কোথায় তৈরি হয়েছে রাশিয়া বিশ্বকাপের ফুটবল?
![](https://www.praner71news.com/wp-content/uploads/2019/03/logo-71.png)
মাঠে দুই দল, ২২ খেলোয়াড় আর পাঁচ রেফারি। ১২০ মিটারের ব্যবধানে দাঁড়িয়ে থাকা দুই গোলপোস্টের মাঝে টানা ৯০ মিনিট অবিরাম `ছোটাছুটি`। অথচ গ্যালারি-ভর্তি দর্শকের নজর দুলতে থাকে কেবল একটি বস্তুকে কেন্দ্র করে। আর তা হলো, ফুটবল। আর সেটা যদি হয় বিশ্বকাপ, তবে তো কথাই নেই। অবশ্য শুরুর দিকে ফুটবল খেলাটা এত উন্নত এবং দৃষ্টিনন্দন ছিল না। দিনে দিনে খেলাটি উঠে এসেছে জনপ্রিয়তার শীর্ষে। এরই সঙ্গে এসেছে ফুটবলের উন্নত সংস্করণ। উন্নত ফুটবল তৈরির জন্য যুগের পর যুগ গবেষণা হয়েছে। এখনও চলছে।
আর সেই গবেষণায় বিশ্বকাপ অন্য এক মাত্রা যোগ করে। বিশ্বকাপের শুরু থেকেই অফিসিয়াল বল দিয়ে খেলা হয়ে আসছে। এবার ফিফা বিশ্বকাপের পুরনো স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের অফিসিয়াল বলের নাম দেওয়া হয়েছে ‘টেলস্টার এইটিন’। সোজা ভাষায় সাদা-কালো যুগের বলকে রঙিন দুনিয়ায় নতুন করে উপস্থাপন করতে যাচ্ছে খেলাধুলার সামগ্রী প্রস্তুতকারী বিশ্বের বৃহৎ প্রতিষ্ঠান অ্যাডিডাস। ১৯৭০ সালে মেক্সিকো বিশ্বকাপে `টেলস্টার` নামক বল প্রথম ব্যবহার করা হয়। ঠিক তার পরের বিশ্বকাপেই অর্থাৎ ১৯৭৪ বিশ্বকাপে ব্যবহৃত বলের নাম `টেলস্টার ডারলস্ট`! সেই বিশ্বকাপেই শেষবার দেখা যায় এই টেলস্টার বল। সাদা-কালো টেলিভিশনে খেলা দেখতে যাতে সুবিধা হয়, সেই জন্য এই বল দিয়ে খেলা চালানো হয়েছিল। তখন নামকরণ করা হয়েছিল `স্টার অব টেলিভিশন`। উল্লেখ্য, ১৯৭০ এর বিশ্বকাপে খেলেছিলেন পেলে, জার্ড মুলারের মত কিংবদন্তীরা।
এদিকে, ২০০২ সালে দক্ষিণ কোরিয়া-জাপান বিশ্বকাপের বলটির নাম ছিল ‘ফেভারনোভা`। ফুটবলারদের মতে সেটি ছিল অনেক বেশি হালকা এবং ‘বাউন্সি’। এর চার বছর পর ২০০৬ সালের জার্মানি বিশ্বকাপের বলটির নামছিল ‘টিমগাইস্ট`। বলটির বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, সেটি নাকি অতিরিক্ত `পিচ্ছিল`। আর ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের বল ‘জাবুলানি` তো অনেক খেলোয়াড়কে রীতিমতো ভড়কে দিয়েছি। ব্যাপক সমালোচনার পর ২০১৪ সালে ব্রাজিল বিশ্বকাপে অনেকের মতামত নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করেই তৈরি হয় ফুটবল ‘ব্রাজুকা’। আর এবার ‘টেলস্টার এইটিন’।
আবারও পাকিস্তান
বিগত কয়েক বছর ধরেই পাকিস্তান তৈরী ফুটবল সারা বিশ্বে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এর মূল কারণ ফুটবলগুলো তৈরীতে উচ্চমানের লেদার ম্যাটারিয়ার ব্যবহার। যার কারণে এই বলের কোয়ালিটি নিয়ে কেউ অসন্তোষ প্রকাশ করেনি। তাই এবারও বিশ্বকাপের বল তৈরী করেছে পাকিস্তান।
পাকিস্তানের শিয়ালকোটে রয়েছে বিশ্বের অন্যতম বড় ফুটবল প্রোডাকশন ইন্ডাস্ট্রি। প্রতিবছর অন্তত ৩০ মিলিয়ন ফুটবল এখান থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়। যা বিশ্বের ফুটবল উৎপাদনের ৪০ শতাংশ! পাকিস্তানের বল দিয়েই জার্মান বুন্দেসলিগা, ফ্রান্সের লিগ ওয়ান, উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ এবং বিগত ২০১৪ সালের ব্রাজিল বিশ্বকাপে খেলা হয়েছিল। আর এটা তৈরী করেছিল ফুটবল প্রোডাকশন কোম্পানি ফরোয়ার্ড স্পোর্টস। এছাড়াও মাসে ৭ লক্ষ ফুটবল উৎপাদন করে এই কোম্পানী। ২০১৩ থেকে এখানে প্রস্তুত হচ্ছে বিশেষ প্রযুক্তিতে তাপ দিয়ে জোড়া লাগানো সেলাইহীন বল।