প্রাণের ৭১

ঐক্যফ্রন্টে মিনি ক্যু,শেখ হাসিনার জন্যে একটি সতর্কবাণী।।

ঐক্যফ্রন্টে মিনি ক্যু এবং শেখ হাসিনার জন্য একটি সাবধান বাণী

আবদুল গাফফার চৌধুরী

‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যখন সরকারের সঙ্গে সংলাপে রত, তখন তাদের মধ্যে সকলের অলক্ষে একটি মিনি ক্যু ঘটে গেছে। এই ক্যুটি ঘটেছে নীরবে। প্রথম ক্যুয়ের মতো সরবে নয় এবং মিডিয়াতেও তা নিয়ে কোন হৈচৈ হয়নি। ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হওয়ার সূচনাতেই বড়সড়ো প্রথম ক্যুটি হয়। তখন ফ্রন্ট থেকে একজন শীর্ষ নেতা ডাঃ বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে দাওয়াত দিয়ে এনে ড. কামাল হোসেনের বাসায় বসিয়ে রেখে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের চেম্বারে ডাঃ চৌধুরীর অজ্ঞাতেই ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে ফেলা হয়েছিল। কারণ, জামায়াতের সঙ্গ না ছাড়লে ডাঃ চৌধুরী বিএনপির সঙ্গে ঐক্য গড়তে রাজি ছিলেন না। এটা নিয়ে পত্রিকায় লেখালেখি হয়েছে।

এখন দ্বিতীয় ক্যুটি ঘটেছে নীরবে। জাসদের আসম আবদুর রব নিজেকে ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র বলে ঘোষণা করেছিলেন। বলেছিলেন, এখন থেকে একমাত্র তিনিই ঐক্যফ্রন্টের হয়ে কথা বলবেন। এই ঘোষণার পর মিডিয়ায় তাকেই ফ্রন্টের মুখপাত্র হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছিল। তিনিও সেভাবেই কথাবার্তা বলছিলেন। হঠাৎ শোনা গেল রব আর ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র নন। তাকে সরিয়ে মুখপাত্র হয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল নিজে। রব আর ফ্রন্টের মুখপাত্র নন। তার মুখ পুড়ে গেছে। এখন তিনি ফ্রন্টের একজন মুখপোড়া অন্যতম নেতা।

আমি আগেই লিখেছিলাম, ঐক্যফ্রন্টের সবচাইতে বড় শরিক বিএনপি। মূলত নাম পাল্টানো ব্যতীত এটা বিএনপি-জামায়াত বিশ দলীয় ঐক্যজোট ছাড়া কিছু নয়। ড. কামাল, রব প্রমুখ তাতে যোগ দিয়েছেন। বিএনপি তার কৌশলের রাজনীতির জন্য আপাতত ড. কামাল হোসেনকে নেতৃত্বে বসিয়েছে বটে, কিন্তু ফ্রন্টের আসল নেতা নেপথ্যের তারেক রহমান। ড. কামালের প্রয়োজন ফুরুলেই তাকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দিতে বিএনপি ক্ষণমাত্র দ্বিধা করবে না। তেমন কিছু ঘটলে ড. কামালকে হয়তো আসম আবদুর রবের মতো নীরব থাকতে হবে। মুখ খুলবার মতো মুখ তারও থাকবে না। বিএনপি ঐক্যফ্রন্টের সবচাইতে বড় শরিক। তারা ভোটের জোরে ফ্রন্টের ভেতর যা খুশি করার ক্ষমতা রাখে।

তাদের নিজেদের স্বার্থে যে কোন নেতা, তিনি যত প্রতিষ্ঠাবান নেতা হোন, তার সঙ্গে বিএনপি যে নির্দয় ও অশোভন আচরণ করতে বিবেকপীড়া অনুভব করে না, তার সবচাইতে বড় প্রমাণ ডাঃ বদরুদ্দোজা চৌধুরী। তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব ছিলেন। তাকে একবার রাষ্ট্রপতির পদ থেকে সরাবার সময় এবং এবার ঐক্যফ্রন্ট থেকে সরিয়ে রাখার ব্যাপারেÑ দু’বারই অসম্মান করা হলো। এমনকি ডাঃ চৌধুরীকে ফ্রন্টের বাইরে রাখার ব্যাপারে বিএনপিকে যিনি সবচাইতে বেশি সাহায্য দিয়েছেন বলে মিডিয়ার খবর, সেই ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন সম্পর্কে বিএনপির এখন ভূমিকা কি?

