প্রাণের ৭১

স্কুলে কান ধরে উঠবসের সেই শাস্তি আজ মস্তিষ্কের সেরা ব্যায়াম! (ভিডিও)

যদি প্রশ্ন করা হয়- মাত্র মিনিট তিনেকের ব্যায়ামে মস্তিষ্ককে আরো কর্মঠ করতে চান? স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিসহ সুপারব্রেনের অধিকারী হতে চান? এসব প্রশ্নের জবাবে যেকোনো মানুষ এককথায় ‘হ্যাঁ’ বলবেন। আমেরিকানরা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির জন্যে গবেষণার মাধ্যমে আবিষ্কার করেছে ‘সুপারব্রেন ইয়োগা’। মাত্র ৩ মিনিটের ইয়োগা। আর এতেই কেল্লাফতে!

তবে এখানে দারুণ মজার এক বিষয় আছে। আপনি হয়তো ভাবছেন, ইয়োগাটি খুবই জটিল ও কুটিল টাইপের কিছু হবে। মোটেও তা নয়। স্রেফ কিছু সময় নিজের কান ধরে উঠবস করতে হবে! হ্যাঁ, ছোটাবেলায় স্কুলে শিক্ষকরা যে শাস্তি আমাদের দিতেন, তাই আজ আমেরিকানদের কাছে সুপারব্রেন ইয়োগা।

স্কুলে শিক্ষকের কানমলা খাননি এমন মানুষ কমই আছেন। আবার দুষ্টুমি করলেই কান ধরে উঠবস করানোর শাস্তি তো অতিপরিচিত ঘটনা। কিন্তু এই শাস্তিই যে মস্তিষ্কের শক্তি বৃদ্ধি করে তা কে-ই বা জানতো?

ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার রেডিওলজিক্যাল সায়েন্সেস বিভাগের বিশেষজ্ঞ ড. কোয়ি পি. জোন্সের গবেষণায় বলা হয়, কান ধরে উঠবস আসলে এক ধরনের ব্যায়াম। এ কাজে দেহের শক্তির কেন্দ্রকে ব্যবহার করা হয়। এর মাধ্যমে শক্তি শোষণ, হজম এবং দেহের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে এই শক্তির আধারগুলো আসলে আকুপাংচার পয়েন্ট। আকুপ্রেসারের এই শক্তি আসলে মস্তিষ্ক, চোখ, কপাল, মুখ, কান ইত্যাদি স্থানে ক্রিয়াশীল হয়। কান ধরা বা হালকাভাবে টানার মাধ্যমে আকুপ্রেসার পৌঁছে দেওয়া হয় মস্তিষ্কে। এই ব্যায়ামের পর ইইজি স্ক্যানে দেখা গেছে, মস্তিষ্কের ডান ও বাম গোলার্ধের এলোমেলো অবস্থা নিমিষেই গোছালো হয়ে যায়।

ঠিকমতো করা হলে সুপারব্রেন ইয়োগার মাধ্যমে দেহের নিচের দিকের শক্তির আধারগুলো অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আধারের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এই শক্তি ক্রিয়াশীল হয় হৃদযন্ত্রে। ফলে শান্তভাব চলে আসে এবং দেহ-মনে শান্তি ছড়িয়ে পড়ে। এতে করে বুদ্ধিমত্তা এবং সৃষ্টিশীলতা বাড়ে।

মানুষ এখন এমন এক যুগে বাস করছে যখন সুস্থ থাকার জন্যে বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সুপারব্রেন ইয়োগার মাধ্যমে মস্তিষ্ক উন্নত করা যায়। এতে প্রতিদিনের অনেক সমস্যাই মিটে যাবে। কাজেই কান ধরে উঠবসে আর লজ্জার কিছু নেই। বরং এর মাধ্যমে আপনি হয়ে উঠবেন আরো স্মার্ট এবং মানসিকভাবে ভারসাম্যপূর্ণ। এমনটাই বলছে গবেষণা।

পদ্ধতি
১. প্রথমেই কানে কোনো অলংকার থাকলে তা খুলে ফেলুন।
২. মুখ বন্ধ রেখে জিহ্বা ঠোঁটের সঙ্গে ছুঁয়ে রাখুন।
৩. এবার বাম হাতে ডান কান এবং ডান হাতে বাম কান ধরুন। কানের লতি যাকে বলি সেখানে ধরবেন। উভয় কাজে বুড়ো আঙুল সামনের দিকে থাকবে।
৪. এবার নাক দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস নিন এবং বসে পড়ুন ধীরে ধীরে।
৫. শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে একইগতিতে দাঁড়িয়ে পড়ুন।
৬. ধীরে ধীরে একই কাজ অন্তত ১৪ বার করুন। মোটামুটি মিনিট তিনেক করতে পারলে মস্তিষ্কের নিউরনগুলো সর্বোচ্চ শক্তি ফিরে পাবে।



« (পূর্বের সংবাদ)



মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*