প্রাণের ৭১

সাকিবের মন্তব্যটা মনঃপূত হয়নি!

সাকিব আল হাসান স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছেন, এই সিরিজে আফগানিস্তানই ফেবারিট। কিন্তু ক্রিকেট বিশ্লেষকেরা কী বলেন? বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের সঙ্গে কি তাঁরা একমত?
এই সিরিজে কারা ফেবারিট, এমন প্রশ্নে সাকিব আল হাসান সরাসরি বলেই দিয়েছেন, ‘যেহেতু আফগানিস্তান আমাদের চেয়ে র্যাঙ্কিংয়ে (টি-টোয়েন্টিতে) দুই ধাপ এগিয়ে, আমি বলব ওরাই ফেবারিট।’ র্যাঙ্কিংয়ে যতই আফগানরা এগিয়ে থাকুক, সাকিবের সঙ্গে অবশ্য একমত নন বাংলাদেশ দলের সাবেক দুই অধিনায়ক গাজী আশরাফ হোসেন ও আমিনুল ইসলাম।
আইসিসি টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ আছে দশে। আফগানিস্তান সেখানে আটে। তবে নির্দিষ্ট একটি সংস্করণের র্যাঙ্কিং দেখে পুরো দলের শক্তিমত্তা বিচার করতে রাজি নন গাজী আশরাফ, ‘অধিনায়ক সাকিবের এ মন্তব্যটা আমার ঠিক মনঃপূত হয়নি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের যে পরিচিতি, আফগানিস্তানের চেয়ে সেটি অনেক বেশি। ক্রিকেটের তিন সংস্করণে যারা বাংলাদেশ দলে দীর্ঘদিন খেলে আসছে, তাদের বেশির ভাগই এ সিরিজটা খেলবে। এখন ছোট সংস্করণে একটি নিরপেক্ষ ভেন্যুতে নিজেদের সামর্থ্য প্রয়োগের বিষয়।’
গাজী আশরাফের কথারই যেন পুনরাবৃত্তি করলেন আমিনুল। বর্তমানে আইসিসিতে কর্মরত বাংলাদেশের সাবেক এ অধিনায়ক অস্ট্রেলিয়া থেকে মুঠোফোনে বললেন, ‘আমার মনে হয় অধিনায়ক হিসেবে (সাকিবের) এটা বলা ঠিক হয়নি। এটা মনস্তাত্ত্বিক কোনো ব্যাপার কি না জানি না। যখন এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের উন্নয়ন কর্মকর্তা ছিলাম, আফগানিস্তানকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। তাঁদের অনেক তরুণ প্রতিভাবান খেলোয়াড়ের খবর পেতাম। ওরা অবশ্যই প্রাণপণ চেষ্টা করবে। তারা ভাবে, এই মুহূর্তে যে টেস্ট খেলুড়ে দলটিকে হারানোর সামর্থ্য রাখে, সেটি হচ্ছে বাংলাদেশ। ২০১৫ বিশ্বকাপেও তারা চেষ্টা করেছে হারাতে। তবুও বলব, বাংলাদেশ যথেষ্ট এগিয়ে।’
র্যাঙ্কিংয়ের বিষয়টি যদি বড় করে না–ও দেখা হয়, এটি নিশ্চয়ই মাথায় রাখতে হবে, আফগানিস্তান খেলবে নিজেদের পরিচিত কন্ডিশনে। আফগান দলের শক্তিশালী বোলিং আক্রমণ নিয়েও ভাবতে হবে বাংলাদেশকে। আফগানিস্তানকে ফেবারিট না বললেও গাজী আশরাফ মানছেন, সিরিজটা কঠিনই হতে যাচ্ছে সাকিবদের জন্য, ‘কঠিন সিরিজ হতে যাচ্ছে এটি। ৩-০ ব্যবধানে যদি বাংলাদেশ জেতে, খুব ভালো। তবে ২-১ ব্যবধানে জিতে এলেও বলব খুব ভালো একটা সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। আমাদের সময়ে ভাবতাম, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যদি কাউকে হারাতে পারি, সেটি নিউজিল্যান্ড কিংবা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। এখন আফগানিস্তান একই চিন্তা করছে। তারা ভাবছে, যদি হারাতে পারে বাংলাদেশকেই হারানো সম্ভব। এই একটা জায়গায় মানসিকভাবে ওরা চাঙা থাকবে। বাংলাদেশের কাছে আফগানিস্তান হারলে তাদের কেউ কিছু মনে করবে না। টি-টোয়েন্টিতে যে কেউ হারতে পারে। তবুও বাংলাদেশ হারলে আমাদের খারাপ লাগবেই। আবার জিতলে সাময়িক আনন্দ হলেও খুব খুশি হওয়ার কিছু নেই।’
আমিনুল আত্মবিশ্বাসী, বাংলাদেশ হতাশ করবে না। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়া এই অধিনায়ক মনে করেন, দেরাদুন থেকে সাকিবরা ফিরবেন সাফল্যের হাসি হেসেই, ‘নিদাহাস ট্রফিতে বাংলাদেশ যে ক্রিকেট খেলেছে বা বাংলাদেশ যে মানের ক্রিকেট এখন খেলছে, সে অনুযায়ী খেললে এ সিরিজ নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ দেখি না। বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে আছে, পরিণত দল। আশা করি, সিরিজটা জিতবে তারা। যদিও ছোট সংস্করণে খেলা। এই সংস্করণে দুই দলের ব্যবধান থাকে কম। খেলাটা সাধারণত শেষ ওভারে যায়। এ সময়ে নিজেদের কীভাবে সামলাচ্ছে, এটা একটা দেখার বিষয় হবে। তবুও বলব, আমরা আফগানিস্তানের চেয়ে এগিয়েই আছি।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*