বিশাল দুর্নীতি ও হত্যা-সন্ত্রাসের মামলায় দ-িত নেতানেত্রীর মুক্তি দাবিতে বিএনপি যেখানে পাগল, সেখানে একটি মানহানিকর উক্তির মামলায় বিচারাধীন অবস্থায় জেলে বন্দী ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন সম্পর্কে তারা সম্পূর্ণ নীরব। তিনি গ্রেফতার হওয়ার সময় দায়সারা গোছের এক বিবৃতিতে তার মুক্তি দাবি করা ছাড়া ঐক্যফ্রন্ট তার জন্য কিছুই করেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রথম দফা আলোচনার সময়েও ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিষয়টি তারা তুলেছিলেন বলে আমার জানা নেই।

ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন গ্রেফতার হওয়ার প্রাক্কালে তার ফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেনকে টেলিফোন করে কিছু করার আবেদন জানিয়েছিলে। এই টেলি-আলাপটি ফাঁস হয়ে গেছে। তাতে দেখা যায়, মইনুল হোসেনের বিষয়টি ঐক্যফ্রন্টের কর্মসূচীতে অন্তর্ভুক্ত করতে ড. কামাল রাজি নন। তাতে রেগে গিয়ে মইনুল হোসেন বলছেন, ‘আমি তাহলে ঐক্যফ্রন্টে নেই।’

এক-এগারোর সরকারে যোগদান এবং বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সঙ্গে এতোটা ঘনিষ্ঠতা সত্ত্বেও ব্যারিস্টার হোসেন যখন এক-এগারোর মন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নানা গভীর চক্রান্তে যুক্ত হয়েছিলেন, তখনই তিনি তার রাজনৈতিক অবস্থান ও গুরুত্ব হারিয়েছিলেন। এখন নিভৃত-নির্জন কারাকক্ষে বসে তিনি হয়তো তা বুঝতে পারছেন। আজ তার পাশে কেউ নেই। এমনকি তার বিএনপিপন্থী মামাও কতোটা আছেন, তা বোঝা মুশকিল।

আসম আবদুর রব এক সময় ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় যুব নেতা। বঙ্গবন্ধুর ‘চার খলিফার’ এক খলিফা বলেও পরিচিত ছিলেন। অবিভক্ত জাসদেরও একজন প্রতিষ্ঠাতা নেতা। কিন্তু রাজনীতিতে এই অবস্থানটি তিনি ধরে রাখতে পারেননি। জিয়া তাকে ৭ নবেম্বরের সেনা বিদ্রোহের সঙ্গে জড়িয়ে ফাঁসির কাষ্ঠে জড়াতে চেয়েছিলেন। তিনি কী মুচলেকা দিয়ে জেল থেকে বেরিয়ে এসে আওয়ামী লীগবিরোধী অপরাজনীতিতে যোগ দেন তা কেউ জানে না। জেনারেল এরশাদের ‘গৃহপালিত বিরোধীদলীয় (সংসদে) নেতা হওয়ার পর তিনি তার রাজনৈতিক গুরুত্ব ও অবস্থান দুই-ই হারান। তিনি এখন হারাধনের একটি ছেলে। কিন্তু তিনি যে আর সত্তর দশকের আসম আবদুর রব নন, সেটা হয়তো এখন বুঝতে পারছেন ফ্রন্টে ঢুকে বিএনপির মির্জা ফখরুলের হাতে নীরব গলাধাক্কা খেয়ে।

ঐক্যফ্রন্টের মধ্যেও যে ঐকমত্যের অভাব হয়েছে তা বোঝা যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ফ্রন্টের নেতাদের প্রথম বৈঠকের পর। এই বৈঠকের ফলাফল সম্পর্কে তিন নেতার তিন রকম প্রতিক্রিয়া শুনে। ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘সংলাপে কোন সমাধান পাওয়া যায়নি। তবে তিনি আশাবাদী।’ মির্জা ফখরুল বলেছেন, ‘তিনি এই সংলাপে মোটেই খুশি নন। বৈঠকে কোন সমাধান পাওয়া যায়নি।’ আসম আবদুর রব বলেছেন, ‘এক বৈঠকেই সব সমস্যার সমাধান পাওয়া যায় না।’ বিএনপিকে এই উক্তি নিশ্চয়ই খুশি করেনি।

ঐক্যফ্রন্ট প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় দফা বৈঠকের আবেদন জানিয়েছে। এই বৈঠকের ফলাফল কি হবে তা জানি না। তবে আন্দাজ করছি, এটা হবে ঐক্যফ্রন্টের জন্য ঐক্য বজায় রাখার এক বিরাট অগ্নিপরীক্ষা। ঐক্যফ্রন্টের প্রধান দুটি দাবি, বেগম জিয়া ও তারেক রহমানের দ- মওকুফ, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের এই রায়ে হস্তক্ষেপে প্রধানমন্ত্রী রাজি হতে চাইবেন বলে আমি মনে করি না। অন্যান্য দাবির বেশ কয়েকটি সম্পর্কে তিনি নমনীয় হতে পারেন। তা যদি হন, তাহলে ড. কামাল হোসেন, আসম আবদুর রবসহ ঐক্যফ্রন্টের কয়েকটি শরিক দলেরই সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় এসে নির্বাচনে অংশগ্রহণে হয়তো আপত্তি থাকবে না।

