প্রাণের ৭১

সাংবাদিকতা না থাকলে করোনায় আরও বেশি মৃত্যু হতো

১৯৪৫ সালের পর কোনো ঘটনায় একসঙ্গে এত পরিমাণ ব্রিটিশ নাগরিকের মৃত্যু হয়নি। যেমনটি হয়েছে করোনা ভাইরাসের কারণে।

করোনা ভাইরাস এটাই প্রমাণ করলো যে, সবার জন্য উন্মুক্ত বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এটা দেখিয়ে দিয়েছে জিন ম্যাপিং, ভ্যাকসিন তৈরি আর বিজ্ঞানের গুরুত্ব কতটুকু। তবে, করোনা মহামারিতে এতসব কিছুর মধ্যে প্রমাণিত হলো সাংবাদিকতা কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ।

কারণ এ প্রাদুর্ভাবের সময় যদি সাংবাদিকরা না থাকতেন তাহলে আরো বহু মানুষের মৃত্যু হতো।

শুক্রবার যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম মিরর ইউকেতে এ বিষয়ে প্রকাশিত এক কলামে এমনটা বলা হয়।

কলামে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় রাষ্ট্রের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ, লকডাউন, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনাসহ নানা বিষয় আলোচনা করা হয়। আর এসব প্রকাশ করতে সাংবাদিকদের গুরুত্ব যে কতটুকু তা উল্লেখ করা হয়।

শুরুতেই বলা হয়, ‘আমরা (সাংবাদিক) নির্ভুল নই। আমরা আপনার প্রিয় মানুষ নই। আমরা কখনও আপনার ধন্যবাদ দাবি করি না। আমরা শুধু চাই আপনারা নিজেরাই বিবেচনা করুন।’

কলামে লিখা হয়, ‘কোনও ওষুধ, তাদের সমস্ত প্রশিক্ষণ, করোনা ঝুঁকিতে থাকা সকল মানুষকে বাঁচাতে পারেনি। তবে এটা ঠিক, আমাদের সরকার বাসায় থাকার যে বার্তা প্রচার করেছে সেটা কাজ করেছে।’

বিশ্বের এই কঠিন পরিস্থিতিতে সংবাদমাধ্যমের ভূমিকার কথা উল্লেখ করা হয়।

আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের নাম উল্লেখ করে বলা হয়, যখন করোনায় মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। মারা যাচ্ছে। তথ্য গোপনের পায়তারা হচ্ছে তখনই এগিয়ে এসেছে সংবাদমাধ্যম।

আর সেখানে সাংবাদিকরা রোদ-বৃষ্টি, হুমকি উপেক্ষা করে সংবাদ তুলে ধরেন। যেখানে ছিলো মৃতের সংবাদ, আপনজন হারানোর সংবাদ, চিকিৎসকদের ত্যাগ, রোগীদের অবস্থা, বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ, রোগ নিয়ে গবেষণা, ধনী দেশগুলোর অবস্থান, অসহায়দেরকে সহায়তা ইত্যাদি সংবাদ।

চীন কীভাবে ভাইরাসের তথ্য গোপন করতে চেয়েছিলো এবং সাংবাদিকরা সেই তথ্য তুলে ধরেছিলো সেটাও উল্লেখ করা হয় কলামে।

বলা হয়, ‘এটিই হচ্ছে সাংবাদিকতা, যা উহানের করোনা প্রাদুর্ভাবকে ঘিরে নীরবতার প্রাচীরকে ভেঙে দিয়েছিল। এটিই সাংবাদিকতা, যখন চীনা কর্তৃপক্ষ ভুল তথ্য প্রকাশ করেছিল, তখন তা তুলে ধরেছিল গণমাধ্যম।’

এতে আরো বলা হয়, ‘সাংবাদিকতা ছাড়া গুজব লাগামহীন হয়ে পড়তে পারে। পুলিশ হয়তো তার ক্ষমতার যথেচ্ছ ব্যবহার শুরু করতে পারে। মানুষ হয়তো মনের আনন্দে সৈকতে ছুটে যাবে, ফলে ঘটবে আরো সংক্রমণ, আরো মৃত্যু।

সাংবাদিকরা যে সংবাদ প্রকাশ করে. তা প্রথমে তারা বিশ্বাস করে নেন না। তারা এটা তদন্ত করেন, নিশ্চিত হয়েই খবর তৈরি করেন। এরপর তা দ্বিতীয়, তৃতীয়বার পর্যন্ত সম্পাদনা করা হয়।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*