স্নিগ্ধা ভাল আছে, কারাগারে আত্মহত্যা করেছেন প্রেমিক কামরুল
‘হাইসিকিউরিটি’ রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে নিজ কক্ষে আত্মহত্যা করেছেন আইনজীবী রথীশ চন্দ্র ভৌমিক হত্যা মামলার প্রধান আসামি কামরুল ইসলাম।
শনিবার ভোরে গলায় চাদর পেঁচিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন বলে নিশ্চিত করেছেন রংপুর কারাগারের জেলার আমজাদ হোসেন। প্রথমে কারাকর্তৃপক্ষ তার হৃদরোগের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছিল।
পরে অবশেষে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার আমজাদ হোসেন অন্য বন্দিদের তথ্যমতে জানান, কামরুল ইসলাম ভোরে উঠে ওজু করে নামাজ পড়েন। এ সময় তিনি কাঁদছিলেন।
পরে কামরুলের সঙ্গে থাকা অন্য দুই বন্দি নামাজের জন্য অজু করতে গেলে তিনি নিজের গায়ে জড়ানো চাদর দিয়ে তৈরি করা দড়ি দিয়ে জানালার রডের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। এ সময় তার গোঙানির শব্দ শুনে অন্য বন্দিরা তাকে উদ্ধার করে জেলারকে খবর দেন। পরে কারা কর্তৃপক্ষ কামরুলকে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে যাওয়ার ১৫ মিনিট পর চিকিৎসক ভোর সাড়ে ৫টা কামরুলকে মৃত ঘোষণা করেন।
কামরুলের মৃত্যুর শুনে একই কারাগারে থাকা প্রেমিকা স্নিগ্ধা ভৌমিক কি প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন জানতে চাইলে জেলার আমজাদ হোসেন বলেন, ‘ কামরুলের আত্মহত্যার খবর জানার পর স্নিগ্ধার কোনো প্রতিক্রিয়া ছিল না।’
জেলার বলেন, ‘আমরা স্নিগ্ধাকে নিয়ে চিন্তিত ছিলাম। কারণ তিনি প্রায় বলতেন, এ জীবন ভালো লাগে না। আমি আত্মহত্যা করব। তার এ ধরনের কথায় আমরা ওই কক্ষে আরও পাঁচজন পুলিশ নিয়োগ দিয়েছি।’
রংপুর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোখতারুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ময়নাতদন্ত ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষে লাশ কামরুলের পরিবারের কাছে হস্থান্তর করা হবে।
রমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. অজয় রায় মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, হাসপাতালের আনার কিছুক্ষণ পরেই কামরুল মারা যান।
উল্লেখ্য, বাবু সোনা হত্যা মামলাটি রংপুর জেলা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলছিল। মামলার পর থেকে কামরুল ও অপর আসামি বাবু সোনার স্ত্রী কামরুলের প্রেমিকা স্নিগ্ধা সরকার ওরফে দীপা জেলহাজতে রয়েছেন।
গত ২৯ মার্চ রাতে বাবু সোনাকে ১০টি ঘুমের ওষুধ খাইয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এরপর তার লাশ তাজহাট মোল্লাপাড়ায় কামরুলের ভাইয়ের নির্মাণাধীন বাড়ির ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখা হয়।
৩ এপ্রিল রাতে বাবু সোনার স্ত্রী দীপা ভৌমিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব আটক করে। তিনি এ হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন এবং লাশের অবস্থান সম্পর্কে তাদের জানান। সেই সূত্র ধরে বাবু সোনার গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।