কিন্তু তাতে বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের, যারা তারেক রহমানের আনুগত্য মেনে চলেন, তাদের পক্ষে সম্মত হওয়া সম্ভব হবে কি? যদি তারা সম্মত না হন, তাহলে ড. কামাল হোসেনের পক্ষে তারেক রহমানের হুকুম মেনে সরকার বিরোধী কোন কর্মসূচীতে নেতৃত্ব দেয়া সম্ভব হবে কি? যদি তিনি পরিস্থিতির চাপে তাতে রাজি হন, তাহলেও তিনি প্রত্যক্ষভাবে এই কর্মসূচীতে না থেকে কোন একটা অজুহাতে বিদেশে চলে যাবেন। আর তিনি যদি বিএনপি নির্ধারিত কর্মসূচীতে সম্মত না হন, তাহলে তারেক রহমানের ইঙ্গিতে তাকে বদরুদ্দোজার মতোই ফ্রন্ট থেকে বাদ দেয়া হবে। সেটা বদরুদ্দোজার চাইতেও অবমাননাকর হতে পারে।

ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের একটা চরিত্র-বৈশিষ্ট্য, তিনি অসতর্কভাবে অনেক সময় এমন কথা বলেন, যা তার বিরুদ্ধে যায়। নিজের ইচ্ছায় ঐক্যফ্রন্টের সভায় যোগ দিয়ে তিনি এক অসতর্ক মুহূর্তে বলে ফেলেছিলেনÑ “ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্বে তারেককে ঠেকাতেই আমরা কামাল হোসেনকে ডেকে এনেছি।” এই কথার পরিণতি কি হয়েছে তিনি এখন তা হাড়ে হাড়ে বুঝছেন। এখন তার পাশে সক্রিয়ভাবে ঐক্যফ্রন্টের কেউ নেই। তারা গণভবনে খানাপিনায় ব্যস্ত। মইনুল হোসেনের পরিণতি থেকে ড. কামাল হোসেনের শিক্ষা নেয়া উচিত। তার মধ্যে তারেক-বিরোধিতার সামান্য আঁচ পেলেও পরিণতি ভাল হবে না। আসম আবদুর রব ফ্রন্টের জনসভায় প্রকাশ্যে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেও রক্ষা পাননি। মিনি ক্যুর শিকার হয়েছেন। প্রয়োজন ফুরুলে তারেক রহমান ড. কামালকে আরও অসম্মানজনক পথে ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্ব থেকে বিদায় দেবেন। সম্ভবত ড. কামাল হোসেনের ভাগ্যে সেই পরিণতিই অপেক্ষা করছে।

আমার একটি ধারণা, যদি বিএনপির বর্তমান নেতৃত্বের একটা অংশও তারেক রহমানের অন্ধ আনুগত্য ত্যাগে সাহসী হয়ে মাতাপুত্রের অবিলম্বে মুক্তির দাবি ত্যাগ করে তাদের সাত দফা দাবির অন্য দাবিগুলো নিয়ে সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে নির্বাচনে যেতে রাজি হয়, তাহলে ড. কামাল হোসেন হয়তো অবমাননাকর পথে ফ্রন্টের নেতৃত্ব থেকে অপসারিত হবেন না। কিন্তু ফ্রন্টে তার নেতৃত্ব অপ্রয়োজনীয় হয়ে যাবে। তিনি নিজেই বলেছেন, “নির্বাচনে ব্যক্তিগতভাবে অংশগ্রহণ বা কোন রাষ্ট্রীয় পদ গ্রহণে আমার ইচ্ছা নেই। আমি দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছি।”

তাই যদি হয়, নির্বাচনী লড়াইয়ে নেতৃত্বদানে বিএনপি নেতারাই এগিয়ে আসবেন। ড. কামাল হোসেনকে তাদের দরকার হবে না। রবদেরও নয়। আর তারেক রহমানের যদি চৈতন্যোদয় হয় এবং দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণে সম্মতি দেন, তাহলে নেপথ্যে বসে তিনিই ফ্রন্টের নেতৃত্ব দেবেন, প্রার্থী মনোনয়নে তার কর্তৃত্ব খাটাবেন। ফ্রন্টের নির্বাচনী রণকৌশল নির্ধারণ করবেন। নির্বাচনে তিনি যোগ দিতে পারবেন না। কিন্তু নির্বাচনে জিতে তার দল তাকে ‘দ-কারণ্যে বনবাস’ থেকে মুক্ত মানুষ হিসেবে ফিরিয়ে আনতে পারবে, তার মাকেও কারামুক্ত করতে পারবে, এই আশায় দীর্ঘ দরকষাকষি ও সংলাপের পর হয়তো দলকে নির্বাচনে যোগ দিতে বাধা দেবেন না। তা যদি হয়, তাহলে নামের ছাতা ঐক্যফ্রন্ট জোড়াতালি দিয়ে থাকতে পারে, তাহলেও ড. কামাল হোসেনের ‘ছত্রপতির’ অবস্থান থাকবে না। তিনি তখন হবেন ব্যবহৃত কলার খোসা।

