আজ তোবারক হোসেন শাকিলের ১ম মৃত্যু বার্ষিকী
আজ ১৬ মে ডাক্তার তোবারক হোসেন শাকিলের ১ম মৃত্যু বার্ষিকী, ২০১৭ইং সালে আজকের এইদিন আমাদের সকলকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছে। শাকিল এমবিবিএস শেষ করতে পারেনি, ডাক্তার হতে পারে নি কিন্তু সে আমাদের কাছে ডাক্তার। সে সারা দেশে মানুষের ভালবাসা আদায় করতে পেরেছিল, সারা দেশে তার অগনিত বন্ধু, শুভাকাঙ্খী রয়েছে।
দেখতে দেখতে একটা বছর চলে গেছে, আমার স্মৃতিতে এখনো সেই আত্ববিশ্বাসী মুখটি ভেসে উঠে।
আজ যদি বেঁচে থাকতো অনন্যদিনের মতো শাকিলের ব্যাস্ততম দিন হতো। হয়তো তারে ফোন করলে ফোনটা কেটে দিয়ে মেসেজে বলতো “ভাই ব্যাস্ত আছি পরে কল দিব”
এমনটা হওয়ার কথা ছিল কিন্তু হচ্ছে না। বাংলাদেশে বাড়ীতে থাকা অবস্থায় আমি প্রায় সময় শাকিলের সাথে থাকতাম, কথা বলতাম, বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ করতাম।
বগুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এমবিবিএম এর ছাত্র ছিল তোবারক হোসেন শাকিল। ছোট বেলা থেকে তুখোড় মেধাবি ছিল। পড়ালেখার ২য় বছরে সে দুরারোগ্য লিভার ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়। প্রথমে রোগটি সাধারন মনে হলেও পরবর্তীতে রোগটি বেড়ে যায়।
শাকিলের সাথে আমার অনেক স্মৃতি আছে,২০১৪ ইং সালে শাকিল যখন ঢাকা মেডিকেল ভর্তি ছিল তখন ওর সাথে কিছুদিন হাসপাতালে ছিলাম। এতো দুরারোগ্য রোগের পরেও শাকিলের আত্ববিশ্বাস দেখার মতো এ যেন আল্লাহর দেওয়া শক্তি। বারবার অপারেশন এতো এতো ইনজেকশন, স্যালাইন ও দৈনিক ২ ব্যাগ রক্ত শরিলে গ্রহন পরার পরও দেখতাম সে অন্য সবার মতো সুস্থ স্বাভাবিক ভাবে সবার সাথে কথা বলছে। আমার কাছে মনে হয় তোবারক হোসেন শাকিল সুপার হিউম্যান।
২০১৫ইং থেকে ২০১৬ ইং অথ্যাৎ দেশ ত্যাগের পূর্বে খুব নিয়মিত আড্ডাবাজ হয়ে গেছিলাম এলাকার ছোট ভাই শুভ দত্ত, আলী হায়দার, রবিন মজুন্দার, তারেক মামা ও তার অনন্য বন্ধুরাও আসতো। বাড়ীর সামনে রেল ব্রিজ, খাল পাড়, নদীর ধার, কুমড়া ক্ষেত ও সাহাবউদ্দিন ভাইয়ের দোকানে তুমুল আড্ডা হতো, কেরাম খেলা হতো। শাকিল আমাদের আড্ডায় প্রায় অংশ গ্রহন করতো সে সবার সাথে যেভাবে মিসতো যে হঠাৎ পরিচিত অপরিচিত কেউ দেখলে বুঝার উপায় ছিল না যে সে অসুস্থ।
সম্ববত ২০১৭ইং জানুয়ারীর ১২ তারিখে তোবরক হোসেন শাকিল চিকিৎসার জন্য ভারতের দিল্লিতে যান সেখানে আপোলো হাসপাতালে ওর লিভার প্রতিস্থাপন হয়, অপারেশন সফল হয়, ওর মা লিভার দান করে। হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর ১৪ এপ্রিল ১০১৭ ইং সুস্থ হয়ে বাংলাদেশে আসে।
নতুন জীবন পাওয়ার আনন্দে সে খুব উচ্ছাসিত হয়ে পড়ে। আবার নতুন করে পড়া লেখা শুরু করার জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকে। বগুড়াতে মেডিকেলে যাবার জন্য প্রস্তুুতি নিতে থাকে।
একটা মেজর অপারেশন হওয়ার পর কমপক্ষে ৬ মাস থেকে ১ বছর খুব নিয়ম মেনে ঔষুদ খাওয়া ও চলাফেরা নিয়ন্তণ করে চলতে হয়। ফোনে কথা বলার সময় তাকে কথা গুলো বলতাম।
গত বছর ২০১৭ইং মে মাসের ১ম সপ্তাহের শেষ দিকে সে খুব অসুস্থ হয়ে যায়, সাথে সাথে ঢাকাতে নিয়ে যাওয়া হয় পরবর্তীতে সবায়কে কাঁদিয়ে মে ১৬ তারিখে না ফেরার চলে যায়।
আমি মরহুম তোবারক হোসেন শাকিলের আত্তার শান্তি কামনা করছি। তার ১ম মৃত্যু বার্ষিকীতে আমি ও প্রানের”৭১নিউজ এর পক্ষ থেকে গভীর শোক শ্রদ্ধ্যাঞ্জলি জ্ঞাপন করছি।
মোঃ শামসুল আরিফ শিমুল
প্রকাশক ও সম্পাদক
প্রানের”৭১ নিউজ
১৬ই মে ২০১৮ইং