প্রাণের ৭১

আজ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস

মোহাম্মদ হাসানঃ আজ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। জাতির জন্য কলঙ্কময় দিন। যতদিন পৃথিবী থাকবে এই দিনটি বাঙালি জাতির জীবনে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মসমর্পণ করতে শুরু করেছিল এবং পাকিস্তানিরা যখন বুঝতে পারলো মুক্তিযুদ্ধে তাদের পরাজয় সময়ের ব্যাপার মাত্র, তখনই এদেশের পাকিস্তানি দোসর, রাজাকার, আল-বদর, আল-শামসদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এদেশের শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের অর্থাৎ বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করে।

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যখন বুঝতে পারলো মুক্তিযুদ্ধে তাদের পরাজয় সুনিশ্চিত তখনই বাঙালি জাতি যাতে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে সেই চিন্তা ধারায় বাঙালির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করা হয়।

কলকাতায় প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের এক মুখপাত্র বলেন তাদের কাছে খবর এসেছে যে বুদ্ধিজীবী হত্যায় একজন শীর্ষ পাক জেনারেল সহ ১০ সেনা কর্মকর্তা জড়িত। এ পর্যন্ত ৩৬০ জন বুদ্ধিজীবী হত্যার খবর তাদের কাছে পৌঁছেছে। আরও হত্যার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু কতক অফিসারের বুদ্ধিমত্তায় তারা রক্ষা পেয়েছে। পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে থাকার সময় বুদ্ধিজীবীদের সভা করার নামে ডেকে নেয়া হত কিন্তু সে সকল সভায় তেমন কেউ অংশ নেয়নি বিধায় অনেকে রক্ষা পেয়েছে। জামাতে ইসলামীর কিলিং স্কোয়াড আল বদর, আল শামস এর মাধ্যমে জেনারেল রাও ফরমান আলী এ সকল হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। ব্রিটিশ এমপি জন স্টোন হাউজ বলেছেন দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধে ইহুদী বুদ্ধিজীবী হত্যার পর বাংলাদেশে এ ধরনের ২য় ঘটনা ঘটল।

১৪ তারিখের গভর্নর হাউজের সভায় অনেক শীর্ষ কর্মকর্তাদের আমন্ত্রন জানানো হয়েছিল। চট্টগ্রামেও অনুরুপ এক সভা ডাকা হয়েছিল। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লায় সভা করার নামে অনেককে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছিল।

দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় ভাবে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দেবেন। তবে এবার করোনা আবাহর কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই বুদ্ধিজীবী দিবসের কর্মসূচি পালিত হবে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে জাতীয় ও কালো পতাকা অর্ধনমিত করন, মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ও রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ।

আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে, বঙ্গবন্ধু ভবন ও দেশব্যাপী সংগঠনের কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ। সকাল ৯টায় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন। সকাল ৯ টা ৩০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে এবং সকাল ১০ টায় রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ।

বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী ওই সকল রাজাকারদের বাঙালি জাতি কোনোদিন ক্ষমা করবে না বা করতে পারে না।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*