প্রাণের ৭১

শুভ জন্মদিন, শহীদ অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা

শুভ জন্মদিন, শহীদ অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা 🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹

 

 🇧🇩 একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতে ঢাকার যেসব জায়গা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের নৃশংস হত্যাযজ্ঞের লক্ষ্য-কেন্দ্র করেছিল, এসবের একটি ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল; আর অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা ছিলেন এই হলেরই প্রাধ্যক্ষ। আক্রমণের আশঙ্কার মধ্যে অধ্যাপক জ্যোতির্ময় তাঁর স্ত্রী বাসন্তী গুহঠাকুরতাকে বলেন –   ‘সবাই আমাকে সাত দিন দূরে থাকতে বলছে। আমি হলের প্রভোস্ট। আমি কী করে ছাত্রদের ফেলে যাব? ওদের জন্যই তো আমাকে এ কোয়ার্টার আমাকে দিয়েছে, ফোন দিয়েছে। আমি জানি, কিছু হলে আগে আমাকেই অ্যারেস্ট করে নিয়ে যাবে।’ (২৫ মার্চ কালরাত নিয়ে বাসন্তী গুহঠাকুরতা’র বর্ণনা ‘একাত্তরের স্মৃতি’ গ্রন্থে।)   অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) শহীদ মিনার আবাসিক এলাকায় ৩৪ নম্বর ভবনের নিচতলায়। ২৫ মার্চ দিবাগত রাত ২টার দিকে রান্নাঘরের দরজা ভেঙে ঢুকে পড়ে এক পাকিস্তানি হানাদার সেনা কর্মকর্তা। শোয়ার ঘরে গিয়ে অধ্যাপক জ্যোতির্ময়কে অফিসার বলে, ‘আপ প্রফেসর সাহাব হ্যায়?’ জ্যোতির্ময় দৃঢ়কণ্ঠে বলেন, ‘ইয়েস।’ অফিসার বলে, ‘আপকো লে যায়েগা।’ একইভাবে জ্যোতির্ময় জিজ্ঞেস করেন, ‘হোয়াই?’ এই ‘কেন’র উত্তর মেলেনি। জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতাকে হিড়হিড় করে টেনে বাইরে নিয়ে যায় বর্বর হানাদাররা। একই ভবনের তিনতলা থেকে নেওয়া হয় অধ্যাপক এ.এন.এম. মুনীরউজ্জামানকেও।   একটু পরপর আটটা গুলির শব্দ হলো। অধ্যাপক মুনীরউজ্জামানের স্ত্রী সৈয়দা মাহমুদা জামান নিচে নেমে দেখেন, অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা পড়ে আছেন, দেহে তখনও প্রাণ আছে। তাঁর ঘাড়ের ডান দিকে গুলি করেছে। শরীর অবশ। মাহমুদা জামান বাসন্তী গুহঠাকুরতাকে ডেকে আনেন। কাছেই ঢাকা মেডিকেল। কিন্তু কারফিউর কারণে তখন তাঁকে নেওয়া গেল না। ২৭ তারিখে ভর্তি হলেন জ্যোতির্ময়।  ঘাড় থেকে বুলেট বের করা গেল না। ৩০ মার্চ রাতে অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা মৃত্যুকে বরণ করে নিলেন। আজ তাঁর শততম শুভ জন্মদিন।   স্যালুট, শহীদ অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা 🇧🇩

লিখেছেনঃ  Moniruzzaman Khan






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*