“দোষ শিকার করছে আসিফ আকবর”
তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় গভীর রাতে গ্রেফতার কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবরকে রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্যরা।
এ সময় মামলায় তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ-অনুমতি ছাড়াই তার সংগীতকর্মসহ অন্যান্য গীতিকার, সুরকার ও শিল্পীদের ৬১৭টি গান বিক্রির কথা স্বীকার করেছে আসিফ।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএস) মোল্যা নজরুল ইসলাম জানান, রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করার পর আসিফ আকবর এক পর্যায়ে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আসিফকে ইতোমধ্যে আদালতে হাজির করা হয়েছে। অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করবেন। আদালতের নির্দেশনায় তাকে রিমান্ডে পাওয়া গেলে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে।
এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টায় তেঁজগাওয়ের এফডিসি এলাকায় নিজ স্টুডিও থেকে আসিফ আকবরকে গ্রেফতার করে সিআইডির একটি টিম।
সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মিনহাজুল ইসলাম জানান, তথ্যপ্রযুক্তি আইনে তেজগাঁও থানায় সুরকার ও কণ্ঠশিল্পী শফিক তুহিনের করা একটি মামলায় আসিফকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যার মামলা নম্বর ১৪।
সোমবার সন্ধ্যায় দায়ের করা এ মামলার এজাহারে শফিক তুহিন অভিযোগ করেছেন, গত ১ জুন আনুমানিক রাত ৯টার দিকে চ্যানেল ২৪-এর সার্চ লাইট নামের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, আসিফ আকবর তার অনুমতি ছাড়াই তার সংগীতকর্মসহ অন্যান্য গীতিকার, সুরকার ও শিল্পীদের ৬১৭টি গান সবার অজান্তে বিক্রি করেন।
তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে তিনি জানতে পারেন, আসিফ আকবর আর্ব এন্টারটেইনমেন্টের চেয়ারম্যান হিসেবে অন মোবাইল প্রা. লি. কনটেন্ট প্রোভাইডার, নেক্সনেট লি. গাক মিডিয়া বাংলাদেশ লি. ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গানগুলো ডিজিটাল রূপান্তরের মাধ্যমে ট্রু-টিউন, ওয়াপ-২, রিংটোন, পিআরবিটি, ফুলট্রেক, ওয়াল পেপার, অ্যানিমেশন, থ্রি-জি কন্টেন্ট ইত্যাদি হিসেবে বাণিজ্যিক ব্যবহার করে অসাধুভাবে ও প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জন করেছে।
পরে ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি গত ২ জুন রাত ২টা ২২ মিনিটে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে অনুমোদন ছাড়া গান বিক্রির এই ঘটনা উল্লেখ করে একটি পোস্ট দেন। এদিকে শফিক তুহিন ফেসবুকে এমন অভিযোগ করার কিছুক্ষন পরেই তার ওই পোস্টের নিচে আসিফ আকবর নিজের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে ‘অশালীন মন্তব্য’ করে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ‘হুমকি’ দেন বলে অভিযোগ করেন শফিক তুহিন ।
তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে, পরের দিন রাত ৯ টা ৫৯ মিনিটে আসিফ আকবর তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে লাইভে আসেন। ৫৪ মিনিট ৩৪ সেকেন্ড লাইভ ভিডিওর ২২ মিনিট থেকে তার বিরুদ্ধে অবমাননাকর, অশালীন ও মিথ্যা-বানোয়াট বক্তব্য দেন।
শফিক তুহিন আরও অভিযোগ করে বলেন, ভিডিওতে আসিফ আকবর তাকে শায়েস্তা করবেন এ কথা বলার পাশাপাশি ভক্তদের উদ্দেশে বলেন, তাকে যেখানেই পাবেন সেখানেই প্রতিহত করবেন। এই নির্দেশনা পেয়ে আসিফ আকবরের ভক্তরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে হত্যার হুমকি দেয়। আসিফ আকবরের এই বক্তব্য লাখ লাখ মানুষ দেখেছে। তিনি উসকানি দিয়েছেন। এতে তার (শফিক তুহিন) মানহানি হয়েছে।
বিষয়টি সংগীতাঙ্গনের সুপরিচিত শিল্পী, সুরকার ও গীতিকার প্রীতম আহমেদসহ অনেকেই জানেন বলেও উল্লেখ করেছেন শফিক তুহিন।