প্রাণের ৭১

বাংলা নববর্ষে মহামান্য রাষ্টপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বাণী

মোহাম্মদ হাসানঃ শতাব্দীর ভয়াবহ মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণের সংকটময় পরিস্থিতিতে বাঙালির সবচেয়ে বড় অসাম্প্রদায়িক উৎসব পয়লা বৈশাখে বর্ষবরণের চিরায়িত রীতি পরিবর্তিত হয়ে গেছে। এবছর বাইরের কোনো অনুষ্ঠান ছাড়া ঘরে বসেই বাঙালি জাতির প্রাণের উৎসব উদযাপন করা হচ্ছে।

ডিজিটাল পদ্ধতিতে পহেলা বৈশাখ উদযাপন অনুষ্ঠান সরকারি ও বেসরকারি সব টেলিভিশনে একযোগে সম্প্রচার করা হচ্ছে।মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আয়োজিত এ অনুষ্ঠান মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা হতে প্রচার করা শুরু হয়।

বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নিতে প্রতিবছর ১৪ এপ্রিল বেশ জাঁকজমকভাবে পালন করা হয় বাঙালি জাতির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। প্রায় ছয় শতক আগে থেকেই পহেলা বৈশাখ উদযাপন বাঙ্গালি সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে।

গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের ১৫৫৬ সালে মুঘল সম্রাট আকবর বাংলা পঞ্জিকা চালু করেছিলেন। বর্তমানে বাংলাদেশের বেশিরভাগ অংশের অধীনে থাকা তৎকালীন ‘সুবাহ বাংলা’ অঞ্চলে ভূমি কর আদায়ের সময়কে সহজ করার জন্য তিনি এর প্রচলন করেন।

তবে এবছর প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বিশাল জনসমাগম এড়ানোর জন্য সব অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে।

রমনা পার্কের বটমূলে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের বিখ্যাত গান ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’ গেয়ে বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নেবেন না ছায়ানটের শিল্পীরা। করোনাভাইরাসের কারণে চলমান দুর্যোগের সময়ে রমনার বটমূলে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা হবে না বলে ১ এপ্রিল জানিয়েছিল ছায়ানট।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকে মহামারি হিসেবে আখ্যায়িত করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী সবাইকে জনসমাগম এড়িয়ে এবারের বাংলা নববর্ষ ডিজিটাল পদ্ধতিতে ঘরে বসে উদযাপনের আহ্বান জানান।

পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা দিনটি উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন এবং দেশে-বিদেশে বসবাসরত সকল বাংলাদেশিকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, বিশ্বব্যাপী প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে এবং মৃত্যুবরণ করছে।

স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলা ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, এখন আমাদের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হচ্ছে দেশ ও দেশের জনগণকে করোনার ছোবল থেকে রক্ষা করা।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বাংলাদেশের জনগণকে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থেকে করোনা মোকাবিলা করার আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দেয়া বাণীতে বাংলা নববর্ষ ১৪২৭ উপলক্ষে দেশবাসী ও প্রবাসী বাঙালিসহ সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

পহেলা বৈশাখ সরকারি ছুটির দিন।

প্রসঙ্গত, সোমবার বাংলাদেশে এক দিনে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ১৮২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা মোট ৮০৩ জনে দাঁড়াল। করোনাভাইরাসে দেশে নতুন করে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হওয়ায় এ সংখ্যা ৩৯ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় আরও তিনজনসহ মোট ৪২ জন করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হয়েছেন।

এদিকে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে মৃতের সংখ্যা মঙ্গলবার সকালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৯৯ জনে।
সূত্রঃ ইউএনবি






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*