প্রাণের ৭১

১০ বছর ধরে চলছে মেসি-রোনালদোর শাসন এরপর কে ?

বিশ্ব ফুটবলে গত দশ বছর যাবত বর্ষ সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন সময়ের দুই সেরা খেলোয়াড় লিওনেল মেসি ও সি আর সেভেন খ্যাত ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। উভয়েই পাঁচ বার করে জিতে নিয়েছেন ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলারের খেতাব। এখনো পর্যন্ত দুর্দান্ত প্রতাপে শাসন করে চলেছেন ফুটবল বিশ্বকে। থামার কোন লক্ষন এখনো দেখা যাচ্ছেনা। এই দু’জনের বদৌলতে এখন সেরা খেলোয়াড় নির্বাচন প্রক্রিয়াকেও করে দিয়েছে আরো দুরূহ। আগামী বৃহস্পতিবার রাশিয়ায় শুরু হচ্ছে ফিফা বিশ্বকাপের ২১তম আসর। যেখান থেকে উঠে আসতে পারেন নতুন কেউ। এখন দেখার বিষয় এই দুই কিংবদন্তীর উত্তরসুরি হিসেবে এগিয়ে আসছে কারা। এই তালিকায় এগিয়ে রয়েছে ৫ তারকা।
দ্য ক্রাউন প্রিন্স : নেইমার (ব্রাজিল)
এই স্টাইলিস্ট ফুটবলার গত গ্রীস্মে বার্সেলোনা ছেড়ে প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ে (পিএসজি) যোগ দিয়েই বনে গেছেন সর্বকালের সবচেয়ে দামী ফুটবল তারকা। মেসি ও রোনালদোর মতই ‘বিখ্যাত’ ক্যারিয়ার উপভোগ করছেন।
শক্তিশালী ড্রিবলিং, বিচক্ষণ খেলা, অসাধারণ সমাপ্তি, চিত্তাকর্ষক ক্রীড়া শৈলিসহ বিশ্ব সেরার আসন দখলের সব রকম যোগ্যতাই নেইমারের রয়েছে। ইনজুরির কারণে ২০১৪ বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে জার্মানীর বিপক্ষে খেলতে না পারলেও, দুই বছর পর অলিম্পিকে পুরুষ বিভাগের ফুটবলের স্বর্নপদকটি নেইমারের নেতৃত্বেই ঘরে তুলেছে ব্রাজিল। এখন রাশিয়া বিশ্বকাপ জয়ের জন্য বদ্ধ পরিকর এই ব্রাজিলীয় সুপার স্টার।
দ্য শুটিং স্টার : মোহাম্মদ সালাহ (মিশর)
রোমা থেকে ভিারপুলে যোগ দেয়ার আগে মোহাম্মদ সালাহকে একজন ভাল ফুটবলার হিসেবে বিবেচনা করা হতো। তবে মোটেও তাকে ব্যতিক্রমী ওইঙ্গার হিসেবে আমলে নেয়নি কেউ। জার্গেন ক্লাপের অধীনে খেলার ধরনে নিজেকে অন্য রকম অবস্থানে নিয়ে গেলেন সালাহ। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এ যাবৎকালের সেরা ফিনিশার হিসেবে। সর্ব শেষ মৌসুমে এই মিশরীয় দখল করেছেন প্রিমিয়ার লীগের সর্বাধিক গোলদাতার আসন। যা ব্যক্তি সালাহর সুনাম বহুগুন বাড়িয়ে দিয়েছে।
সালাহর দক্ষতার কারণে এবারের বিশ্বকাপ ফুটবলের চুড়ান্ত পর্বে খেলার সুযোগ লাভ করেছে মিশর। এর মাধ্যমে দীর্ঘ ২৮ বছরের অপেক্ষার ইতি ঘটেছে ফারাওদের। লিভারপুলের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে খেলতে গিয়ে প্রতিপক্ষ রিয়াল মাদ্রিদের ডিফেন্ডার সার্জিও রামোসের সঙ্গে বল দখলের সময় ইনজুরির কবলে পড়া সালাহ যদি যথা সময়ে সুস্থ হতে পারনে তাহলে রাশিয়ায় যে চমক দেখাতে পারবেন তাতে কোন সন্দেহ নেই। যার ফলে তিনিও হয়ে উঠতে পারেন ফিফা বর্ষসেরা পুরস্কারের জোড়ালো দাবীদার।
দ্য এসিস্ট কিং: কেভিন ডি ব্রুইনা বেলজিয়াম)
এই খেতাবটি অনায়াসেই ব্যবহার করা যায় এডেন হেজার্ডের উপর। যার খেলার ধরন সতীর্থদের চেয়েও দর্শনীয়। যা তাকে বিশ্ব সেরা খেলোয়াড়দের সংক্ষিপ্ত তালিকায় পৌঁছে দিয়েছে। তবে ডি ব্রুইনা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ম্যানচেস্টার সিটি এবং নিজ দেশের জাতীয় দলের সতীর্থদের যে পরিমাণ বলের যোগন দিয়েছেন এবং গোলে সহায়তা করেছেন তা হিসাবেরও বাইরে। এমন ধারাবাহিকতায় তিনি ফুটবলকে নিয়ে গেছেন বহু উচ্চতায়। আসন্ন বিশ্বকাপে যদি বেলজিয়াম তাদের নামের সুবিচার করে মনোমুগ্ধকর কিছু একটা দেখাতে পারে, তাহলে চলতি বছর ফিফা বর্ষসেরা পুরস্কারের তালিকায়র শীর্ষে পৌঁছে যাবে ব্রুইনের নাম।
দ্য মাস্টার অফ আন্ডারেস্টেটমেন্ট: হ্যারি কেন (ইংল্যান্ড)
অ্যালান শিয়ারের পর এই প্রথম বিশ্বমানের স্ট্রাইকার হিসেবে হ্যারি কেনকে পেয়েছে ইংল্যান্ড। ১৯৯৬ সালে ফিফা বিশ্বসেরা খেলোয়াড় নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে তৃতীয় হয়েছিলেন অ্যালান। তারই চারিত্রিক বৈশিস্ট্যের প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে ২৪ বছর বয়সি কেনের মধ্যে। টাইমিংয়ে দারুন জ্ঞানসম্পন্ন , মানষিক দৃঢ়তা এবং কঠোর পরিশ্রম সব কিছুই রয়েছে তার মধ্যে। যে কারণে আসন্ন রাশিয়া বিশ্বকাপের আগমুহুর্তে তার হাতেই নেতৃত্বের ঝান্ডা তুলে দিয়েছেন ইংল্যান্ড জাতীয় দলের প্রধান কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। অনেকে তার দল বদল নিয়ে ব্রাজিলীয় সুপার স্টার নেইমারের পর্যায়ের গুজব ছড়াতে শুরু করেছে।
দ্য ইয়ং প্রডিজি: কিলিয়ান এমবাপ্পে (ফ্রান্স)
মাত্র ১৯ বছর বয়সেই এমবাপ্পে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে বর্ষ সেরা ফুটবলারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন। তিনি যে শুধু ২০১৮ বিশ্বকাপে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন তা নয়, বরং পরবর্তী বেশ কয়েক বছর এমন ধারা ধরে রাখবেন। এই বয়সেই তিনি খুবই বিচক্ষণ এবং পরিণত গোলদাতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। মোনাকোর হয়ে লীগ ওয়ান ও উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগে এর প্রমাণ তিনি দিয়েছেন। এখন প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ের হয়ে নিজেকে পরের ধাপে পৌঁছে দেয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন এমবাপে।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*