, খুবি জরুরী।
আধুনিক জনবান্ধব পুলিশিংয়ের সফলতার প্রথম শর্ত হলো,জনগন পুলিশ একে অপরের পরিপূরক হয়ে,পুলিশিং করবে।প্রচলিত আইন কানুন মান্য করবে। সবার দৃষ্টিভঙ্গির বদৌলতে পাল্টে যাবে পুলিশিং সেবা পাবে জনগন।
কিন্তুু আমরা নিজ নিজ অবস্হান হতে দেশকে, দশকে সমাজকে কতোটুকু বিলিয়ে দিতে পেরেছি?সবাই আমরা ক্ষনে ক্ষনে চিত্র বিচিত্র হচ্ছি,বহুরুপীর কাতারে এ একবিংশ শতাব্দীতে এসে ও ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে ক্রমাগত আইন কানুন অমান্য করে চলেছি।কথার ইন্দ্রজালে মায়ামুগ্ধ করে নিজের স্বার্থসিদ্ধি করে সমাজকে দেশকে নিজেকে ও ভবিষ্যত প্রজন্মকে পিছনে ঠেলে দিচ্ছি??
ক্রমাগত নিজ, স্ত্রী, নিস্পাপ সন্তানদের কে মিথ্যে শিশ্পের নান্দনিক ছোঁয়ায় ভুলিয়ে মিথ্যাচারের অভিধান উপহার দিয়ে চলেছি প্রতি ক্ষনে,প্রতি ক্ষেত্রে।
আর কতো আমাদের ক্রমাগত ভন্ডামি বর্ণচোরা ব্যক্তিত্ব আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম দেখবে????
নিজের ভন্ডামী মিথ্যের ফুলঝুড়ি আর কদাকার ব্যাক্তিত্ব ধারন না করে একটি স্বচ্ছ ব্যক্তিত্বের প্রতিচ্ছবি আমরা স্ব স্ব অবস্হান হতে দেশকে উপহার দিতে পারিনা??
পুলিশ রাষ্ট্রের এজেন্সী,সাংবিধানিক,আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদ,দেশের প্রচলিত আইন কানুন সহ রাষ্ট্রের প্রায়োগিক আদেশ পালনে বাধ্য।
পুলিশ এ দেশের সন্তান,বাবা মা ভাই বোন।জনতাই পুলিশ,পুলিশই জনতা,জনগনের ও পুলিশের আদর্শিক ভাবধারায় আনুপাতিক হারের সামান্যতম বৈপরীত্য ঘটলেই সমাজের ভারসাম্যের তারতম্য ঘটে।
উন্নত বিশ্বের পুলিশের আমরা তারিফ করি,বিভিন্ন সেমিনারে, সিম্পোজিয়ামে বাংলাদেশের পুলিশকে নিয়ে চৌদ্দগোষ্ঠি উদ্ধার করি,লোমখাড়ানো চে গুয়েভারা মার্কা বক্তৃতা করি,কিন্তু আমারটা আর বলিনা—-
বিদেশ গেলে যে,তল্লাশীর নামে,একেবারে আদিম মানুষ বানায়!!গাড়ির গতির তারতম্যতায় যখন ফাইন গুনি,লম্বা লাইন সিস্টেমস যখন গর্ব করি,বিদেশের বাড়িতে কথা বলি নিম্নস্বরে?পাছে আবার পুলিশ এসে আবার থানায় নিয়ে যায়?মিথ্যার কারনে জেল জরিমানা,রাস্তায় সমাবেশ,জড়ো হলেই পুলিশের হ্যান্ডশেকের বদলে হ্যান্ডকাপ, রাস্তা নোংরা করা,পিক,জুতামারা,ভেজাল,নকল, হুমকি, গালি এমন কি সামান্যতম আইনের পরিপন্হি কাজে জেল জরিমানা,সংশোধন।
আমাদের দেশে ও এসব আইন চলমান।কিন্তু আপনারা, আমরা,তেনারা কেউ কি পালন করি,মান্য করি??????
না না না কারন যা+ইচ্ছে+তাই আপনি করবেন।পুলিশ কিচ্ছু বলবেন না,করবেন না??তাতেই কি আপনারা খুশী??যদি খুশী হয়ে থাকেন,আপনি কি সুনাগরিক?আর যদি পুলিশ বাঁধা না দেয়? পুলিশ কি তাঁর উপর রাস্ট্রের অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছে??না পুলিশ পালন করেনি।
এ একবিংশ শতাব্দীতে এসে ও আমরা যদি নাগরিক দায়িত্ববোধ ও নিজেদের স্ব স্ব অবস্হান হতে ব্যক্তিত্বের প্রতিধ্বনি প্রষ্ফুটিত করতে না পারি,শুধুমাত্র বদ্ধমুল হিংসাত্নক ধারনার বদৌলতে বর্তমান আধুনিক জনবান্ধব পুলিশিং সহযোগীতার বদলে,জনবান্ধব পুলিশিংয়ের সফলতার উড়ন্ত যাত্রায় বাধাগ্রস্ত হয়,তবে সমাজে ভারসাম্যের বদলে তৈরী হবে ভারসাম্যহীন। সমাজে যোগ হবে অস্হিরতা,জনগনের সেতুবন্ধনে নতুনভাবে যোগ হবে বৈরীতা।
তাই পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ পারস্পরিক বিশ্বাসে দেশ,সমাজ,জাতি এগিয়ে যাবে অনেকদুর।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*