জিম্মিদের বাঁচিয়ে ‘হিরো’র মৃত্যু
![](https://www.praner71news.com/wp-content/uploads/2019/03/logo-71.png)
ফ্রান্সের সুপারমার্কেটে নিজের জীবন বাজি রেখে বন্দুকধারীর হাত থেকে জিম্মিদের বাঁচানো এক পুলিশ কর্মকর্তা মারা গেছেন। ফরাসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জিম্মি ঘটনায় গুরুতর আহত ফরাসি পুলিশ বাহিনীর সদস্য লেফটেন্যান্ট কর্নেল (৪৫) আরনড বেলট্রেম শুক্রবার রাতে মারা গেছেন। বীরত্বের জন্য ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাত্রেঁদ্ধা তাকে ‘নায়ক’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। বিবিসি জানায়, টুইটারে বেলট্রেমের মৃত্যুর খবর জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরার্ড কলম্ব বলেন, ‘তিনি (বেলট্রেম) তার দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন। ফরাসিরা কখনও তার বীরত্ব, সাহস ও ত্যাগ স্বীকারের বিষয়টি ভুলে যাবে না।
শুক্রবার সকালে রেদোয়ানে লাকদিম নামে মরক্কান বংশোদ্ভূত এক হামলাকারী ফ্রান্সের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী শহর কারকাসোনে একটি গাড়ি ছিনতাই করে। এসময় সে ওই গাড়ির যাত্রীকে হত্যা এবং চালককে আহত করে। এরপর সে জগিংয়ে ব্যস্ত কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এতে এক পুলিশ আহত হয়। পরে ওই গাড়ি চালিয়ে কিছু দূর গিয়ে থ্রেবসে শহরে সুপার-ইউ নামের একটি সুপারমার্কেটে যায়। সেখানে দোকানের এক ক্রেতা ও এক দোকানকর্মীকে গুলি করে হত্যা করে। পাশাপাশি কয়েকজনকে জিম্মি করে রাখে সে। পরে আরও একজনকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে সে। লাকদিমের বিষয়ে আগে থেকেই ফরাসি কর্তৃপক্ষ জানত। সে ইসলামপন্থী উগ্রবাদের দিকে ঝুঁকে যেতে পারে এমন আশঙ্কা ছিল ফরাসি গোয়েন্দাদের।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানায়, পুলিশ কয়েকজনকে মুক্ত করে মার্কেটের বাইরে নিয়ে আসতে সক্ষম হলেও বন্দুকধারী এক নারীকে জিম্মি করে রাখে। একপর্যায়ে বেলট্রেম ওই নারীর মুক্তির বিনিময়ে নিজেকে হামলাকারীর হাতে তুলে দেন। এ সময় তিনি সেখানে একটি টেবিলে কৌশলে নিজের ফোন ফেলে রাখেন কল চালু অবস্থায়, যাতে বাইরে থাকা তার সহকর্মীরা পরিস্থিতি বুঝতে পারেন। এরপর ওই ফোন লাইন থেকে গুলির শব্দ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের বিশেষ টিমের সদস্যরা পরিস্থিতি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে মার্কেটের ভেতরে ঢুকেন। একপর্যায়ে পুলিশের গুলিতে বন্দুকধারী নিহত হয়। গুরুতর আহত হন বেলট্রেম। তাকে হাসপাতালে ভর্তির পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
লাকদিমকে মরক্কো বংশোদ্ভূত ফরাসি নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত করে পুলিশ। সে সালাহ আবদেস সালাম নামের একজনের মুক্তি চাচ্ছিল। ২০১৫ সালের ১৩ নভেম্বর প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলায় যে ১৩০ জন মারা যায় তাদের হত্যাকারীদের মধ্যে গ্রেফতারকৃত ও জীবিত অন্যতম সন্দেহভাজন আবদেস সালাম।