লন্ডনের বাজার একটা গুজবে এখন সয়লাব। তারেক রহমান এখন ডেসপারেট অবস্থায় পৌঁছেছেন। মা জেলে, তিনিও বিদেশে পলাতক জীবন যাপন করছেন। মাথার উপরে ঝুলছে ডেমোক্লিসের তরবারিÑদুর্নীতি,সন্ত্রাস,খুনের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদ-াদেশ। কোথায় দেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রী হবেন, সে আশায় গুড়ে বালি, যে কোন সময় হাতে-পায়ে ডান্ডি পরিয়ে তাকে দেশের জেলে ফিরিয়ে নেয়া হতে পারে। ফলে তার দিশেহারা অবস্থা। বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গেও আবোল তাবোল বকছেন। হাসিনা সরকারকে বৈধ অথবা অবৈধভাবে ক্ষমতা থেকে সরানোর সব চেষ্টা তার ব্যর্থ হয়েছে। এখন তার শেষ আশা, নিবার্চনে জয়ী হয়ে তার দল তাকে বনবাসের যন্ত্রণা থেকে বাঁচাবে, ক্ষমতায় বসাবে।

কিন্তু সে আশাও যদি পূর্ণ না হয়, নির্বাচন বানচাল করা অথবা তাতে যোগ দিয়ে যদি জয়ের আশা না থাকে, তাহলে তিনি হিতাহিত জ্ঞানশূন্য ভয়াবহ রক্তপাতের পথে এগুতে পারেন। এজন্য প্রচুর টাকা বিলিয়ে জামায়াতের এক বিরাট ক্যাডার বাহিনী এবং হিজবুত ও জেএমবির সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো চাঙ্গা করা হচ্ছে। এগুলো সবই এখন পর্যন্ত বাজারের গুজব। কতটা সত্য জানি না।

সত্য হোক আর না হোক, আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সকাতরে অনুনয় করছি, তিনি সাবধান হোন। নিজের জন্য নয়, দেশের স্বার্থে। তিনি মৃত্যুকে ভয় পান না তা আমি কেন দেশবাসীও জানে। কিন্তু এই মুহূর্তে তার কিছু হলে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর দেশে যা ঘটেছিল, তার চাইতেও ভয়াবহ ঘটনা ঘটবে। দেশকে বাঁচানোর জন্যই তাকে বেঁচে থাকতে হবে। নির্বাচনে জয়ী হতে হবে এবং দেশকে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের পথে এগিয়ে নেয়ার ফ্রবর্তমান ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।

নির্বাচন চলাকালেও তিনি যেন যখন তখন যেখানে সেখানে না যান। তিনি মনে রাখবেন, ইন্দিরা গান্ধীকে হত্যা করেছিল তারই দুই অতি আদরের দেহরক্ষী। আর তারেক রহমান, যে দুর্বৃত্ত ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঠা-া মাথায় গ্রেনেড হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনাসহ গোটা আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব ধ্বংস করতে চেয়েছিল, তার পক্ষে এই ডেসপারেট মুহূর্তে আরও ভয়ঙ্কর কিছু করা অসম্ভব ব্যাপার নয়। আওয়ামী লীগসহ দেশের গণতান্ত্রিক দলগুলোরও উচিত, ১৯৭৫ আগস্ট-ট্র্যাজেডি থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে লৌহকঠিন ঐক্য দ্বারা হাসিনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এই মুহূর্তে হাসিনা-নেতৃত্ব ধ্বংস হলে দেশের শুধু নাজুক গণতন্ত্র নয়, স্বাধীনতা ও অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রব্যবস্থাও ধ্বংস হবে। দেশের যে বিশেষ শ্রেণীর সাংবাদিকেরা বাংলাদেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই বলে চিৎকার জুড়েছেন, হাসিনা সরকার ক্ষমতায় না থাকলে তাদের অনেকের অবস্থা হবে সদ্য নিহত সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগির মতো।

আবদুল গাফফার চৌধুরীঃ-সাহিত্যিক,সাংবাদিক,কলামিষ্ট






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*